ত্রিপুরা উপজাতি স্বশাসিত জেলা পরিষদ’র (টি টি এ এ ডি সি) মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৭ মে। তার আগেই নির্বাচন করতে হবে।
ত্রিপুরা স্বশাসিত জেলা পরিষদের নির্বাচন কমিশনার ১৩ ফেব্রুয়ারি নোটিফিকেশন জারি করেছেন টিটিএএডিসি’র ভোটার তালিকা তৈরির জন্য।
কিছুদিন আগে রাজ্য মন্ত্রিসভা টিটিএএডিসি’র আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০ টি করার প্রস্তাব পাশ করেছে। এখন ২৮ আসনের পর্ষদ। আসনগুলোর জন্য ইলেক্টরাল রেজিষ্ট্রেশন অফিসার হিসেবে বিভিন্ন মহকুমা শাসকদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
আগামীকাল নির্বাচন কমিশনার সব মহকুমা শাসকদের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে করে কীভাবে ভোটার তালিকা তৈরী করা হবে এই বিষয়ে আলোচনা করবেন।
বলাই যায়, টিটিএএডিসি নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনিক প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে।
মন্ত্রীসভায় আসন বাড়ানোর প্রস্তাব পাশ হওয়ায়, প্রশাসনিক প্রস্তুতি শুরু হলেও ভোট এই পরিষদের মেয়াস শেষের আগেই হবে কিনা, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।
বাতাসের কথায় কান দিলে, এমন কথাও ছড়িয়েছে ,টিটিএএডিসি’র নির্বাচিত সরকার ভেঙে দিয়ে, বা মেয়াদ শেষে কেয়ার-টেকার অবস্থা হতে পারে।
রাজনৈতিক সমীকরণের ব্যাপারে যথেষ্ট কৌতুহলও তৈরি হয়েছে।বিধানসভার ভোটে ২০১৮ সালে জনজাতি ভিত্তিক দল আইপিএফটি , বিজেপি’র জোট সঙ্গী ছিল। এই জোট বামেদের বহুদিনের শক্ত মাটি আলগা করে দিয়েছে। কিন্তু শেষ ভোটে , মানে লোকসভা ভোটে বড় শরিক বিজেপিকে বাদ দিয়ে একা লড়েছে আইপিএফটি, তার আগে পঞ্চায়েত উপনির্বাচনেও। যদিও রাজ্য মন্ত্রীসভা থেকে সরে আসেনি আইপিএফটি। আবার বিধানসভায় বসছেও নিজেদের মত। আইপিএফটি বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরাকে ভাগ করে আলাদা জনজাতি রাজ্য ‘তিপ্রাল্যান্ড’র দাবি তুলে ব্যাপক সুবিধা পেয়েছিল। বিজেপি আলাদা ‘ত্রিপ্রাল্যান্ড’র পক্ষে নয় বলে গেছে, অথচ যারা এই স্লোগানকেই সামনে রেখে ভোট লড়ছে , তাদের সাথে জোটে গেছে। কিছুদিন আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ ছেড়ে ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ পরিবার’র সদস্য প্রদোৎ কিশোর দেববর্মা নতুন দল গড়েছেন। এখন তার সিএএ বিরোধী স্লোগানে একটা অংশ এগিয়ে এসেছেন।আবার আইপিএফটি’র ত্রিপ্রাল্যান্ড সুর এখন আর চড়া নয়।
আইপিএফটি সরকারে থাকায় এবং জনজাতিদের নিয়ে দল হওয়ায়, টিটঈএডিসি ভোটে তারা জড়ালো দাবিদার। আবার শেষ ভোটে বিজেপি ছাড়াই তারা লড়েছেন। জনজাতিদের মধ্যে বিজপি’র একার শক্তি সাংঘাতিক কিছু নয়। টিটিএএডিসি ভোট একাই খেলে দেয়ার মত না। আইএনপিটি, এনসিটি, এমন আরও জনজাতি ভিত্তিক দল রয়েছে, যারা এখনও বিজেপি, আইপিএফটি, প্রদোৎ’র ত্রিপ্রা, কারও সাথেই নয়। শক্তি তলানিতে হলেও, আছে কংগ্রেস। আর একটানা কয়েক টার্মের সিপিআই(এম) তো রয়েছেই, তারাই এখন ক্ষমতায়। জিএমপি কয়েকদিন আগে আগরতলায় ভালই শক্তি দেখিয়েছে। আবার টিটিএএডিসি ভোট রাজ্যের প্রধান শাসক দল একেবারে ছেড়ে দিতে পারে না।বিধানসভায় পাশ হয়েছে আসন বাড়ানোর প্রস্তাব। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক সমীকরণ,ক্ষমতা দখলের কৌশল,ইত্যাদি এবার বেশ জটিল। ভোটের দিন ঘোষণা না হলে, ভোটটির সময় নিয়ে আগাম কিছু আন্দাজ করা যাচ্ছেই না এবার, বাতাসের কথায় কান না দিলেও।