টি টোয়েণ্টিতে ৫-০ সিরিজ হারার পর দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের । ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়ালো কিউইরা। আপাতত কিউইদের পক্ষে ১-০ এডভান্টেজ । প্রথম ওয়ান ডে ম্যাচে ভারতকে এক কথায় উড়িয়ে দিয়ে চার উইকেটে ম্যাচ জিতল নিউজিল্যান্ড ।
টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় নিউজিল্যান্ড ।
হ্যামিল্টনের দর্শকরা অনবদ্য ব্যাটিং এর সাক্ষী রইল প্রথম পঞ্চাশ ওভার । শ্রেয়স আইয়ার জীবনের বলে করলেন ষোল তম আন্তর্জাতিক এক দিবসীয় ম্যাচে সেরে নিলেন প্রথম সেঞ্চুরি । ১০৭ বল খেলে করলেন ১০৩ রান । তার ইনিংসে ছিল এগারটি চার আর একটি ছয় ।
অধিনায়ক বিরাট এই ম্যাচেও অর্ধ শত রান করছেন । ৬৩ টি বল খেলে করেছেন ৫১ রান ।
টেস্ট দলে স্থান পান নি কে এল রাহুল । এদিন ব্যাটে ঝড় তুললেন । ৬৪ টি বল খেলে করলেন ৮৮ রান । এতে ছিল ছয়টি ওভার বাউন্ডারি এবং তিনটি চার । নিজের মাত্র এগার রানেই মেরেছিলেন প্রথম ছয় । অনবদ্য ছন্দে ছিলেন রাহুল । তিনি এবং কেদার যাদব ( ১৫ বলে ২৬ রান ) অপরাজিত থেকে দলের রানকে পৌঁছে দিলেন ৫০ অভারে ৩৪৭ ।
জয়ের জন্য কিউদের দরকার ওভার পিছু প্রায় সাত রান ।
ভারতের বোলিং লাইন আপে আছেন বুমরাহ , শামি , জাদেজা , শারদুল ঠাকুর । এইরকম একটা বোলিং শক্তির বিরুদ্ধে প্রায় ৩৫০ রান তুলে জয় পাওয়া খেলাটা ক্রিকেট হলেও কিছুটা অসম্ভবই ।মনে রাখতে হবে খেলাটার নাম ক্রিকেট । অসম্ভব এখানে প্রতিটি মুহূর্তেই যাত্রা বদলে দেয় ।
নিউজিল্যান্ডের মাঠ গুলো এমনিতে অনেকটাই ছোট ।নিউজিল্যান্ডের সঙ্গী ছিল আজ টি টি টোয়েন্টি তে হোয়াইট ওয়াশ হবার যন্ত্রণা ।
সবকিছু মিলিয়েই ব্যাট করতে নেমে ব্ল্যাক ক্যাপের সবাই নিজেদের ছাপিয়ে যাবার চেষ্টা করলেন ।
ভারতের সাদামাটা বোলিং কিউইদের কাজটা অনেক সহজ করে দিয়েছিল । প্রায় দুই ওভার বাকী থাকতেই ছয় উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নিল নিউজিল্যান্ড ।
ওপেনিং জুটিতেই রান উঠেছিল ৮৫। ১০৯ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতনের পর তৃতীয় ব্যাটসম্যান আউট হলেন ১৭১ রানে , তখন খেলা চলছে ২৯ তম ওভারের । আস্কিং রান রেট থেকে কিছুটা কম ।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে যোগ হল ১৩৮ রান । ৪২ তম ওভারে যখন টিম ল্যাথাম আউট হলেন তখন দলের রান ৩০৯ । জয়ের জন্য দরকার আট ওভারে মাত্র ৩৮ রান । বাকী পর্যায় ছিল নিয়ম রক্ষার খেলা ।
এক কথায় কোন ভারতীয় বোলারই কিউই ব্যাটসম্যান দের ওপর আজ প্রভাব ফেলতে পারেন নি । প্রধান বোলার বুমরাহ দশ ওভারে দিয়েছেন ৫৩ রান , কোন উইকেট পান নি । কুলদীপ যাদব দশ ওভারে ৮৪ রান দিয়ে পেয়েছেন দুটো উইকেট। বাকী সব বোলারই গড়ে সাতের ওপর রান দিয়ে গেছেন । এইরকম ম্যাচে অন্তত দুজন বোলারও যদি আঁটোসাটো বোলিং করতে পারতেন , কিউইরা এত সহজে ম্যাচ বের করে নিতে পারতো না ।
কিউই ব্যাটসম্যান দের মধ্যে অসাধারণ খেলেছেন দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান রস টেলর । ৮৪ বলে করেছেন ১০৯ রান । খেলার শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন। টেলর ঝড়েই ভারতীয় দলের বোলাররা দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলেন । টেলরের ইনিংসে ছয় ছিল চারটি এবং চার মেরেছেন দশটি । তার ইনিংসের অর্ধেকের বেশী রানই এসেছে বাউন্ডারি থেকে ।
টেলরের পাশাপাশি দলকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন মারটিন গুপ্টিল ( ৪১ বলে ৩২ রান ) , হেনরি নিকোলাস ( ৮২ বলে ৭৮ রান ) এবং টম ল্যাথেম (৪৮ বলে ৬৯ রান ) ।
স্বভাবত ভাবেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন রস টেলর ।
ওয়ানডে সিরিজ যে টি-টোয়েন্টির মত এক তরফা হবে না প্রথম ম্যাচ থেকেই কিউইরা বুঝিয়ে দিয়েছেন ।
আগামী ম্যাচ গুলোতে ভারতীয় বোলিং এবং ফিল্ডিং নিয়ে অধিনায়ক এবং কোচকে আরও অনেক ভাবনা চিন্তা করতেই হচ্ছে ।
সিরিজের বাকী দুটো ম্যাচ হবে যথাক্রমে ৮ ও ১১ ফেব্রুয়ারি ।