দেশ কঠিন সময়ে । মানুষের আর্থিক দুর্দশা কমাতে ব্যাঙ্ক গুলো কী ভূমিকা নেবে সময়ই বলবে , নয়ডার এক অন্য ধরণের ব্যাঙ্ক কিন্তু ইতিমধ্যেই তার মানবিক মুখের পরিচয় জানিয়ে দিয়েছে ।
এই ব্যাঙ্কের নাম দেওয়া হয়েছে রোটি ব্যাঙ্ক । বয়স মাত্র চৌদ্দ দিন । এই কদিনেই রোটি ব্যাঙ্ক দেখিয়ে দিয়েছে সংকটের সময় কিভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায় ।
হটাৎ করেই শুরু করেছিলেন নয়ডার সেভেন এক্স সোসাইটির কজন মিলে । উদ্দেশ্য ছিল এটাই নিজেদের বাড়িতে রোটি তৈরি করে পরিযায়ী শ্রমিক এবং গরীবদের কাছে পৌঁছে দেওয়া । সোসাইটির সবার কাছেই আবেদন করা হয়েছিল , পরিবার পিছু চার থেকে পাঁচটি করে রোটি এই ব্যাঙ্কে জমা দেবার জন্য । প্রায় কেউই না বলেন নি । এরপরের সমস্যা ছিল রোটির সাথে অন্য খাবার কী দেওয়া হবে এবং খাবার কিভাবে পৌঁছে দেওয়া হবে । আবেদন জানানো হল নয়ডা প্রশাসনের কাছে ।
প্রশাসন থেকে দেওয়া হল গাড়ি । একটু দূরের কম্যুনিটি কিচেনে ডাল বা তরকারি তৈরির ব্যবস্থা করা হল । সেভেন এক্স সোসাইটি থেকে প্রথম দিন সংগ্রহ হয়েছিল চারশো রোটী । খবর ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি । এগিয়ে এলেন আরও অনেক সোসাইটির মানুষ । তৈরি হল স্বেচ্ছাসেবকদের দল । এই দলের কাজ রোটি সংগ্রহ করা , আরও বেশি মানুষকে রোটি ব্যাঙ্কে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি করে রোটি দেবার কাজে এগিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করা । সবকিছুই করা হচ্ছে মাস্ক পড়ে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ।
হটাৎ করে কারোর বাসায় এসে ব্যাঙ্কের স্বেচ্ছাসেবকরা রোটি চাইলে অনেকেই দিতে পারছেন না , কিন্তু উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন পরদিন থেকেই এই জন আন্দোলনে সামিল হবেন বলে । এখন পর্যন্ত রোটি সংগ্রহ হয়েছে এক লাখেরও বেশী । গত দু তিন দিনের হিসেব মতে প্রায় চার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক এবং গরীব অংশের মানুষ এই রোটি ব্যাঙ্ক থেকে চারটি করে রোটি এবং সবজী বা ডাল পাচ্ছেন । সন্ধ্যের একটু পর থেকেই শুরু হচ্ছে খাবার বিতরন ।এর আগে বিকেল চারটা থেকেই শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন সোসাইটি থেকে রোটি সংগ্রহ । এখন পর্যন্ত পঁচিশটি সোসাইটির মানুষ রোটি দেওয়ার কাজে এগিয়ে এসেছেন । প্রতিদিন সংগ্রহ হচ্ছে প্রায় ষোল হাজার রোটি ।