চিন করোনা ভাইরাস ল্যাবরেটরিতে তৈরি করে ছড়িয়ে দিয়েছে, এই কথা কোভিড ওয়ান নাইন সংক্রমণ ছড়ানোর গতিতেই ছড়িয়েছে। কথাটি কলকাঠি নেড়ে তেমন পোক্ত হয়ে আর দাঁড়াচ্ছে না এখন। কোথাও কোথাও ইদানিং কথাটির চেহারা একটু বদলেছে, ভাইরাসটি চিনের উহানের এক গবেষণাগার থেকে ‘লিক’ হয়েছে।
ডানপন্থী ব্লগার, কিছু মিডিয়া পণ্ডিত এবং অবশ্যই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভক্তরা এই প্রচারের সেনানী, লিখেছে আমেরিকার একটি ওয়েবসাইট ইউএসটুডে ডট কম।
ডোলান্ড ট্রাম্প ‘চিনা ভাইরাস’ বলে আন্তর্জাতিক স্তরে তর্কাতর্কির শুরু করেন। চিন প্রচন্ড আপত্তি করেছে। রাশিয়ার একটি ওয়েবসাইট আমেরিকার সেনারাই চিনে এটি ছড়িয়েছে প্রথম দাবি করে।
চিন প্রথম দিকে বলেছিল, বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে মানুষে এসেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্টের আক্রমণের পর, চিন আমেরিকার সেনার দিকটি খুঁচিয়ে দিয়েছে।
ভারতকে চিন বলেছে, ভাইরাসটিকে যেন এভাবে ডাকা না করা হয়। চিনের রাষ্ট্রদূত ট্যুইট করে বলেছেন, ভারত তাতে সম্মত। ভারতও বলেছে করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় চিনের সাথে গভীরভাবে কাজ করবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প চিনকে বকাবকি করলেও, চিনের চিকিৎসা সরঞ্জাম, এমনকী অন্য দেশের জন্য সেগুলি দিয়ে রওনা দেয়া প্লেনকে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ আছে।
অনেক বিশেষজ্ঞই ট্রাম্পের ‘চিনা ভাইরাস’-কে সমর্থন করেননি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চিনের তৈরি নয় বলাতে হু’র ওপর খাপ্পা ট্রাম্প।
ভারত ‘চিনা ভাইরাস’ বলেনি। তবে এ দেশেও সামাজিক মাধ্যমে সেই প্রচার আছে। এবং সেটা বামপন্থ বিরোধী ব্লগারদের থেকেই। রাজনৈতিক দলের নেতার মুখেও আছে।
ট্রাম্প সাহেব নিজের দাবির পক্ষে কোনও পাক্কা প্রমাণ দেখাতে পারেননি। নিজের দেশেই তাকে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন,এই সঙ্কট মোকাবিলায় তার ভুলকে ঢাকতে ,চিনের দিকে চোখ ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন তিনি।
আমেরিকার গোয়েন্দা প্রধান রিচার্ড গ্রীনেল বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, সামগ্রিকভাবে এটাই মানা হচ্ছে যে এই ভাইরাস মানুষের তৈরি নয় অথবা জীনগতভাবে কিছু করা হয়নি। বিবৃতিটি আমেরিকার গোয়ন্দাগোষ্ঠীর পক্ষে দেয়া হয়েছে।
তবে চিনের কোনও ল্যাবরেটরি থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে কিনা, অথবা এটি প্রাণীদের থেকে মানুষের শরীরে এসেছে কিনা, সেই প্রশ্নটি বিবৃতিতে অমীমাংসিত।
“ যা তথ্য আসছে তা খতিয়ে দেখা হবে যে মহামারীটি সংক্রমিত প্রাণী থেকে এসেছে , নাকি উহানের একটি ল্যাবরেটরিতে দুর্ঘটনার ফলে তা ছড়িয়ে গেছে,” আমেরিকার ন্যাশনাল ইন্টিলিজেন্স’র ডিরেক্টর সেই বিবৃতিতে বলেছেন।
উহানের ভিরোলজি ইনস্টিটিউট থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে যে থিওরি , তাতেও বহু বিজ্ঞানী আপত্তি করেছেন।
মার্চের ১৭ তারিখ ‘নেচার মেডিসিন’ লিখেছে, আমেরিকা, ইউনাইটেড কিংডম , অস্ট্রেলিয়-র পাঁচ গবেষক বলেছেন, বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রমাণ বলছে, ভাইরাসটিতে কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে পরিবর্তন করা হয়নি, এবং খুব সম্ভবত এটি কোনও প্রাণী থেকেই এসেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২২ এপ্রিল বলেছে, “ খুব সম্ভবত ভাইরাসটি প্রাণী থেকেই এসেছে ।“
আমেরিকার সংবাদ মাধ্যমে তাদের গোয়ান্দা প্রধানের বিবৃতির কথা ছেপেছে। সেখান থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে।
এই খবরটি লেখা হয়েছে এই ওয়েবসাইটকে ভিত্তি করেঃ https://www.usatoday.com/story/news/world/2020/04/30/coronavirus-trump-intelligence-chief-covid-19-not-man-made/3055744001/
তাছাড়াও দেখা হয়েছেঃ https://time.com/5829998/coronavirus-origin-us-intelligence/ )
( আগরতলা,ত্রিপুরা)