খবর ছিল আগে থেকেই। আজ দুপুর থেকেই রাস্তায় ওৎ পেতে বসে ছিল পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার সিধাই থানার পুলিশ ।
মাত্র কয়েকদিন আগে কেনা ওয়াগনার গাড়ি সামনে আসতেই পথ আটকে দাঁড়ায় পুলিশ ।
আগরতলা শহর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে সোনারাম এলাকার ঘটনা। সময় তখন দুপুর আড়াইটা ।
পুলিশ দেখেই গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করেন দুইজন। একজন গাড়ি চালাচ্ছিলেন । রাস্তার পাশেই ঘন জঙ্গল । পালাতে পারেননি ওরা । দুজনকেই ধরে ফেলে পুলিশ ।
গাড়ি চালাচ্ছিলেন শিবু দেববর্মা । বয়স ২৪। সাথে ছিল বছর কুড়ির ইমাম দেববর্মা। দুজনেই বন্ধু। গাড়ির মালিক শিবুর মা , বিরজা দেববর্মা ।
গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে দুটো প্লাস্টিকের বস্তায় গাঁজা পাওয়া যায়। দুই বস্তা মিলিয়ে প্রায় ৩০ কেজি। কয়েক লক্ষ টাকার গাঁজা।
শিবু , ইমাম দুজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে গাড়িও ।
এন ডি পি এস আইনে মামলা নেওয়া হয়েছে । দুজনকেই আগামীকাল আদালতে তোলা হবে।
সিধাই থানা মোহনপুর মহকুমায়। আগরতলা থেকে উত্তর দিকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে।
মোহনপুরে’র অনেক জায়গায় গাঁজা চাষের অভিযোগ আছে অনেকদিন ধরেই। আজ গ্রেপ্তার হওয়া দুজনের বাড়ি এই মহকুমারই দাইগ্যা বাড়িতে।
গত সপ্তাহেই দাইগ্যা বাড়ি এলাকায় গাঁজা উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। সাফল্যও এসেছিল । একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানাতে আনা হয়। গ্রামের মানুষ বিকেল থেকেই রাস্তা অবরোধ করেন সেদিন। দাবি, ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিতে হবে ।
এই এলাকাগুলিতে গাঁজা বিরোধী পুলিশি অভিযান হলেই এলাকার মানুষ আটকাতে আসেন। কয়েক বছর আগে মোহনপুরের এস ডি এম এই এলাকায় গাঁজা উদ্ধারে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন । এরপর থেকে প্রশাসন বিক্ষিপ্ত ভাবে গাঁজা বিরোধী অভিযান করলেও বড় কোনও সাফল্য অধরাই।
প্রান্তিক আর্থ-সামাজিক অবস্থায়ই মূলত তার জন্য দায়ী। গ্রামে গাঁজা চাষ হলেও, গ্রামের লোকজন প্রধাণত চাষের কাজটিই করেন, মালিক সাধারণত বাইরের। অবশ্যই এই গাঁজা চাষের সাথে লেন-দেনের আইনি লোক-বেআইনি লোকের বোঝাপড়া হয়, তা না হলে সংগঠিতভাবে নিয়মিত চাষ সম্ভব না।
সিধাই থানার আজকের অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন মোহনপুরের এস ডি পি ও ডক্টর কমল মজুমদার , আই পি এস প্ৰবেশনার কান্তা জাঙ্গির এবং সিধাই থানার ওসি , ইন্সপেক্টর বিজয় সেন ।