প্ৰথম খবর

ত্রিপুরায় নতুন কোভিড আক্রান্ত ৬৯১ জন শনাক্ত । ‘থাউকার উপ্রে’ চলছে চিকিৎসাঃ সুদীপ রায় বর্মন ।

By thepongkor

September 05, 2020

ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় কোভিড আক্রান্ত এক মহিলা মারা যাওয়ার ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে গেলেও দেহ সৎকার করা যাচ্ছে না। ঘরেই দেহ রয়ে গেছে। অন্তত  রাত এগারোটা পর্যন্ত দেহ নেয়ার জন্য কোনও সরকারী দল গেছে বলে জানা যায়নি।

 

ত্রিপুরায় শুক্রবারে নতুন করে ৬৯১ কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন, এই নিয়ে চারদিন ধরে ত্রিপুরায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ছ’শো জন করে নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হলেন। সাতজনের মৃত্যু হয়েছে একদিনে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা চৌদ্দ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, ১৪,৫০৭ জন।  উত্তরপূর্বাঞ্চলে ত্রিপুরাই মৃত্যুহারে সবার আগে । কাছাকাছিও অন্য কেউ নেই।

পুলিশের বড়কর্তা কোভিড আক্রান্ত বলে খবর।  এখন পর্যন্ত শাসক জোটের সাত বিধায়ক কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। বিরোধী পক্ষে এখনও কেউ নেই।

পঞ্চাশ জনের মত ডাক্তার আক্রান্ত হয়েছেন, একটি সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন এটিজিডিএ’র ডাঃ রাজেশ চৌধুরি।  অন্য স্বাস্থ্যকর্মীও অনেক।

 

এপ্রিলের শুরুতে এই রাজ্যে দু’জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলেন, মৃত্যুশূন্য ছিল বহুদিন। সে সময় অনেকটা সময় পেলেও, রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো যতটা প্রয়োজন , ততটা প্রস্তুত করা হয়নি, এখন কোভিড হাসপাতালে রোগীর জায়গার অভাব, আইসিইউ-তে বেডের অভাব।

 

সেই দুই রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে গেলে, ত্রিপুরাকে কোভিড-মুক্ত বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

 

সরকারী ডাক্তারদের সংগঠন এটিজিডিএ লিখিতভাবেই সরকারকে দিন তিনেক আগে জানিয়েছে, আইসিইউ বেডের অভাবের কথা, রোগীরা বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে। আরও বিষয়ও তারা জানিয়েছেন। তারা এও বলেছিলেন, রোগীর খবর পরিবারের লোকজন পাচ্ছেন না । সক্রিয় রোগীর অনুপাত ত্রিপুরাতে ৩৯.৬৩ শতাংশ, ছাড়া পাওয়ার হার ৫৯.৪৪ শতাংশ, আগে শুধু ছত্তিশগড়, চণ্ডিগড় আর মেঘালয়। গুজরাতে মৃত্যু-হার সবচেয়ে বেশি, ৩.০৬ শতাংশ, সেখানেও ছাড়া পাওয়ার হার ৮০.৮৮ শতাংশ।

 

জিবিপি হাসপাতালের হেল্পডেস্ক’র নম্বর ঘোষণা করা হয়েছিল গতমাসের প্রথম দিকেই, এবং কোভিড কেয়ার সেন্টারগুলিতেও হেল্পডেস্ক খোলার ঘোষণা ছিল। জিবিপি হাসপাতালের হেল্প ডেস্ক নম্বর, ৮৭৯৪৫৮৭২৩৬, সেখানে ফোন করে সাড়া না পাওয়ার অভিযোগ আছে। দ্য প্লুরাল কলাম একাধিকবার ফোন করেও কাউকে পায়নি, ফোন বেজে গেছে।  ত্রিপুরার প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র জিবিপি হাসপাতাল।

 

বিজেপি বিধায়ক, এই সরকারের আমলেই বছর খানেকের মত স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকা সুদীপ রায় বর্মন বলেছেন, ত্রিপুরায় এখন কোভিড চিকিৎসা ‘থাউকার উপ্রে’ চলছে। (‘থাউকা’ মানে ভিত্তিহীন, আন্দাজে চলা, এইরকম অর্থ । ) এক্স-রে মেশিন নষ্ট, সিটিস্ক্যান মেশিন খারাপ, এন্টিভাইরাল ওষুধের বদলে এন্টিব্যাক্টেরিয়াল দিয়ে চিকিৎসা চলছে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সাথে চেষ্টা করেও কথা বলতে পারেননি বলে উল্লেখ করেছেন।

আইনমন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেছেন, নতুন ওষুধ আনা হয়েছে, তার ফলও পাওয়া গেছে।

মুখ্যমন্ত্রী জিবিপি হাসপাতালে দিন তিনেক আগে গিয়ে মিটিঙ করেছেন, সেখানে জরুরী ওষুধ আসতে দেরি হচ্ছে বলে জিজ্ঞাসা করেছিলেন।

তিনি বলেছেন,  ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শুধু আগরতলা পুর নিগম এলাকায় সাড়ে ছ’শো মানুষ মারা যেতে পারেন কোভিডে , সেরকম সম্ভাবনা আছে, যদি লাগাম টানা না যায় সংক্রমণে। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে কাতর অনুরোধও রেখেছেন।