গতকাল দিল্লীতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের পোরোহিত্যে অনুষ্ঠিত সভায় গত ২২ বছর ধরে চলতে থাকা মিজোরাম থেকে ত্রিপুরায় আগত রিয়াং (ব্রু)শরণার্থীদের সমস্যার অবসান হল এক চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে। সভায় উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা ও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী সহ নেডার চেয়ারম্যান হেমন্ত বিশ্ব শর্মা , বেশ কয়েকজন ব্রু নেতা , প্ৰদ্যুৎ কিশোর দেববর্মা সহ দুই রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা।
কেন্দ্রীয় সরকার এই চুক্তিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উত্তর পূর্বাঞ্চলের মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য গৃহীত একটি বিশেষ পদক্ষেপ হিসাবে অভিহিত করেছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী অনেকগুলো উদ্ভাবনমুখী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন যার মাধ্যমে উত্তর পূর্বাঞ্চলের পরিকাঠামো , যোগাযোগ ব্যবস্থা , অর্থনৈতিক উন্নয়ন , পর্যটন সামাজিক বিভিন্ন সূচকের প্রবৃদ্ধি সুনিশ্চিত হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর অমিত শাহ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ত্রিপুরায় অবস্থানরত রিয়াং শরণার্থীদের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান সুনিশ্চিত হল। তিনি জানান যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অসাধারণ নেতৃত্বের কারণেই এই সমস্যা সমাধানের মুখ দেখল। এই চুক্তি সম্পাদন আখেরে আগামী দিনে এই রিয়াং শরণার্থীদের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎকে সুনিশ্চিত করবে বলেও শ্রী শাহ অভিমত ব্যক্ত করেন। শ্রী শাহ জানান যে এই চুক্তির মাধ্যমে ত্রিপুরায় অবস্থানরত ৩৪০০০ ব্রু শরণার্থীর এখন ত্রিপুরায় পুর্নবাসন সম্পাদন করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকার এদের পুর্নবাসন নিশ্চিত করার জন্য অর্থ সাহায্য করবে। এর জন্য ৬০০ কোটি টাকার একটি প্যাকেজও নির্ধারণ করা হয়েছে। ত্রিপুরায় বসবাসকারী একজন সাধারণ বসবাসকারী মানুষের মত সব ধকরণের সুযোগ পাবেন এই শরণার্থীরা। তারা এখন থেকে ত্রিপুরায় স্থায়ী বসবাসকারী হিসেবেই বিবেচিত হবেন। এই নতুন পরিচয় প্রাপ্তির মাধ্যমে এখন তারা কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য স্করকারের বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি ও প্রকল্পের আওতাভুক্ত হবেন। শ্রী শাহ এও জানান যে বেশ কয়েক দফা দুই রাজ্য সরকারের সাথে আলোচনা এবং ব্রু নেতাদের মতামত গ্রহণের পরই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে । এই চুক্তি অনুযায়ী প্রতিটি শরণার্থী পরিবার ত্রিপুরায় ১২০০ স্কোয়ার ফুট জমি বন্দোবস্ত পাবেন যেখানে তারা বাড়ি নির্মাণ করতে পারবেন। এই জমি বিনামূল্যে বন্দোবস্ত দেওয়া হবে। আগামী দুই বছর ধরে প্রতিটি পরিবারকে প্রতি মাসে ৫০০০ টাকা করে ভাতা এবং প্রতি মাসে বিনামূল্যে রেশন সামগ্রীও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী দেওয়া হবে। প্রতিটি পরিবারকে এককালীন দেড় লক্ষ টাকাও ঘর নির্মাণের জন্য দেওয়া হবে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের বিবরণ দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সম্প্রতি উগ্রপন্থী সংগঠন এন এল এফ টি (এস ডি) গ্রুপের আত্মসমর্থন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন।