সবকিছু মনে রাখা হবে । সবকিছু মনে থাকবে। কিছুই ভোলা হবে না। যা ঘটছে তার সবকিছু আমাদের মনে থাকবে।
সি এ এ বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ,বিভিন্ন প্রতিবাদ সভায় , আলোচনা চক্রে এই কবিতা মানুষের মুখে মুখে ঘুরেছে।
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালযের ছাত্র আমির আজিজ লিখছেন যন্ত্রণার , প্ররিবাদের কবিতা ।
আজিজের কবিতা ছড়িয়ে পড়ল লন্ডনেও । আজিজের কবিতা পাঠ করে শোনালেন রজার ওয়াটার্স।
পিঙ্ক ফ্লয়েডের সৃষ্টিকর্তা রজার আজিজের কবিতা ইংরেজিতে পাঠ করলেন। এক ভিন্নধর্মী প্রগতিশীল রক ব্যান্ড পিঙ্ক।
রজার উদাত্ত কন্ঠে বললেন ‘এভরিথিং উইল বি রিমেম্বার্ড । নাথিং উইল বি ফরগটেন। এভরিথিং ইজ রেকর্ডেড।’
সি এ এ’র বিরোধিতায় ভারত যেমন উত্তাল তেমনি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ চলছে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের মুক্তির দাবি নিয়ে ।
অ্যাসাঞ্জের মুক্তর দাবিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানুষ পথে নেমেছেন । লন্ডনে চলছিল এমনই এক প্রতিবাদ সভা । সেখানেই গিয়েছিলেন রজার।
সি এ এ বিরোধী আন্দোলন ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে রজারকে। গোপন রাখেন নি সেকথা। জানিয়েছেন এই আন্দোলনের প্রতি তার সমর্থন। উপস্থিত সবাইকে জানিয়েছেন ভারতের তরুণ কবি আজিজের কবিতাকে অস্ত্র করে কিভাবে আন্দোলন চলছে।
সবাইকে বলেছেন একটি বাচ্চা ছেলে , আজিজ লড়াই করছে। আমাদের জানা উচিত আজিজের মতো আরও অনেক তরুণ-তরুণীদের সি এ এ বিরোধী আন্দোলনের কথা। এই আন্দোলন নিয়ে আমাদের জানতে হবে নাহলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।
লন্ডনের প্রতিবাদ সভা ছিল অ্যাসাঞ্জের মুক্তির দাবিতে। সেখানে কথা বলতে গিয়ে রজার বলেন , ‘এই প্রতিবাদ শুধুমাত্র অ্যাসাঞ্জের মুক্তির দাবির সংকীর্ণতায় আবদ্ধ রাখলে চলবে না। প্রতিবাদী মানুষকে জানতে হবে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ঘটতে থাকা হাজারো প্রতিবাদের কথা।’
এই প্রসঙ্গেই তিনি ভারতে সি এ এ বিরোধী আন্দোলনের কথা বলতে শুরু করেন।
আমির আজিজ সি এ এ বিরোধী প্রতিবাদের একটি অন্যতম মুখ। শাহীনবাগে কবিতা পড়েছেন। এসেছিলেন কোলকাতার পার্কস্ট্রিটে। সেখানেও কবিতা পাঠ করেছেন।
জামিয়াতে দিল্লি পুলিশের আক্রমণের ঘটনাকে সামনে রেখে লিখেছিলেন ‘জামিয়া কি লাড়কি’।
রজার যখন লন্ডনে প্রতিবাদ সভায় আমিরকে নিয়ে বলছেন , একসময় উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন আমিরের কবিতা নিয়ে ।সবাইকে বলেন আপনারা শুনুন এই তরুণ প্রতিবাদী কবির কবিতা । কবির ভবিষ্যত খুব উজ্জ্বল । আসুন সবাই মিলে তাকে শুভেচ্ছা জানাই । করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে সভা ।
রাষ্ট্রশক্তির সিদ্ধান্তে যখন প্রতিরোধ দানা বাঁধে, প্রতিবাদ যখন যুক্তির আগুনে উত্তপ্ত হয় তখন কোথাও না কোথাও লক্ষ্য করা যায় সৃষ্টির অগ্নুৎপাত।
আজিজ এমনই এক অভিমুখ।
আজিজের পথ চলা খুব একটা মসৃণ না। অনেক সমালোচনা সইতে হয় আজিজকে । সবকিছুর মধ্যেও মানুষের যন্ত্রণাকে রসদ করে নেন আজিজ ।
প্রতিবাদী আজিজের কলমে লেখা হয় , ‘তোমার লাঠি আর গুলিতে যারা মারা গেছে তারা সবাই আমার বন্ধু —তোমারি লাঠি ঔর গোলিও সে জো কাতিল হুয়ে হে , মেরে ইয়ার সব।’
আজিজ বলে ওঠেন , ‘উনকি ইয়াদ মে দিল কো বর্বাদ রাখা জায়েগা , সব ইয়াদ রাখা জায়গা— সব কুছ ইয়াদ রাখা জায়গা।’
আজিজ অনেকের কাছেই আজ এক নতুন আশার নাম । প্রতিবাদের তরুণ অভিমুখের উচ্চারণ আজিজ।