তরুণ দুই চিকিৎসক ডাঃ শর্মিষ্ঠা দাস এবং ডাঃ তনুজ সরকার দ্য প্লুরাল কলাম-র নয় প্রশ্নে জবাব দিয়েছেন মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে।
ডাঃ সরকার আর ডাঃ দাস সাহিত্য চর্চায় মজেছেন। দুইজন একসাথে অনুবাদ করছেন অন্য ভাষার কবিতা, বাংলায়।
১.একজন মানুষে কোন্ কোন্ লক্ষণ দেখা গেলে, মানসিকভাবে অসুস্থ বলা যায়?
হঠাৎ করেই ক্রমশ একলা থাকতে শুরু করা,
অপর্যাপ্ত ঘুম(অলটার্ড স্লিপ সাইকেল) ,
ভবিষ্যতের ব্যাপারে প্রতিনিয়ত অনিশ্চয়তায় ভোগা ,
সামান্য বিষয়েই অতিরিক্ত উত্তেজিত কিংবা নিষ্প্রভ হয়ে যাওয়া ,
(মুড-ইকুইলিব্রিয়াম নষ্ট হওয়া) ইত্যাদি।
২.ওষুধ ছাড়া মানসিক সমস্যা কমানোর উপায় কী কী ?
নিয়মিত কাউন্সেলারের সঙ্গে কথা বলা।
নেশাদ্রব্য সম্বন্ধিত সমস্যায়(উইদড্রল),সেই বিশেষ নেশাদ্রব্যটি ব্যবহার করা থেকে নিজেকে বিরত রাখা।
শখ তৈরি করা, বই পড়া, গান শোনা অথবা সিনেমা দেখা,ইত্যাদি।
সামাজিক মেলামেশা বাড়ানো।
একটি নির্দিষ্ট টাইমটেবল তৈরি করা এবং
সেই অনুসারে একেকটি দিনকে সাজানো।
৩.কাউন্সেলিং মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে কতটা উপকারী ?
অনেকটাই,এমনকী সাইকোএনালিসিসের তুঙ্গ যুগে,
কাউন্সেলিংকেই মেন স্টে অফ ট্রিটমেন্ট বলা হত।
৪.লকডাউনের ফলে এখন বহু শিশু এবং টিন-এজার ডিপ্রেসনে পড়ছে, মুক্তির উপায় কী?
তাদের নিয়মিত বিভিন্ন ভাবে উৎসাহিত করা।
একটা উন্মুক্ত পরিবেশ দেয়া।
৫. আইকিউ কি ওষুধে বাড়ানো সম্ভব?
সম্ভব নয়।ক্রিস্টালাইজড ও ফ্লুইড ইনটেলিজেন্স বাড়ানোর যে যে পদ্ধতির ব্যাপারে চর্চা করা হচ্ছে,,তাদের কোনোটাই ওষুধ-নির্ভর নয়।
বুদ্ধি বাড়ে, না বিকাশ হয় ?
বাড়াবাড়ির ব্যাপার নেই। বুদ্ধির বিকাশ হয়, সেটা পরিবেশ, পরিস্থিতি, পুষ্টি, শিক্ষা, ইত্যাদি নানা কিছুর সাথে জড়িয়ে থাকে।
৬. মানসিক অসুস্থতা আর বুদ্ধিগত অক্ষমতা— পার্থক্য কী?
মানসিক অসুস্থতায় অনেক ক্ষেত্রেই কগনিটিভ ডেফিসিট, বা বলা যায়, কারও বোঝাপড়ার ক্ষমতায় সমস্যা দেখা দেয়।
অন্যদিকে যেকোনো কগনিটিভ ইমপেয়ারমেন্টই( স্মৃতিভ্রম,যুক্তিবিন্যাসের অভাব,মনোযাগ ব্যাহত হওয়া, ইত্যাদি)মানসিক অসুস্থতা নয়।
৭. মানসিক অসুস্থ ব্যাক্তির পক্ষে কি স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সম্ভব?
অবশ্যই।এক্ষেত্রে রোগীর পরিবার ও বৃহত্তরভাবে সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
৮. হঠাৎ করে মানসিক রোগের ওষুধ বন্ধ করা কতটা যুক্তিযুক্ত?
চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ না করে একদমই বন্ধ করা উচিত নয়।
৯. মানসিক রোগ সম্পর্কে ষ্টিগমা কীভাবে কাটানো সম্ভব?
একমাত্র উপায়,রোগীর পরিবার ও বৃহত্তর সমাজকে মানসিক রোগের ব্যাপারে শিক্ষিত ও সচেতন করে তোলা।