সাহিত্যিক, গবেষক, লেখক এবং অধ্যাপক ও রাজনৈতিক কর্মী দেবেশ রায় প্রয়াত। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গত মঙ্গলবার তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল তেঘরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। থাকতেন কলকাতায়। ভেন্টিলেসনে ছিলেন। রাত দশটার পর থেমে যান তিস্তাপারের বৃত্তান্ত-এর লেখক। চলতি ফরম্যাটের বাইরে গিয়ে লেখার জন্যই তিনি পরিচিত। ১৯৯০ সালে ‘তিস্তাপারের বৃত্তান্ত’র জন্য সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান। এই উপন্যাস ১৯৮৮ সালে লেখা।
জন্ম ১৯৩৭ সালে। তৎকালীন পূর্ববাংলার পাবনা জেলার বাগমারা গ্রামে। বেড়ে ওঠা পশ্চিম বঙ্গের উত্তরবঙ্গে। জলপাইগুড়িতে প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ শেষ করে তিনি ভর্তি হন আনন্দচন্দ্র কলেজে। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করেন। ১৯৫৯ সালে তিনি আনন্দচন্দ্র কলেজেই ফের অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত সৃষ্টি ‘যযাতি’। লিখেছেন ছোট গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, এবং গবেষণামূলক নিবন্ধও। প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘উপনিবেশের সমাজ ও বাংলা সাংবাদিক গদ্য’, ‘উপন্যাসের নতুন ধরনের খোঁজে’, ‘রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর আদি গদ্য’, ‘শিল্পের প্রত্যহে’, ‘সময় সমকাল’ প্রভৃতি। দেবেশ রায় যখন কলেজের থার্ড ইয়ারে, বড় বাণিজ্যিক কাগজে তার প্রথম লেখা বের হয়। তার পনের বছর পর প্রথম বই, ‘দেবেশ রায়ের গল্প’।
ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িয়ে। যুক্তফ্রন্টের নেতা হয়েছিলেন। শ্রমজীবীদের পক্ষে রাজনীতি করতেন।
স্ত্রী মারা গেছেন ২০১৭ সালে। একমাত্র ছেলে দেবর্ষি। পরিবার নিয়ে থাকেন গুজরাটে। লকডাউনের কারণে বাবার সঙ্গে আর দেখা হল না তার।