বিবেক চৌধুরি এবং মানসী মালাকার, এখন দু;জনেই তামিলনাড়ুর ভেলোরে, মানসীর চিকিৎসার জন্য গেছেন, পৌঁছেছেন ১৮ মার্চ। ২১ মার্চেই চিকিৎসার কাজ শেষ হয়ে গেলেও , ফিরতে আর পারেননি নিজের জায়গা ত্রিপুরায়, ট্রেনের ব্যবস্থাই করা যায়নি।
দম্পতির বক্তব্য, ২৮ মার্চ থেকেই তারা ত্রিপুরা সরকারের সাথে যোগাযোগ করছেন, কিন্তু এখনও তাদের কাছে কোনও টাকা পৌঁছায়নি। হোটেলের তরফে চাপ আছে ভাড়া দেয়ার জন্য , তাছাড়্রা জল, গ্যাস কিনতে হয়। বাসন-কোসনের ভাড়া দিতে হয়। দিনে তাদের হোটেল ভাড়া ৪০০ টাকা, গ্যাস কিনতে যায় আড়াইশ টাকা , তাতে যায় সাতদিন, জল কুড়ি লিটার ৫০ টাকা , দেড়দিনের মত হয়।
মার্চের ২৮ তারিখ থেকে যোগাযোগ শুরু করে, এপ্রিলের ১৪ তারিখ কন্ট্রোল রুম থেকে তাদের ব্যাঙ্ক একাউন্ট, আইএফএসসি, ইত্যাদি নেয়া হয়, বলেছেন ওই দম্পতি।
বিবেক একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন, মানসী সংসার দেখা-শোনা করেন।
গতরাতে তাদের পক্ষে একটি ফেসবুক পোস্ট দিয়ে সাহায্য না পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। মানসী মালাকার একাউন্ট থেকে দেয়া পোস্টে, কট্রোলরুমের সাথে তাদের কথাবার্তাও দেয়া হয়েছে। দেয়া হয়েছে, আধিকারিকদের সাথে টেক্সট ম্যাসেজ’র ছবি। তারা ১৬ এপ্রিলেও একটি পোস্ট দিয়ে “ সরকার থেকে কোন সাহায্য পাইনি, আমাকে বলা হয়েছে আরো ৭দিন লাগবে,এরকম কতদিন………”
দ্য প্লুরাল কলামকে ফোনে তারা হোটেল ভাড়, ইত্যাদির পরিমান জানিয়েছেন , এবং বলেছেন , আজ পর্যন্ত তাদের কাছে টাকা যায়নি। তারা দু’দিন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে রেসন পেয়েছেন।
জনধন একাউন্টে পেয়েছেন ৫০০ টাকা, সরকারি সাহায্য এখন পর্যন্ত এটাই, বলেছেন বিবেক চৌধুরি।
মানসী মালাকার বলেছেন,” আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের থেকে টাকা ধার করেই এসেছি চিকিৎসায়। ত্রিপুরায় ৬২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে চিকিৎসায়। ক্যান্সার সন্দেহ হওয়ার তাড়াহুড়ো করে আসতে হয়েছে।“ তবে তার ক্যান্সার হয়নি,ভেলোরের ডাক্তাররা বলেছেন, তিনি জানিয়েছেন।
কন্ট্রোল রুমকে ২৪১২৪২৪ নম্বরে তাদের কথা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। কন্ট্রোল রুম বলেছে তাদের কাছে কোনও কিছু আটকে নেই, সব প্রসেস হয়ে গেছে। রাজস্ব দফতর বাকীটা বলতে পারবে। কত মানুষ তাদের কাছে নাম লিখিয়েছেন, সেটা তারা বলতে পারেননি।
ত্রিপুরার রাজস্ব দফতরের যুগ্ম সচিব এ এইচ ডারলং এই ব্যাপারে বলেছেন, তাদের টাকা পৌঁছে যাওয়ার কথা। তারা ব্যাঙ্ক একাউণ্ট চেক করে একবার দেখতে পারেন। অবশ্য তিনি এও বলেছেন, তিনি বিষয়টি আবারও নোট করে নিলেন।
দেরির কারণ সম্মন্ধে তার দাবি, তালিকা অনেক লম্বা, ব্যাঙ্কে একেক জনের তথ্য এন্ট্রি করতে বেশ সময় লাগে, তাছাড়া যদি নামে-একাউন্টে না খাপ খায় তাতেও সময় নষ্ট হয়। একজনের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেছেন, উনার তথ্যে ভুল ছিল, পরে ঠিক তথ্য পেয়ে তার কাছে টাকা গেছে।
কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, প্রতিজন প্রতিদিন ১৫০ টাকা পাবেন খাবারা টাকা। রোগী, ছাত্র এবং প্রবাসী শ্রমিকরা এই টাকা পাবেন। হোটেল ভাড়া হিসেবে, একটি ঘরের সর্বোচ্চ ভাড়া দেয়া হবে, এক হাজার টাকা।
তিনি এও বলেছেন, কেউ কেউ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অসাধু কাজও করছেন। রাজ্যে থেকেও টাকা দাবি করে বসে আছেন।অন্তত তিনটি এমন বিষয় ধরা পড়েছে। বিপর্যয়ের সময় পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই করা সম্ভব নাও হতে পারে। রিলিফ তাড়াতাড়িই দিতে হয়।
১৯ এপ্রিল চেন্নাই থেকে আগরতলায় অ্যাম্বুলেন্সে করে এসে পৌঁছেছেন পাঁচজন। তাদেরও একজন ২০ এপ্রিল বলেছিলেন, ফরম্যাট অনুযায়ী সব করে পাঠালেও তার কাছেও সেদিন পর্যন্ত কোনও সরকারী টাকা পৌঁছেনি। তিনি চেন্নাইয়ে ২২ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত ছিলেন।
সামাজিক মাধ্যমে সাহায্য চেয়ে অন্যরাজ্যে থেকে দেয়া ভিডিও পোস্ট চোখে পড়েছে।
( আগরতলা,ত্রিপুরা)