আগরতলায় ভগৎ সিং যুব আবাসের কোভিড কেয়ার সেন্টারে কাজ করতে গিয়ে বাধা পেয়েছেন, পশ্চিম জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সঙ্গীতা চক্রবর্তী এই অভিযোগ করেছেন পশ্চিম জেলা শাসকের কাছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি রেখেছেন তিনি।
একজনের বিরুদ্ধে তিনি নির্দিষ্টভাবে বলেছেন, হলুদ জামা গায়ে একজন তার ওপর জলকুলি করে ফেলেছেন। তাকে শনাক্ত করতে পারবেন। তাছাড়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজও দেখা যেতে পারে, লিখেছেন ডাঃ সঙ্গীতা। থু থু দেয়ার অভিযোগও আছে। ঘটনা ২৫ জুলাই সন্ধ্যা বেলায়। সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ নিন্দা করেছেন, উপযুক্ত ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।
বিভিন্ন কোভিড কেয়ার সেন্টার থেকে রোগীরাও নানা অভিযোগ তুলছেন। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে এমন হয়েছে। গতকাল খোয়াই জেলার একটি গ্রামের মানুষ বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসুস্থ মানুষ খোঁজ করার সমীক্ষা করতে দেননি, রাস্তাও অবরোধ করেছেন। সাইকিয়াট্রির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডাঃ শান্তনু ঘোষ মনস্তাত্ত্বিক কারণ কী হতে পারে সমীক্ষক দলকে বাধা দেয়ার, তার বিশ্লেষণ করেছেন দ্য প্লুরাল কলাম-এ গতকালই ।
পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার আধিকারিক ডাঃ সঙ্গীতা চক্রবর্তী ‘আমাদেরই ছাত্রী ছিলেন’ বলেছেন ডাঃ ঘোষ, তিনি ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে পড়ান।
ডাঃ চক্রবর্তী ২৬ জুলাই সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেছিলেন, যিনি জলকুলি ফেলেছেন, তিনি শিক্ষিত মানুষ, ইংরাজি জানেন।
ডাঃ ঘোষ’র কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, শিক্ষিত মানুষ এমন আচরণ কেন করেন। তিনি সেটাকে ‘ইমপালসিভ অ্যাক্ট’ বলেছেন। কিন্তু বলেছেন, কারণ যাই হোক কোনওভাবেই এটাকে জাস্টিফাই করা যায় না। ” আমি নিউজে বিষয়টি পড়েছি, ফেসবুকে কিছু লেখা দেখেছি, তার থেকে বিষয়টা বুঝতে পারলাম।আপাতদৃষ্টিতে যেটা আমার মনে হচ্ছে, সেটা বলতে পারি, এটা ইমপালসিভ অ্যাক্ট।তারমানে হঠাৎ করে মাথায় এল, এই কাজটা করে ফেললাম। মানে, আমাদের সিস্টেমের প্রতি, এই পেসেন্টাকে কোভিড কেয়ার সেন্টারে পাঠানো হচ্ছে, হয়ত সে চাইছিলো না, দূর থেকে তো আমি এতটা বলতে পারব না, স্পেকুলেট করছি, যেটাএ প্রতি ও এগ্রেসন দেখিয়েছে, থু থু ফেলে। দেখুন, শিক্ষিত লোক… এই পৃথিবীটাকে ধরে রেখেছেন এখন স্বাস্থ্য কর্মীরা, ডাক্তার-নার্স, মানে স্বাস্থ কর্মীরা, কিন্তু মানুষ কতটা কৃতজ্ঞতাহীন হিসেবে এই সমস্ত কান্ড করতে পারে। তাহলে আমাকে চিন্তা করতে হবে, কেন এই কাজটা করল, তাহলে এটা বুঝতে হবে, এটা তার ইমপালসিভ অ্যাক্ট, কোনও বিবেচনা ছাড়া হঠাৎ মাথায় এল করে ফেলল। আর এটা কীসের বহিঃপ্রকাশ ? মানে সিস্টেমের এগেনস্টে তার কোনও রকম এগ্রেসন দেখানোর জন্য সে এটা করেছে। আমি মনে করি, এটা মানবতার হন্তাকারক এবং তার যোগ্য শাস্তি হওয়া উচিৎ।” এবং “যারা যুদ্ধে প্রথমসারির কান্ডারি, তাদের বিরুদ্ধেই এসব কান্ড করছে, জানি না, সমাজের মানবিক দিকটার দিকে যদি চিন্তা করি, কী অবমাননা হয়েছে, সেটা বলা বাহুল্য। ফেসবুকে এখন নানান কিছু লেখা হয়ে থাকে, সেসবও কারণ হতে পারে, এগজাক্টলি কী হয়েছে, যারা সেখানে ছিলেন, তারাই বলতে পারবেন। তবে কারণ যাইহোক, যেটাই যা হোক, এটাকে জাস্টিফাই করা যায় না, ডাকক্তারের সাথে এমন হবে, যে বাঁচাতে গেছে, তার ওপর, গায়ে থু থু ফেলবে?” বলেছেন ডাঃ ঘোষ।
দ্য প্লুরাল কলামকে ডাঃ সঙ্গীতা চক্রবর্তী বলেছেন, ” তখন খুব অসহায় মনে হচ্ছিল। কিন্তু আমি বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করে যাব।”