নুরুন্নবী ভুইয়া, আখাউড়া
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ট্রানজিট পণ্য নিতে শুরু করছে ভারত। বুধবার বিকাল সাড়ে চারটায় প্রথম চালানের ১০৩ মেট্রিক টন রড ও ডাল নিয়ে চার টেইলর আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছেছে। আজ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রথম চালানটি গ্রহন করবেন ।
চট্টগ্রাম নৌ বন্দর ও বাংলাদেশের মহাসড়ক ব্যবহার করে প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলক ট্রানজিট প্রক্রিয়ায় ভারতের কলকাতা থেকে এই পন্য যাচ্ছে ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্যে। কুমিল্লা কাষ্টমসের ডেপুটি কমিশনার কাজী ইরাজ ইসতিয়াক বলেছেন।
কস্ট এন্ড ফ্রেইট এজেন্ট আক্তার হোসেন বলেছেন, ৫৩.২৫ মেট্রিক টন রড ও ৪৯.৮৩ মেট্রিক ডাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সড়ক পথে চারটি টেইলর আখাউড়া স্থলবন্দরে এসেছে। ডাল নেবে আসামের প্রতিষ্ঠান ইটিসি অ্যাগ্রো প্রসেসিং ও রড নেবে আগরতলার এস এম কর্পোরেশন লিমিটেড। বাংলাদেশের ম্যাংগু লাইন নামে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভারত খেকে এই পণ্য পাঠিয়েছে ডার্সেল নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশের ম্যাংগু লাইনের সিনিয়র ম্যানেজার সোহেল খান বলেছেন, গত ১৪ জুলাই কলকাতা থেকে ‘সেজুতি’ জাহাজ মাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের দিকে রওয়ানা দেয়, গতকাল মঙ্গলবারে চট্টগ্রামে নোঙ্গর করে। রাত তিনটায় আখাউড়া রওয়ানা দেয় মালামাল।
কুমিল্লা কাষ্টমসের ডেপুটি কমিশনার কাজী ইরাজ ইসতিয়াক বলেছেন, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম নৌবন্দর ও মহাসড়ক ব্যবহার করে প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলক ভাবে ভারতে পণ্য পরিবহণ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো উন্নত হবে এই পণ্য পরিবহণের মাধ্যমে।
ট্রানজিট পন্য থেকে শুল্ক আদায় হয়নি, তবে ডকুমেন্ট প্রসেসিং, ট্রান্সশিপমেন্ট, সিকিউরিটি, অ্যাসকর্ট, বিবিধ প্রশাসনিক চার্জ মিলিয়ে এই পন্য থেকে ৪২ হাজার টাকা মাসুল আদায় হয়েছে।
২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্যা ইউজ অফ চট্টগ্রাম এন্ড মংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু এন্ড ফ্রম ইন্ডিয়া চুক্তির আওতায় আর্টিক্যাল টু অনুযায়ী ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী এসব পণ্য বাংলাদেশের ওপর দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ভারত। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তার আগে প্রথমবারের মত ত্রিপুরায় বিশাল কার্গো, একটি বিদুৎ উৎপাদক যন্ত্র আশুগঞ্জ নদী বন্দর হয়ে এসেছিল, তা প্রায় বছর দশেক আগে। পালটানার ওটিপিসি’র প্ল্যান্টে সেটি বসেছে। এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ ত্রিপুরা, উত্তরপূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যই শুধু নিচ্ছে না, বাংলাদেশেও আসছে।
আখাউড়া দিয়ে ত্রিপুরায় ভারতের অন্য জায়গা থেকে চাল, ইত্যাদিও গেছে।
বাংলাদেশ এবং ভারত’র মধ্যে আভ্যন্তরীন জলপথ ব্যবহার করার প্রটোকল দীর্ঘদিন ধঢ়েই আছে, প্রথমবারের মত তা সই হয়েছিল ১৯৭২ সালে।
ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ২০১১ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন, উত্তরপূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও ছিলেন সাথে, ছিলেন ত্রিপুরার তখনকার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তখন দুই পক্ষই কনেন্টেনারে করে কার্গো রেল ও জল পথে চলাচলে সম্মত হয়েছিল।
( দ্য প্লুরাল কলাম ডেস্ক’র ইনপুটসহ)