দেশ -পৃথিবী

‘জনতা কারফিউ’!

By Grand Master

March 20, 2020

সন্ধ্যা আটটায় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । জাতির উদ্দেশ্যে এই ভাষণ আকস্মিক ছিল না। ঘোষণা আগেই ছিল ।

জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণ থেকে প্রধানমন্ত্রী আগামী ২২ মার্চ সারা দেশে জনতা কারফিউ পালনের ডাক দিলেন। সেদিন সকাল ৭ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত দেশজুড়ে জনতাকে কারফিউ পালনের জন্য আহ্বান রেখেছেন তিনি। স্বেচ্ছায় যাতে সেদিন সবাই বাড়িতেই থাকেন। কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। জনতার কারফিউ’র মূল আবেদন হল এই কারফিউ জনতাই পালন করবে , জনতার জন্য– ফর দ্য জনতা , বাই দ্য জনতা । সেদিনই বিকাল ৫ টায় সবাই যাতে ৫ মিনিটের জন্য হাততালি দিয়ে বা অন্য কোন উপায়ে যারা করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করছেন তাদের প্রতি সম্মান জানানোর এক বিশেষ ব্যবস্থা অনুসরণ করেন – আহ্বান রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী।

.প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পনেরটি দিশা

১. করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ । আগের দুটি বিশ্বযুদ্ধে সারা বিশ্বের যত গুলো দেশ আক্রান্ত হয়েছিল , করোনা ভাইরাস আক্রান্ত দেশের সংখ্যা আরও বেশি।

২. ভারত সরকার করোনা ভাইরাস জনিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত । তবে আগামী কয়েক সপ্তাহ সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

৩.আমাদের দেশের জনসংখ্যা ১৩০ কোটিরও বেশি , এরকম একটি পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাস এর বর্তমান অবস্থা কে একটি সাধারণ অবস্থা হিসেবে ভাবলে ভুল হবে। এই ভাইরাস মোকাবিলায় আমাদের প্রত্যেককে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে এবং একই সাথে শান্ত , ধীর- স্থির থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে ।

৪.সরকার থেকে যে সমস্ত নির্দেশিকা দেওয়া হচ্ছে তা অনুসরণ করতে হবে । ব্যক্তিগতভাবে একজন ব্যক্তিকে সুরক্ষিত থাকার সব ব্যবস্থা অনুসরণ করার পাশাপাশি অন্যান্য ব্যক্তিদেরও সহায়তা করার শপথ নিতে হবে।

৫. আগামী কয়েক সপ্তাহ যতটা সম্ভব বাড়িতে থেকেই কাজ করতে হবে । খুব প্রয়োজন না হলে বাড়ি থেকে বের হবার কোনও দরকার নেই ।

৬. এই সময়ে খুবই জরুরী ‘সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স’র মাধ্যমে ভাইরাসকে মোকাবেলা করা।

৭. যাদের বয়স ৬৫ বছরের উপরে তাদের বাড়ি থেকে বের না হওয়াই উচিৎ।

৮. আগামী ২২ শে মার্চ দেশবাসীকে সম্মিলিত ভাবে জনতা কারফিউতে অংশ নেওয়া দরকার ।

৯. প্রত্যেক ব্যক্তি যদি আরও ১০ জন ব্যক্তিকে জনতা কারফিউতে অংশ গ্রহণের ব্যপারে জানাতে পারেন , সার্বিক ভাবে সারা দেশ সচেতন হতে পারবে ।

১০. এই জনতা কারফিউ আগামী দিনের আরো কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের সাহসী করে তুলবে ।

১১. প্রতিটি রাজ্য সরকারকে জনতা কারফিউ বাস্তবায়িত করার লক্ষে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিতে হবে ।

১২. এই সময় হাসপাতালে অযথা ভিড় করার দরকার নেই , প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছে ফোন করে পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে ।

১৩. দেশের অর্থনীতিও করোনা ভাইরাসের কারণে আক্রান্ত । অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দেশের মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং গরীব অংশের মানুষ । মালিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের উচিৎ শ্রমিক এবং কর্মচারীদের প্রতি মানবিক আচরণ করা এবং অনুপস্থিতির কারণে মজুরি পাওয়া থেকে বঞ্চিত না করা । করোনা ভাইরাসের প্রকোপের কারণে দেশের অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়েছে , এই সমস্যা মোকাবেলায় সরকার COVID-19 ইকোনোমিক রেসপন্স টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে।

১৪. অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর আকাল কৃত্রিমভাবে তৈরি করার অসাধু চেষ্টা যাতে কেউ করতে না পারে সেই ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে ।

১৫. অযথা জিনিস কিনে বাড়িতে জমিয়ে রাখার দরকার নেই ।