ইউনাইটেড নার্সেস এসোসিয়েসন ( ইউএনএ) সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে, কোভিড-নাইন্টিন ব্যবস্থাপনার জন্য প্রটোকল তৈরি করতে নির্দেশ দেয়ার জন্য। প্যারা মেডিক্যাল, নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীরা যে সমস্ত অসুবিধার মুখোমুখি হচ্ছেন, সেই বিষয়গুলি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে গেছে ইউনিয়ন। তারা বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বাস্থ্যকর্মীদের অধিকার, দায়িত্ব এবং ভূমিকা, এই নিয়ে অন্তর্বতীকালীন গাইডলাইন জারি করেছে আন্তর্জাতিকস্তরে। কিন্তু ভারত সরকার জাতীয়স্তরে এমন একটি নিয়মাবলী এখনও জারি করতে পারেনি,আদালতের কাছে আবেদনটিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘ ন্যাশনাল কোভিড-নাইন্টিন ম্যানেজমেন্ট প্রটোকল’ তৈরি করার আর্জি জানিয়েছে ইউএনএ। পার্সোনাল প্রটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্ট ও সংক্রমণটি সামলানোর ট্রেনিং’র অভাব স্বাস্থ্যকর্মীদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে, এখন পর্যন্ত সারা দেশে ডাক্তারসহ ৫০ জন স্বাস্থ্যকর্মী কোভিড-নাইন্টিন আক্রান্ত হয়েছেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-নাইন্টিন সংক্রান্ত চিকিৎসায় যুক্ত প্রত্যেকটি স্বাস্থ্যকর্মীকে পিপিই দিতে হবে। এড-হক হিসেবে নিযুক্ত সব কর্মীসহ স্বাস্থ্যসেবায় যারাই আছেন, প্রত্যেকেই বীমার আওতায় আনতে হবে। আদালতের নজরে আনার জন্য আবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-নাইন্টিন টেস্টিং কিটের অভাব আছে, নিম্নমানের পিপিই দেয়া হচ্ছে, আইসোলেসন ওয়ার্ডে সব সুবিধা নেই,বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মানা হচ্ছে না। প্রতি ঘন্টায় ওয়ার্ডগুলি জীবানুমুক্ত করা হচ্ছে না, নির্ধারিত সময়ের বেশি কাজ করিয়ে একদিকে মানসিক চাপে রাখা হচ্ছে, আবার ছুটি নিলে বেতন কাটা হচ্ছে, পরিবহন ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়, স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে যারা গর্ভবতী, স্তন্যদায়ী এবং ইম্যুনিটির অসুবিধায় আছেন, তাদের কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে, স্বাস্থ্যকর্মীদের ভাড়া বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে, স্বাস্থ্যকর্মী ও তাদের পরিবারের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ নেই, বেসরকারি হাসপাতালগুলি ক্রমাগত গাইডলাইন ভেঙে চলছে। যেহেতু কোভিড-নাইন্টিন ড্রপলেট থেকে ছড়ায়, এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা সরাসরি আক্রান্তের সংস্পর্শে আসেন, তাই তাদের রক্ষা করা ভীষণ জরুরি।
সব নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের কোভিড-নাইন্টিন চিকিৎসা কেন্দ্রের কাছে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা,করোনা ওয়ার্ডে আক্রান্তদের চিকিৎসায় যুক্তদের জন্য পর্যাপ্ত পরিবহনের ব্যবস্থা করা, হাসপাতলে ঢোকার আগে সব রোগীকে স্ক্রিনিং করা, সন্দেহভাজনদের দ্রুত পরীক্ষা করা, প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেয়া, বাড়িওয়ালারা যেন স্বাস্থ্যকর্মীদের বের করে না দেন, চিকিৎসাকর্মী কোভিড-নাইন্টিন আক্রান্ত হলে তার বিনামূল্যে চিকিৎসা ব্যবস্থা করা, বেসরকারি হাসপাতাল যেন বেতন কেটে না নেয়, আবেদনে এসব নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
” স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবা অপরিহার্য,সরকারের দায়িত্ব তাদের সম্ভাব্য সব সাহায্য করা, তাদের সাহায্য করা এই মুহূর্তের বিশেষ প্রয়োজন। দুর্ভাগ্যবশত ভারতে এই কোভিড-নাইন্টিন অতিমারীর সময় প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যকর্মীরা কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন”, আবেদনে বলা হয়েছে। আইনজীবী বিজু পি রামন আবেদনকারীদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।
( নয়াদিল্লি)