প্ৰথম খবর

কৈলাশহর নগর পঞ্চায়েত’র ভাইস চেয়ারপার্সন’র সদস্যপদ বাতিল হয়ে গেল আদালতে

By thepongkor

September 22, 2020

“Democracy is a part of the basic structure of our Constitution, and rule of law; and free and fair elections are basic features of democracy, One of the postulates of free and fair elections is provision for resolution of election disputes as also adjudication of disputes relating to subsequent disqualifications by an independent authority. It is only by a fair adjudication of such disputes relating to validity of elections and subsequent disqualifications of members that true reflection of the electoral mandate and governance by rule of law essential for democracy can be ensured.”

 

ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আকিল কুরেশি’র বেঞ্চে কৈলাশহর নগর পঞ্চায়েত’র নীতিশ দে’র সদস্যপদ বাতিল হয়ে গেছে আজ।

নীতিশ দে সেই সংস্থার ভাইস চেয়ারপার্সন ।

২০১৫ সালে নীতিশ নগর পঞ্চায়েত নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে জিতেছিলেন ছয় নম্বর ওয়ার্ডে। সেসময় বিজেপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল প্রার্থী দিয়েছিল। ২০১৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনে নীতিশ দে বিজেপি’র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। যদিও হেরে যান।

 

ত্রিপুরা মিউনিসিপাল অ্যাক্ট অনুযায়ী নির্দল হয়ে নির্বাচন জিতে কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দিলে সদস্যপদ আর থাকবে না, তা বাতিল হয়ে যাবে।

 

চন্দ্রশেখর সিনহা নামে একজন বিষয়টি নিয়ে জনস্বার্থ আবেদন করেছিলেন হাইকোর্টে। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছিলেন নীতিশ দে’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে।  গত ২৫ নভেম্বর হাইকোর্ট উপযুক্ত কতৃপক্ষকে এই ব্যাপারে সিধান্ত নিতে বলে ছিল।

চন্দ্রশেখর, কৈলাশহরেরই নাগরিক।

কৈলাশহর নগর পঞ্চায়েতের চিফ এক্সিকিটিভ অফিসার বিষয়টি জানিয়ে নগর উন্নয়ন দফতর’র সচিবকে চিঠি দেন। দফতরের অতিরিক্ত সচিব, নীতিশ দে-কে নোটিশ জারি করেন  ২৪ ডিসেম্বর। তিনি নোটিশের জবাব দেন ১০ জানুয়ারি।

তিনি সেই জবাবে দাবি করেন যে ২০১৫ সালে নির্দল প্রার্থী হয়ে নগর পঞ্চায়েত ভোটে লড়ার আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাই ২০১৮ সালে বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী হয়ে দাঁড়ানো, নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে জেতার পর কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়া নয়।

 

আইন দফতরের পরামর্শ নিয়ে নগর উন্নয়ন দফতর’র অধিকর্তা ডাঃ শৈলেশ কুমার যাদব ২৯ জানুয়ারী এই ব্যাপারে চুড়ান্ত রায় দেন। সেখানে তিনি বলেন,  আইন দফতরের পরামর্শ নেয়া হয়েছে। যেহেতু নীতিশ দে নির্দল প্রার্থী হয়ে জেতার আগে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন, তাই তার সদস্যপদ খারিজ হয় না আইন অনুযায়ী।

আইন সচিব এই ব্যাপারে ২১ জানুয়ারী বলেছিলেন যে নীতিশ দে ১৪.০৭.২০১৪ তারিখে বিজেপি-তে যোগ দেয়ার চিঠি দিয়েছেন, তারপর ২০১৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হয়ে দাঁড়ানো, নগর পঞ্চায়েতে নির্দল সদস্য থাকার সময় কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়া নয়। সেটা তার দলের ভেতরকার বোঝাপড়া হতে পারে, তার জন্য অন্যকারও ক্ষোভ থাকার কথা নয়।

 

হাইকোর্টে এইসব যুক্তি টেঁকেনি।

হাইকোর্ট বলেছে, ২০১৫ সালে যখন তিনি নগর পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়েছিলেন, তখন বিজেপিও প্রার্থী দিয়েছিল। মানুষ নিশ্চয়ই তাকে নির্বাচিত করার সময় এই ভেবেছিলেন যে নীতিশ দে কোনও রাজনৈতিক দলের নন। মানুষের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়া সদস্যপদ খারিজ আটকাতে পারে না। এই সমন্ধে গৌহাটি হাইকোর্টের একটি রায়েরও উল্লেখ করা হয়েছে। তাছাড়াও বলা হয়েছে, যদি তর্কের খাতিরে  ধরেও নেয়া যায়, সত্যিই  নগর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই তিনি বিজেপি-তে গিয়েছিলেন, তবেও নির্দল হয়ে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়ে তিনি নিজেই তার বিজেপি পরিচয় ছেড়ে দিয়েছিলেন বলে সিদ্ধান্তে আসা যায়।

 

নগর উন্নয়ন দফতরের অধিকর্তা যে সিধান্ত নিয়েছেন যে তার সদস্য পদ খারিজ হবে না, সেই সিদ্ধান্তে যুক্তিসঙ্গতভাবে আসা সম্ভব না।

আধা বিচার ( কুয়্যাসি জুডিসিয়াল) কতৃপক্ষের ওপর যে আইনি ক্ষমতা দেয়া আছে, তার প্রয়োগের ক্ষেত্রে  একটা  বিষয়টা জরুরী, আইনি ব্যবস্থা অনুযায়ী স্বাধীনভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং সুষ্ঠভাবে এই ক্ষমতা নিজেকেই প্রয়োগ করতে হবে। এই মামলায় দেখা যাচ্ছে যে চার নম্বর রেসপন্ডেন্ট তার ক্ষমতা আইন দফতরকে দিয়ে ফেলেছেন, এবং নিজেকে অস্তীত্বহীন করে ফেলেছেন, আর  কেবলমাত্র  আইন দফতরের পরামর্শের ওপর ভিত্তি করেই নির্দেশ দিয়েছেন, যা কোনও কারণ না দেখিয়ে করতে পারেন না, বলেছে আদালত।

চার নম্বর রেসপন্ডেন্ট  মানে নগর উন্নয়ন দফতর।

 

(প্রথমের ইংরাজি কথাগুলি ত্রিপুরা হাইকোর্ট এই মামলার রায়ের এক জায়গায় উল্লেখ করেছে, সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় থেকে।)