ছেলেটি ক্লাশ ইলাভেনের ছাত্র। ভালোবাসে ঘুড়ি ওড়াতে। লকডাউনের এই সময়ে সে চুটিয়ে ঘুড়ি ওড়াচ্ছে। কিন্তু তার এই ভালোলাগার বিষয়টি নিয়ে যে এত দূর জল গড়াবে সে কল্পনাও করতে পারেনি।
পরশু রাতে মধ্য বক্সনগর গ্রামে হৈচৈ পড়ে যায়। থানা পুলিশ বিএসএফ প্রশাসনের লোকজন মিলে এক দক্ষযজ্ঞ ব্যাপার। এলাকাটি ত্রিপুরা বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া। সিপাহীজলা জেলার মধ্যে। তাই বিষয়টি নিয়ে হৈচৈ হয়েছে একটু বেশিই।
নজরুল ইসলাম। লকডাউনে তার স্কুল বন্ধ। সময় কাটছে ঘুড়ি উড়িয়ে। অন্য আরও ছেলেদের মতো। নজরুল নিজে একটি ঘুড়ি বানিয়েছে। নজরুলের দাবি এই ঘুড়ির নাম ‘ঢাকাই ঘুড়ি’। দেখতে বেশ বড় আকারের। তার মধ্যে নজরুলের নিজের কিছু কারসাজিও ছিল। ঘুড়ির গায়ে সে ছোট ছোট বাল্ব বসিয়েছে। সে বাল্ব জ্বালানোর জন্য বসিয়েছে ছোট আকারের একটি মটোর। আর ঘুড়ির গায়ে হালকা রঙিন কাগজের পরিবর্তে ব্যবহার করেছে রঙিন গ্লাস পেপার।
এই ঘুড়ি ওড়ালে মটোর চলতে শুরু করে। এতে ঘুড়ির গায়ে লাইট জ্বলে। এবং বেশ বড় সাইজের হওয়াতে তাতে একটা শব্দ হয়।
পরশু সন্ধ্যার পর আকাশে এই ঘুড়ি ওড়ায় নজরুল। রাতের অন্ধকারে আকাশে ঘুড়ির লাইট জ্বলতে শুরু করে। সঙ্গে শব্দ। গ্রামের মাঠে দাঁড়িয়ে নিজের ঘুড়ি দেখে নিজেই আত্মহারা সে।
হটাত করে আকাশে আলো এবং শব্দ শুনে চমকে যান বিএসএফ কর্মীরা। পুলিশের নজরে বিষয়টি আসে। জানানো হয় প্রশাসনকে। সবাই ভাবে কেউ ড্রোন ওড়াচ্ছে সীমান্ত এলাকায়। সাবই এলার্ট হয়ে পড়েন। পুলিশ এবং প্রশাসনের লোকজন এলাকায় নামেন খোঁজ করতে। সবশেষে রাত দশটা নাগাদ জানতে পারেন নজরুলের কথা। ছুটে যান তার বাড়ির কাছে সেই মাঠে। নজরুল তখনো সেখানেই। নামানো হয় ঘুড়ি। সবাই নেড়েচেড়ে দেখেন। বিশ্বাস করেন বিষয়টি।
নজরুল অবশ্য মাফ চেয়েছে সবার কাছে।
অবশ্য নজরুল এবং তার বাবাকে বিএসএফ বিওপিতে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।