আগরতলার ভগৎ সিং যুব আবাসে কোভিড রোগীদের চিকিৎসার একটি কেন্দ্র রয়েছে।
সেখানে অনেক রোগীই ভর্তি আছেন। বুধবার রাতে রোগীরা খাবারের মান নিয়ে ঠিক নেই, পঁচা খাবার দেয়া হয়েছে, ইত্যাদি অভিযোগ এনে গোলমাল করেছেন। পুলিশ এবং সাধারণ প্রশাসনের লোকজন সেখানে গিয়েছিলেন।
স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার শাসক সেই রাতেই বলেছেন, তাদের নতুন করে খাবার দেয়া হচ্ছে। পরদিনই যে সমস্ত অসুবিধার কথা তুলেছেন রোগীরা, সেগুলির বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গোলমালের বিষয়ে তিনি বলেছেন, সেটা মানা যায় না। তিনি অনুরোধ করেছেন, এরকম যেন কেউ না করেন।
যুব আবাসে গোলমাল, প্রশাসনের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হওয়া, এবং সেই রাত্রেই আবার ক্যাটারার ডেকে নতুন করে খাবার দেয়া, ইত্যাদি যখন হচ্ছে, সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টিকে ‘সংখ্যালঘু’ অংশ, ইত্যাদি বলে নোংরা সুড়সুড়ি দেয়া হয়েছে। অন্তত একটি অনলাইন খবর মাধ্যমেও দেখা গেছে।
মাংস-বিরিয়ানি দাবি করা হয়েছে বলে পোস্ট দেয়া হয়েছে।
সিপাহিজলার রোগীরা এমন বলেছেন বলে খবরটি লিখেছে।
একাধিক একরকম পোস্ট দেখা গেছে, সেসব পোস্ট শেয়ারও হয়েছে বেশ।
বছর খানেকের কিছু বেশি সময় আগে একবার সাস্পেন্ড হওয়া এক ডাক্তারবাবুরও একটি পোস্ট আছে, সেখানে দম-বিরিয়ানি বানানোর ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করা হোক, ইত্যাদি তীর্যক বক্তব্য আছে।
স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রমণ করার কথাও কোথাও কোথাও আছে।
একজন চিকিৎসক ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বলেছেন, রোগীরা স্বাস্থকর্মীদের মেরেছেন, এরকম খবর দেখে তিনি ও তার দল বিস্মিত। তিনি বলেছেন, এটি একেবারেই ভুয়ো খবর, এবং তাদের কাছে বেদনাদায়ক। কেউ কেউ এরকম সামাজিক মাধ্যমে এরকম যে ছড়াচ্ছেন, সেটা লজ্জাজনক। কেউ আক্রমণ করেননি , কিংবা কেউ দম-বিরিয়ানি চাননি। রোগী এবং চিকিৎসকদের সাহায্য করার আবেদন রেখে তিনি বলেছেন, কেউ যেন মিথ্যা খবরে বিশ্বাস না করেন। এই ডাক্তারবাবুর ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী তিনি সেই চিকিৎসা কেন্দ্রে সেই সময় ছিলেন , এবং তিনিই টিম-ইনচার্জ। তার ফেসবুক পোস্টটির প্রাইভেসি সেটিং ‘পাব্লিক’ করা নয়, তাই স্ক্রিনগ্র্যাব শেয়ার করা হল না।
রোগীরা কিছু ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ আছে। সেই ব্যাপারে প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে কিনা, তা জানা যায়নি। রোগীরা দম-বিরিয়ানি চেয়েছিলেন কিনা, স্বাস্থ্যকর্মীদের শারীরিক আক্রমণ করা হয়েছে কিনা, যে সমস্ত সমস্যা সমাধান করার কথা ছিল পরদিনই , সেগুলি হয়েছে কিনা, এসবও প্রশাসনের কাছ থেকে কিছু জানা যায়নি। একাধিকবার চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি।
করোনা সংক্রমণ নিয়ে এই দেশে সাম্প্রদায়িকতা করার অভিযোগ রয়েছেই। সংক্রমণ শুরুর মুখেই এই বিষয়টি মাথাচাড়া দিয়েছিল, এখন তিথিয়ে এসেছে। একটি পক্ষকে দেগে দেয়ার অভিযোগ ছিল, তা নিয়ে নানা দিক থেকে প্রতিবাদও হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে ভুয়ো তথ্য ছড়ানো, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সংঘবদ্ধ প্রচার চালানো, ঘৃণা ছড়ানো, ইত্যাদি হচ্ছেই।
COMMENTS