লকডাউনে বিয়ে !
কথাটাই একটা চমক। শুনলেই কৌতুহল বেড়ে যায়।
কিন্তু লকডাউনে বিয়ে লিখে গুগলে দিলে, ‘……ডিড নট ম্যাচ এনি ডকুমেন্ট’ আসে না, বরঞ্চ সেরকম বিয়ের খবর আসে।
মুম্বই থেকে নিউইয়র্ক, উদাহরণ আছে, এমনকী অনলাইন ওয়েডিং। আমেরিকায় ভিডিও বিয়ে এখন আইনসম্মত। উহানে এখন মেট্রিমনি-অ্যাপ সাংঘাতিক ব্যবহারে খুলতেই চাইছে না। লুধিয়ানা থেকে আটশ পঞ্চাশ কিলোমিটার বিয়ের জন্য বাইসাইকেলে প্যাডেল ঘোরানোর কাহিনী আছে।
এই খবরের পর সেখানে দিল্লি, উদয়পুরের নামও খুঁজে দেখা যেতে পারে।
ত্রিপুরার উদয়পুরের সানি সূত্রধর আর শুভ্রা শীল, লকডাউনেই প্রচলিত পদ্ধতির বিয়েটা সেরে ফেললেন ২৬ এপ্রিল। বিয়ে হল, সানির বাড়ির উঠানে, গকুলনগরে। শুভ্রার বাড়িও দূরে নয়, কিলোমিটার খানেক সেখান থেকে, অমসসাগরের কাছে। তারা দু’জনেই দিল্লিতে থাকেন।
জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিতে হয়েছে। শর্ত বেঁধে দেয়া হয়েছিল, ভাঙলেই কড়া আইনে ব্যবস্থা। বাজনা বাজিয়ে থেকে পুরোহিত, ছেলে-মেয়ের মা-বাবা, সব মিলিয়ে কুড়ি জনের বেশি অনুমতি ছিল না।
“অনুভূতি ভিন্নতর বটেই। আবার বিয়েতে কাউকেই ডাকা যায়নি, বন্ধু-আত্মীয়, কাউকেই না, সেই দুঃখ আছে। তবে আলাদা অনুভূতি হচ্ছে,” ফোনে বললেন সানি।
“লকডাউনের পনের দিন আগে এসেছি দু’জনেই। বিয়ের কথা ছিলই। পরিস্থিতিতে পারা যাচ্ছিল না। কিন্তু এখন বাড়িতে সন্তান-সম্ভবা বউমণি আছেন। ক’দিন পর সেদিকটাই সবাইকে সামলাতে হবে। তাছাড়া তখন কিছু বিয়ের অনুষ্ঠান করা যাবে না চলে আসা নিয়মে। আর এখন এই লম্বা ছুটির পর দিল্লিতে ফিরে গেলে, কবে আবার আসতে পারব দু’জনে বলা যায় না। সব কিছু মিলিয়েই হল বিষয়টা,” সানি কারণটি জানালেন।
সময়-সুযোগে হবে বিয়ের ভোজ। আপাতত দু’জন সবার শুভেচ্ছা প্রার্থী ।
সানির শিক্ষক, দেবাশিষ দালাল সামাজিক মাধ্যমে শুভেচ্ছা দিয়েছেন। “ সুখী হও। লকডাউনে বিয়ে করে নজির সৃষ্টি করেছো। তাই শিক্ষক হিসেবে গর্বিত।”
সানি একটি বেসকারি সংস্থায় আছেন, শুভ্রা স্কুলে সাঁতারের দিদিমণি। জীববিজ্ঞানের ছাত্র সানি ফেসবুকে ইন্ট্রো রেখেছেন, “ স্ট্রাগলিং ফর এক্সজিস্টেন্স”
( আগরতলা, ত্রিপুরা )