ত্রিপুরার এক নাবালিকা বিক্রি হয়ে গিয়েছিলেন রাজস্থানে, অভিযোগ । তিনি সেই বাড়ি থেকে একদিন পালিয়ে যান। যে তাকে কিনে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ, তিনি থানায় জানান, তার স্ত্রী নিখোঁজ। তার দাবি মেয়েটিকে তিনি বিয়ে করেছেন। মেয়েটি তার সাথে যেতে অস্বীকার করায় তাকে একটি হোমে রাখা হয়। সেখানে তার কথা শোনার পর, বিষয়টি আবার তদন্ত করার নির্দেশ দেন রাজস্থানের ঝুনঝুনুর এসডিএম। জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের কাছে বিষয়টি পৌঁছায়। ত্রিপুরা পুলিশকে কমিশন মেয়েটির পরিচয় নিশ্চিত করতে বলে, এবং ত্রিপুরা পুলিশ তা করে দেয়।
খবরটি কাগজে প্রকাশিত হয়। ত্রিপুরা হাইকোর্ট খবরটি পড়ে একটি স্বপ্রণোদিত জনস্বার্থ আবেদন নেয়।
১৭ জুন বিষয়টি আদালত হাতে নেয়। রাজ্য সরকার, জাতীয় ও রাজ্য স্তরের শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন, আইন পরিষেবা কতৃপক্ষ, প্রমুখকে নোটিশ দিয়েছিল আদালত। মেয়েটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে আদালত উদ্যোগ নেয়। ১৯ জুন বিষয়টি আবার আদালতের সামনে আসে। তখন জানা যায় মেয়েটি অসুস্থ।
৬ জুলাই বিষয়টি আদালতে আবার উঠেছিল। আদালত বলেছে, নাবালিকাটিকে ত্রিপুরায় ফিরিয়ে আনতে হবে। দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতিতে মেয়েটি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। কয়েকমাসে, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার সময়, নাবালিকাটি গর্ভবতী হয়ে পড়েছিলেন, এবং গর্ভপাতও করা হয়েছে। নাবালিকা সংক্র মণের শিকার হয়েছিলেন, এখন তিনি একেবারে সুস্থ।
রাজ্য সরকার, ত্রিপুরার শিশু অধিকার রক্ষা কতৃপক্ষ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে ত্রিপুরায় ফিরিয়ে এনে পরিবারের কাছে দেয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছে। এক পর্যায়ে সন্দেহ দেখা গিয়েছিল, আর্থিক অবস্থার কারণে মেয়েটিকে ফিরিয়ে নিতে নেবেন কিনা। যাইহোক, রাজ্য সরকার শেষ যে হলফনামা দিয়েছে, সেখানে স্পষ্ট করা হয়েছে, মা মেয়েকে ফিরে পেতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তাতে মেয়েটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে বড় বাধা দূর হয়েছে। আদালতে অনুরোধে জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন মেয়েটির কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং মেয়েটি যেন ত্রিপুরায় ফিরে আসে, সেই চেষ্টা করছে।
আদালত রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করেছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেয়েটিকে সুখকরভাবে ফিরিয়ে আনতে এবং পরিবারের সাথে মিলিত করতে সব রকমের ব্যবস্থা যেন নেয়া হয়। ত্রিপুরার শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে সাহায্য করবে। জাতীয় স্তরের এই কমিশন এই ব্যাপারে আশ্বস্থ করেছে আদালতকে। আদালত বলেছে যে কোনও সন্দেহ নেই জাতীয় কমিশন এই ব্যবস্থা করবে।