বলা যায় চূড়ান্ত ভাবে অপদস্থ হতে হল কংগ্রেসকে।আরেকটি রাজ্য হাতছাড়া হল কংগ্রেসের। কমল নাথ মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আজই পদত্যাগ করলেন ।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আজ বিকেল পাঁচটায় মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় ‘ফ্লোর টেস্ট’ হবার কথা ছিল। এর আগেই পদত্যাগ করলেন কমল নাথ । সেই সাথে গত পনের মাসের কংগ্রেস মন্ত্রিসভারও পতন ঘটল। শক্তি পরীক্ষায় হেরে যাবার সম্ভাবনা থাকাতেই কমল নাথ পদত্যাগ করলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরেই দেশের রাজনীতিতে মধ্যপ্রদেশ আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে ছিল। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। সিন্ধিয়া অনুগামী ২২ জন কংগ্রেস বিধায়কও পদত্যাগ করেন ।
সংখ্যার হিসেবে দুর্বল হয়ে পড়ে কংগ্রেস । পুরো ডামাডোলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহের রাজনৈতিক চালই শেষ পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশ থেকেও কংগ্রেসকে সরাতে সক্ষম হল।
রাজনৈতিক মহলে আলোচনা এটাই , বিজেপির এই ধরণের রাজনৈতিক নীতি কতটা সুস্থ্য রাজনৈতিক বাতাবরণ তৈরি করতে পারছে।
কমল নাথ সরকারের পতনের সম্ভাবনা যখন গত কিছুদিন ধরে তৈরি হচ্ছিল , একই সাথে হর্স ট্রেডিং’র বিষয়ও প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়কদের বিজেপি কর্ণাটকে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল । রাখা হয়েছিল বিলাস বহুল রিসর্টে।
পদত্যাগের পর সাংবাদিক সম্মেলনে কমল নাথ হতাশ হয়েই বলেন , ‘আমার কী দোষ’? তিনি বলেন বিজেপি পনের বছর সময় পেয়েছিল রাজ্যকে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে। মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়ে বিজেপি সরকারের পতন ঘটিয়ে কংগ্রেসকে ক্ষমতায় আনে। পনের মাসে তিনবার বিধানসভায় কংগ্রেস সরকারকে শক্তি পরীক্ষার সামনে আসতে হয়েছে। একবারও বিজেপি জয়ী হয় নি । এই কারণেই বিজেপি চক্রান্ত করে কংগ্রেস সরকারের পতন ঘটিয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন । এই চক্রান্তে সিন্ধিয়া সহ তার দলেরই আরও ২২ জন বিধায়ক সামিল ছিলেন বলেও তিনি জানান।
কমল নাথের মতে মধ্যপ্রদেশের জনতা এই বিশ্বাস ঘাতকদের কখনও ক্ষমা করবে না ।
মধ্যপ্রদেশ হাতছাড়া হবার পর কংগ্রেস এখন ক্ষমতায় আছে পাঞ্জাব , রাজস্থান , মহারাষ্ট্র , ঝাড়খন্ড , ছত্তিশগড় এবং পুডুচেরিতে।
মধ্যপ্রদেশের ঘটনা অনেকটাই কর্ণাটকের প্রতিলিপি বলা যায়। বিজেপি কর্ণাটকেও দুই বছর পুরনো কংগ্রেস – জনতা দল (এস) জোট সরকারের পতন ঘটিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। বিজেপি’র এই ধরণের রাজনৈতিক সফলতাকে বিশেষ চাণক্য নীতি বলা হলেও , ক্ষমতা দখলের এই পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।