দেশ -পৃথিবী

দিল্লীতে দাঙ্গা পরিস্থিতি: গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক

By Grand Master

February 26, 2020

দিল্লীতে আজ খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। গুলিবিদ্ধ হলেন সাংবাদিক আকাশ। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সি এ এ বিরোধী আন্দোলন কারীদের সাথে সি এ এ সমর্থকদের হিংসাশ্রয়ী বিরোধ তিন দিনে পা রাখলো।

কারফিউ থেকে শুরু করে ১৪৪ ধারা জারি , ফ্ল্যাগ মার্চ কোন কিছু করেই হিংসা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।

এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দশ। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কম করেও পনের জন। আহতদের সঠিক সংখ্যা নিয়ে সরকারি ভাবেই বিভ্রান্তি রয়েছে । দিল্লী পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে ১৫০ জন কিন্তু এই সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

আজ সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয় উভয় পক্ষের সংঘর্ষকারীরা।

পূর্ব দিল্লীর মৌজপুরে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন জে কে ২৪x৭ নিউজের সাংবাদিক আকাশ। তাকে লক্ষ করেই দাঙ্গাবাজরা গুলি ছোঁড়ে। আহত সাংবাদিককে সাথে সাথেই তাকে জি টি বি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এন ডি টিভির চারজন সাংবাদিককে ঘেরাও করে হেনস্থা এবং আক্রমণ করা হয়।

সাংবাদিক গুনশেখরকে শারিরীক ভাবে নিগ্রহ করা হয়। ঘুসিতে তার একটি দাঁত ভেঙে যায়। দাঙ্গাবাজরা এর পরেও তার মাথায় লাঠি দিয়ে মারতে যায়। গুনশেখরের সাথে থাকা ক্যামেরাম্যান সৌরভ শুক্লা আক্রমণ প্রতিহত করে। এতে শুক্লা মারাত্মক ভাবে আহত হন। গুনশেখর এনং শুক্লা আজ সারাদিন ধরেই উত্তর পূর্ব দিল্লীর বিভিন্ন জায়গা থেকে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এই এলাকা গুলোতেই হিংসাশ্রয়ী ঘটনা সবথেকে বেশী ছড়িয়েছে।

আক্রান্ত হয়েছেন সাংবাদিক মরিয়ম আলভী এবং ক্যামেরা ম্যান সুশীল রাঠি।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার সাংবাদিক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে মৌজপুরে ঘিরে ধরে অনেকক্ষণ ধরে হেনস্থা করে দাঙ্গাবাজরা। তার ধর্ম পরিচয় জানতে চাওয়া হয়।

স্ক্রল ডট ইন তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিকদের আটকে রেখে তাদের মোবাইল ফোন পরীক্ষা করা হয়েছে। হিংসার ঘটনার কোন ভিডিও থাকলে জোর করে তা মুছে দেওয়া হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে অধিকাংশ সাংবাদিক সম্পুর্ন পরিস্থিতিকে ‘দাঙ্গা’ হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। অভিযুক্ত সি এ এ বিরোধী এবং সমর্থক উভয় পক্ষের সংঘর্ষকারীরা।।

সংবাদ সংগ্রহ করার সময় সরাসরি প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে সাংবাদিকদের। ক্যামেরা খোলা থাকলেই শুরু হয়ে গিয়েছে গালিগালাজ , আক্রমণ।

একজন মহিলা সাংবাদিকে দশ বার জন পুরুষ দাঙ্গাবাজ এক সাথে শারিরীক নিগ্রহও করেছে।

মিডিয়ার লোক দেখলেই শুরু হয়েছে আক্রমণ । পুলিশের সাহায্য চেয়েও পাওয়া যায় নি।

প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়া এবং ওম্যান প্রেস কর্পস সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে । এক বিবৃতিতে এই দুই সংগঠন পুলিশি নিষ্ক্রিয়তাকে সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ।

এই দুই সংগঠন মনে করে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার উষ্কানীমূলক মন্তব্য পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে গেছে । দাঙ্গাবাজরা তাদের ছবি বা ভিডিও তোলা হলে তারা চিহ্নিত হয়ে যাবে বুঝতে পেরে মিডিয়াকে খবর সংগ্রহে এভাবে বাধা দিয়েছে।

প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তায় হিংসার প্রকোপ ক্রমশ বাড়তে থাকায় যথেষ্ট উদ্বেগ জানিয়েছে সাংবাদিকদের দুই সংগঠন।

এডিটরস গিল্ড অব ইন্ডিয়াও সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছে । গিল্ড দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানিয়েছে ।

অশিকাংশ জায়গাতেই হাতে অস্ত্র নিয়ে দাঙ্গাবাজদের ঘুরতে দেখা গেছে । প্রায় সবার মুখই ছিল কাপড়ে ঢাকা।