ত্রিপুরায় দুই এনএলএফটি ক্যাডার ধরা পড়েছে , পুলিশ বলেছে। দু’জনই এখন জুডিসিয়াল কাস্টডিতে। রাজধানী আগরতলা থেকে চল্লিশ মিনিট দূরত্বে ত্রিপুরা উপজাতি স্বশাসিত জেলা পরিষদ’র সদর দফতর খুমুলুঙ, সেখানকার থানার নাম, রাধাপুর পলিস স্টেশন। সেই থানাই গ্রেফতার করেছে, নিষিদ্ধ গোষ্ঠীর দুই ক্যাডার হিসেবে আদালতে পাঠিয়েছে। ত্রিপুরায় দীর্ঘদিনের সন্ত্রাসবাদী প্রবল হিংসাত্বক ঘটনা বন্ধ হয়েছে মোটামুটি দশ-এগারো বছর। ত্রিপুরা পুলিশ সে জন্য বিরল প্রেসিডেন্টস কালার সম্মানও পেয়েছে। আর্মস ফোর্সেস স্পেশাল অ্যাক্ট-ও এই রাজ্যই তুলে নেয়ার নজীর দেখাতে পেরেছে। বাম শাসনের এ এক বড় সাফল্য। উন্নয়ন, যোগাযোগ, বিশেষত গ্রামে-পাহাড়ে, মুখ থুবড়ে পড়েছিল। পাহাড়ে সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থা পাল্টানোর সাথে সাথে যুবকেরা আর সন্ত্রাসবাদী দলে নাম লেখানো বন্ধ করে দিয়েছেন। সেই অবস্থা এখন নেই। সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর দুই/একটা নামেই টিঁকে আছে, তাও রাজ্যে ঘাঁটি নেই, এমনই বোঝা যাচ্ছে , বেশ কয়েক বছর ধরে। তারমধ্যে দুই এনএলএফটি ক্যাডার ধরা পড়েছে, এ বহুদিনের মধ্যে নতুন খবর। একটি রাবার বাগানে অস্ত্রসহ এনএলএফটি’র একটি দল আছে, এমন খবর পেয়ে পুলিশ অভিযোগ পেয়ে, সেই সূত্র ধরে একজনকে প্রথমে গ্রেফতার করেছিল, পরে আরেকজনকে।
স্বশাসিত জেলা পরিষদের এখনকার মেয়াদ ফুরিয়ে যাচ্ছে মে মাসে। হিসাবমত তার আগেই নির্বাচন করতে হবে। এই সময় সন্ত্রাসবাদী দলের ক্যাডার গ্রেফতার,মানে সেসব দলের উপস্থিতি কি ইঙ্গীতবাহী,দুশ্চিন্তার বিষয়! আগে দেখা গেছে নির্বাচনের সময় উগ্রপন্থী দলের হিংসাত্বক আক্রমণ।
সন্ত্রাসবাদীদের মোকাবেলার জন্যেই একের পর এক ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস ব্যাটেলিয়ন খোলা হয়েছিল। সারা রাজ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে তাদের ক্যাম্প করা হয়। বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার বেশ কিছু জায়গা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প গুটিয়ে নিয়েছে । আবার টিএসআর কর্মীদের রাজ্যের বাইরেও পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
ত্রিপুরায় সন্ত্রাসবাদীরা খুন-খারাবা আর এখন বেশ অনেক বছর ধরে করতে না পারলেও, এখানে-সেখানে চোরাগোপ্তা চাঁদার চিঠি ধরিয়েছে বলে মাঝে মাঝে খবর আসে। আবার ক্যাডাররা আত্মসমর্পনও করেন। কয়েকদিন আগেই দক্ষিণ ত্রিপুরায় বিএসএফ’র কাছে তিনজন সারেন্ডার করেছেন।