চন্দনা বসু পড়তেন আগরতলার উইমেন্স কলেজে। থাকতেন এয়ারপোর্টের কোয়ার্টারে। বাবা বিমান বন্দরের ফায়ার সার্ভিসে তখন কাজ করেন।
সবিতা রায়ের বাবাও সেখানেই কাজ করেন, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে।
সবিতা আর চন্দনা’র বন্ধুত্ব জমে গেল। একই স্কুলে পড়েছেন, একই কলেজে।
১৯৮১ সাল। বাবারা বদলি হলেন। হারিয়ে গেলেন দুই কলেজ পড়ুয়া।
চন্দনা বসু থিতু হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুরে। সবিতা রায় ত্রিপুরার উদয়পুরে।
চন্দনা ব্যারাকপুরে, সবিতা উদয়পুরে, এইটুকু গোপনে নয়, শুধু একজন আরেকজনের ঠিকানা জানেন না। চল্লিশ বছর পর পরশুদিন জানাজানি হল।
হ্যাম রেডিও ক্লাব এই কাজটি করেছে।
হ্যাম রেডিও, শখের রেডিও অপারেটরদের ক্লাব। টাকা নিয়ে কাজ করা নয়। নামে শখের, কাজ শুধুই খেয়ালখুশিতে নয়। সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছ এই নেটওয়ার্ক। এখন মোবাইল টেলিফোনি, ইত্যাদি হাতের মুঠোয়, এক সময় হ্যাম রেডিও ক্লাবই জরুরী সময়ে পৃথিবী এই মাথাকে ওই মাথার সাথে জুড়ে দেয়ার কাজটি করত। এখনও করে। হ্যাম রেডিও মানেই বন্ধুত্ব। দেশ-সমাজের বেড়াজাল পেরিয়ে বিশ্ব ভাতৃত্ব। একশ বছরের বেশি সময় ধরে এই ক্লাব চলছে।
‘হ্যাম’ শব্দটি কাজ-না-জানা টেলিগ্রাফ অপারেটরদের ব্যাঙ্গ করা হত। সময় পেরিয়ে এখন এই শব্দ বন্ধুত্বের সমার্থক। আগের মানে মুছে গেছে। প্রায় একশ বছর ধরে চলছে দেশে দেশে হ্যাম রেডিও।
আগরতলা হ্যাম রেডিও ক্লাবের বিশ্বজিৎ সাহা বললেন, ” চন্দনাদি আমাদের ফোন নম্বর পেয়ে একদিন কল দিলেন। বন্ধুর জন্য তার মন পড়ে আছে এত বছর ধরে। সবিতাদির বাবার নাম আর সেই যে কোয়ার্টারে থাকতেন, তার নম্বর শুধু জানাতে পেরেছিলেন।তখন আরও যারা সেসময়ে সেখানে থাকতেন, তাদের খুঁজে খুঁজে বের করা হল। সবিতা রায় উদয়পুরে থাকেন, সেটা জানতে পারলাম।”
” তারপর উদয়পুরের হ্যাম বন্দু পার্থসারথি সরকার বাকী কাজটা করেন।”
৬ নভেম্বর চন্দনা-সবিতা কথা বললেন ভিডিও কলে!
COMMENTS