দেশের ট্রাক ড্রাইভারদের আর্থ সামাজিক অবস্থা মোটেও ভাল নয়। অনেকটাই সংগঠিত ক্ষেত্র হলেও মালিক পক্ষের শোষণের শিকার এরা।
ট্রাক পরিবহন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সম্প্রতি সমীক্ষা চালিয়েছে সেভ লাইফ ফাউন্ডেশন । গত মাসে প্রকাশিত সমীক্ষার রিপোর্টে ভয়াবহ কিছু বিষয় সামনে এসেছে।
ট্রাক পরিবহনের সাথে এক বিশাল ঘুষ অর্থনীতির উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে । সরকারী কর্মচারীরাই এই ঘুষের প্রধান সুবিধাভোগী।
সারা দেশে প্রতি মিনিটে ট্রাক পরিবহন থেকে ঘুষ আদায় হচ্ছে প্রায় ৯ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা। প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৫ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা। এক দিনে প্রায় ১৩১ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা। এক বছরে প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা। এটা ২০১৯ সালের হিসেব ।
২০০৬ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী বছরে এই ঘুষের পরিমান ছিল প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা । প্রতি বছরে ঘুষের পরিমান প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা করে বাড়ছে।
প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক সরকার কী করছে ?
মার্কেটিং এন্ড ডেভেলপম্যান্ট রিসার্চ এসোসিয়েটস (এম ডি আর এ) ভারতের একটি বিখ্যাত সমীক্ষা কারী সংস্থা। এই সংস্থা ট্রাক পরিবহনের সাথে ঘুষের আত্মিক সম্পর্ক নিয়ে তুলনামূলক বিচার করে জানাচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া পদক্ষেপে ঘুষের মাত্রায় সামান্য হলেও রাশ টানা সম্ভব হয়েছে।
২০০৬ সালে প্রতি কিলোমিটার যাত্রায় ঘুষের জন্য ট্রাক গুলোর খরচ ছিল সত্তর পয়সা । এই খরচ প্রায় ২৪% কমে এখন হয়েছে তিপ্পান্ন পয়সা।
২০০৬ সালে প্রতিদিন গড়ে ২৩৫ টাকা ঘুষের জন্য গুণতে হতো। এখন এই খরচ ২২২ টাকা। হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৫.৫% ।
২০০৬ সালে গড়ে একটি ট্রাক এক দিনে ৩৩৫ কিলোমিটার যাত্রা করতো , এখন করতে হচ্ছে ৪১৮ কিলোমিটার। ট্রাকের সংখ্যা বৃদ্ধিতেই ঘুষের পরিমাণ বাড়ছে।
এই ঘুষ নেবার কারণে শাস্তি দেওয়ার আনুপাতিক হার কিন্তু বাড়ছে না । পুরোটাই কালো টাকার বিশাল অর্থনীতিতে সুবিধাভোগীদের অবস্থানের বিস্তৃত আলোচনা কোন সমীক্ষাতেই আলোচিত হচ্ছে না ।