আগরতলার এয়ার পোর্টের কাছেই উষাবাজার। সেখানকার ভারতরত্ন বেশ প্রভাবশালী ক্লাব। তার সম্পাদকের বাড়িতে পিস্তল উঁচিয়ে টাকা ছিনতাই করা হয়েছে গতরাতে বলে অভিযোগ। পুলিশে অভিযোগ করেছেন প্রদ্যুত ধর চৌধুরী। তিনিই সম্পাদক।
এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ এক দফা ঘুরে এসেছে।
পিস্তলের গুলিও নাকি পাওয়া গেছে।
পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার সদর এবং মোহনপুর মহকুমা মিলিয়ে-মিশিয়ে উষাবাজার এলাকা।
প্রদ্যুত ধরের স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, একটি বিয়েতে যাবেন, তাই প্রদ্যুত তৈরি হচ্ছিলেন, এমন সময় তাদের বাড়িত আসেন পাঁচ/ছয় জন যুবক। মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পাঁচ লাখ দাবি করেন তারা, ঘরে থাকা পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে যান।
সম্পাদকের বাড়িতে লুটপাটের কথা শুনে অনেকেই সেখানে যান। ভারতরত্ন ক্লাবের মত বড় এবং প্রভাবশালী ক্লাবের সম্পাদকের বাড়িতে এই রকম ঘটনা শুনে আশ্চর্যই হয়েছেন অনেকে, আগে সম্পাদকের বাড়িতে এরকম ঘটনার কথা আগে কেউ শুনেছেন বলে মনে করতে পারেননি।
প্রদ্যুত ধর চৌধুরী শাসক বিজেপি’র, তার কথাতেই। তিনিই অভিযোগে রাজনীতিকে টেনে এনেছেন।
ক্লাবের সম্পাদক হয়েছেন বলে একটি গ্রুপ মেনে নিতে পারছেন না, তারা ক্লাবের সুনাম নষ্ট করতে চাইছেন, হামলার কারণ হিসেবে তার বক্তব্য একবার, আবার তিনিই পরক্ষণে সেটাতে রাজনীতি টেনে এনেছেন। “তারা সিপিএমের মাফিয়া-গুণ্ডা, সন্ত্রাসী তারা , আমাদের পার্টিকে ক্ষতি করার জন্য তারা তৈরি থাকে, এবং তারা সন্ত্রাসী,” বলেছেন তিনি।
হামলাকারীরা তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে, কয়েকদিনের মধ্যে দিতে বলেছেন। ক্লাবের সম্পাদক হওয়ায় তার কাছে টাকা আসছে, এই বলেই তার কাছে টাকা দাবি করা হয়েছে, প্রদ্যুৎ ধর চোধুরী বলেছেন।
উষাবাজার এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই গণ্ডগোল চলছে। বাড়িঘরে হামলা হয়েছে। লেনদেন, বখরা, এলাকা দখলে রাখার মহড়া, এসব নিয়েই সেসব দৌড়ঝাঁপ হয়েছে বলে মনে করেন কেউ কেউ। পুলিশের একটি সূত্রও এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিরোধী দলের সমর্থকের বাড়িতেও হামলা হয়েছে। অমিত ঘোষ নামে এক সিপিআই(এম) স্থানীয় নেতার বাড়িতে ভাঙচুর হয়েছে, সেই বাড়িতে থাকা একটি গাড়িও ভাঙচুর হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে সিসি ক্যামেরার ফুটেজও দেখা গেছে সেই ভাঙচুরের। বৃদ্ধা মহিলাকে ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকছেন লোকজন, এই রকম ভিডিও আছে। ( সেই ভিডিও সিপিআই(এম)’র ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশ হয়েছে, ভিডিও’র দায়িত্ব দ্য প্লুরাল কলাম নিচ্ছে না।)
সিপিআই(এম) পশ্চিম জেলা সম্পাদক পবিত্র কর বলেছেন, “ মরা গাঙে মাছ ভেসে উঠার মত অবস্থা ! নিজেদের ভিতরের রেষারেষি বেরিয়ে পড়েছে। কারও ভাগে হয়ত কম পড়েছে , সে নিয়েই গণ্ডগোল হবে ! সিপিআই(এম)’র কেউ জড়িত থাকার কোনও প্রশ্নই উঠে না। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ভারতরত্ন ক্লাব অগণতান্ত্রিকভাবে দখল করেছে বিজেপি’র লোকজন। আমাদের কর্মী-সমর্থক যারা ক্লাবের সাথে জড়িত ছিলেন, তারা ক্লাবে যেতেই পারেন না। তাদের তাড়ানো হয়েছে। অমিত ঘোষের বাড়িতে হামলা হয়েছে, তিনি পুলিশে অভিযোগ করেছেন। লোক দেখানো কাউকে ধরে নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে সাথে সাথেই। সেসব ঢাকতেই সিপিআই(এম)’র নাম জড়ানো হচ্ছে।“
ভারতরত্ন ক্লাবের সম্পাদকের বাড়িতে যখন হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ, তখন নাইট কারফিউ শুরু হয়ে যাওয়ার কথা।
ঠিকেদারি কাজ নিয়ে আড়ালে-আবাডালে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, এই অভিযোগ বহুদিনের। সরকারে দল পরিবর্তনে সেসব সিন্ডিকেটেরও রঙ পরিবর্তন হয়েছে। ক্লাবের পরিচালনায়ও বদল এসেছে।
এয়ারপোর্টের এক্সপানসনের কাজ চলছে, প্রচুর টাকার কাজ হচ্ছে এখন।