উকুন মারার ঔষধেই কি লুকিয়ে আছে করোনা ভাইরাসকে মারার রহস্য ? অস্ট্রেলিয়ার একদল গবেষক আপাতত এরকম একটি অবস্থার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন।
১৯৮০সাল থেকেই সারা বিশ্ব জুড়ে ইভারমেকটিন ঔষুধটি ব্যবহৃত হচ্ছে। দেহে কোনও পরজীবী আক্রমণ হলে চিকিৎসকেরা এই ওষুধের নিদান দেন। মাথার উকুন মারার একটি বহুল পরিচিত ঔষুধ ইভারমেকটিন। ক্রিম বা লোশন হিসাবেই এর ব্যবহার সবথেকে বেশি । রাউন্ড ওয়ার্ম সংক্রমণ হলে ইভারমেকটিন ট্যাবলেট চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
সারা বিশ্বজুড়ে চলছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বিভিন্ন ব্যবস্থার অনুসরণ।এখনও এই রোগের ঔষুধ বের হয় নি । বিভিন্ন ঔষুধ নিয়ে চলছে ট্রায়াল এন্ড এরর । এই রোগের ভ্যাকসিন কবে আবিষ্কার হবে এনিয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই।
একদল অস্ট্রেলিয়ার গবেষক ভবিষ্যতের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য নতুন কথা শোনালেন । তাদের মতে ইভারমেকটিন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করে তোলার ক্ষমতা রাখে । শুধু তাই নয় প্রাথমিক গবেষণায় ওই গবেষকরা দাবি করেছেন ৪৮ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যেই ইভারমেকটিন করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে ।
গত বেশ কিছুদিন ধরেই মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো মেডিসিন ডিসকভারি ইনস্টিটিউট (বি ডি আই ) এবং ডোহরেটি ইনস্টিটিউট অব ইনফেকশন এন্ড ইমিউনিটি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য কার্যকরী ঔষধ চিহ্নিত করার জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার এই দুই গবেষণাগারের গবেষকদের মতে , কোভিড 19 রোগের জন্য দায়ী SARS -Cov -2 ভাইরাসের রেপ্লিকেশন রোধ করে দিতে পারে ইভারমেকটিন ।
অনলাইন জার্নাল এন্টিভাইরাল রিসার্চে “The FDA- approved drug ivermectin inhibits the replication of SARS -Cov -2 in vitro” শিরোনামে গবেষণা পত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষক দলের প্রধান ড: কেলি ওয়াগস্টাফ দাবি করেছেন এক ডোজ ইভারমেকটিন ২৪ ঘন্টাতেই ভাইরাসের আর এন এ নষ্ট করতে শুরু করে এবং ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রায় সব ভাইরাল আর এন এ-কে নিষ্ক্রিয় করে দিচ্ছে।
গবেষকদের দাবি তাদের পরীক্ষা এখনও প্রাথমিক অবস্থাতেই আছে এবং কোনও Covid-19 আক্রান্ত রোগীর দেহে এই ঔষুধ প্রয়োগ করা হয় নি ।
মানুষের শরীরে প্রবেশ করার পর যে প্রোটিন বা উৎসেচকের বদান্যতায় করোনা ভাইরাসের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটতে থাকে , সেই প্রোটিনকেই সম্ভবতঃ ইভারমেকটিন নিষ্ক্রিয় করে দেয় । গবেষকরা জানিয়েছেন তারা এখনই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসায় এই ওষুধ ব্যবহারের পক্ষে সওয়াল করছেন না । আরও পরীক্ষা করতে হবে । হিউম্যান ট্রায়াল এখনও বাকি । মানুষের শরীরের বাইরে এই ভাইরাসের সংখ্যাবৃদ্ধি হ্রাস করার ক্ষেত্রে ইভারমেকটিন ব্যবহার করে উৎসাহজনক ফল পাওয়া গেছে । গবেষণার পরবর্তী ধাপে আক্রান্ত রোগীর দেহে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হবে।
গবেষকেরা সাবধান করে দিয়েছেন যে পরীক্ষাগারের ফলাফলকে ভিত্তি করেই করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় এই ওষুধ এখনই ব্যবহার শুরু করার সময় আসে নি । আপাতত যে ফলাফল পাওয়া গিয়েছে এতে গবেষকেরা আশার আলো দেখছেন ।