আঁকা দেখতে দেখতে অবন ঠাকুরের লেখা এল মনে শিল্প প্রসঙ্গে। দ্য প্লুরাল কলাম’র ভিডিও আর্টিকেল। ০১ মার্চ , ২০২০।
“শিল্পশাস্ত্রের মূল গ্রন্থসব যা ছিল বলেই শুনি, সেইসব প্রাচীন শাস্ত্রের সারসংগ্রহ বলে যেসব পুঁথি নানা কালে এ-দেবতা ও-ঋষি বা অমুক তমুকের কথিত বলে লেখা হল— রাজরাজড়ার পুস্তকাগারে ধরার জন্য সেইগুলোই কতক কতক এখন পাওয়া যাচ্ছে। তা থেকে দেখা যায় যে, ধর্মের সেবায় শিল্পের যেসব দিক জড়িয়ে ছিল তারি বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ হল কিন্তু অন্যান্য কলা যা শৌখিন রাজরাজড়ার সেবায় লাগত তাদের বিস্তারিত বিবরণ লেখাই গেল না। পূজার প্রতিমা কেমন করে করতে হবে তার ঠিকঠাক নিয়ম লক্ষণ সমস্তই পাই, কিন্তু কাপড়-চোপড় নানা গন্ধতৈল নানা মূল্যবান তৈজসপত্র এদের প্রস্তুতের প্রকরণ শিল্পশাস্ত্রে দেখি ক্কচিৎ ধরা হল। এ ধরনের সামগ্রীর মধ্যে এক বজ্রপ্রলেপের কথা লেখা আছে দেখি সব শিল্পশাস্ত্রে, কিন্তু বজ্রমণির বেলায় তার ধারণের কি ণ্ডণাণ্ডণ তার বর্ণ ও মূল্যাদির হিসেব হল ধরা কিন্তু বজ্রমণিটা বিদ্ধ করা যায় কি প্রক্রিয়ায় এবং কত রকম গহনা হয়, কত নাম তাদের,— এসব কিছু নেই শিল্পশাস্ত্রের মধ্যে। প্রতিমা-লক্ষণ, প্রাসাদ-নির্মাণ, কূপ-খনন, ইত্যাদি-ইত্যাদি নানা কথা শিল্পশাস্ত্রে যেমন নানা অধ্যায়ে ভাগ করে লেখা রইল, তেমন করে ভূষণশিল্প যেটা একটা খুব বড় আর্ট প্রাচ্য জগতের— তার হিসেব ধরা দরকারি বোধ হল না।”———–“শিল্পশাস্ত্রের ক্রিয়াকান্ড”, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর।