বিজেপি ত্রিপুরা প্রদেশ দাবি করেছে, ত্রিপুরার গোমতী জেলা সদর উদয়পুরের রাজারবাগ মোটরস্ট্যাণ্ডে গাড়ি থেকে প্রতিবাদী পত্রিকা’র হাজার হাজার কপি নামিয়ে যে নষ্ট করে দেয়া হয়েছে, তার সাথে বিজেপি’র কেউ জড়িত না। বিজেপি তার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছে। এমনকী যে গাড়িতে পত্রিকা পাঠানো হয়েছিল, সেই গাড়ির কর্মীদেরও কথা টেনে এনে বিজেপি বলেছে, তারা বিজেপি’র মতাদর্শের লোক না।
বিজেপি’র দাবি আইন-শৃঙ্খলা এখন আয়ত্তে আছে। আগের পরিবারে ঝগড়া লাগিয়ে দেয়া হত।
উপজাতি জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজেপি একাই লড়তে তৈরি বলেও তারা জানিয়েছেন।
বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার আসার পর বার বার সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিকরা আক্রান্ত হয়েছেন। সাংবাদিকরা পথে নেমে আন্দোলন করেছেন। কমলপুর প্রেসক্লাব আজ মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান বয়কট করেছে।
ডেইলি দেশের কথা নামের একটি পত্রিকার কপি পোড়ানো হয়েছে, হকার, সাংবাদিক আক্রান্ত হয়েছেন। পুলিশে নালিশ জানালেও কিছু হয়নি। পত্রিকা কতৃপক্ষ প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’র কাছে গেছেন।
স্যন্দন পত্রিকার সাংবাদিক পরাশর বিশ্বাস যেদিন কোরনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন, সেদিনই রক্তাক্ত হয়েছেন।
গত দুইমাসে পর পর সাংবাদিক আক্রমণের ঘটানা হয়েছে।
কুমারঘাটে কোভিডের জন্য কোয়ারান্টিনে থাকা বাড়িতেও আক্রমণ হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি হুমকি ছিল আক্রমণের।
পরাশরকে আক্রমণের পর সামাজিক মাধ্যমে তাকে সমর্থন করে মন্তব্য আছে।
সাংবাদিকদের অভিযোগ পুলিশের ভূমিকা নেতিবাচক।
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একটি সরকারি অনুষ্ঠানে সাংবাদমাধ্যমকে ‘মাফ’ না করার কথা বলেছেন।
স্যন্দন সম্পাদক সুবল কুমার দে’র নেতৃত্বে অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস সংগঠন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়েছে। ফোরাম ফর ডেভেলপমেন্ট এণ্ড প্রোটেকসন অব মিডিয়া কম্যুনিটি ( এফডিপিএমসি)’র প্রণব সরকার এই আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন রেখেছেন।
আজ অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস এবং এফডিপিএমসি, দুই দলের সাংবাদিকরাই পুলিশ সদর দফতরে গিয়ে প্রতিবাদী কলম পত্রিকা আক্রমণের জন্য বিচারের দাবি জানিয়ে এসেছেন।
শাসক বিজেপি এতদিন এসব নিয়ে কিছু না বললেও রিপাব্লিক টিভি’র অর্ণব গোস্বামীকে মুম্বই পুলিশ গ্রেফতারের পর, মিছিল করেছে। এই গ্রেফতারকে সংবাদ মাধ্যমের উপর আক্রমণ, স্বৈরাচারি, এবং তাকে জরুরী অবস্থার সাথে তুলনা করেছে।
বিজেপি প্রতিবাদী কলম-এ কৃষি দফতর নিয়ে খবর বের হওয়ার পর,উদয়পুরে মিছিল করেছে।
সাংবাদিকরা প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন যে অর্ণব গোস্বামীকে নিয়ে মিছিল হয়, আর এখানে কাগজের বিরুদ্ধেই মিছিল ! নেটিজেনরাও এরকম প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।
প্রতিবাদী কলম পত্রিকা আক্রমণের বিষয়ে এখনও কোনও গ্রেফতার আছে বলে জানা যায়নি।
এই কাগজের সম্পাদক নির্দিষ্টভাবে নাম দিয়েই অভিযোগ দিয়েছেন পুলিশকে। তিনি বলেছেন, মূল অভিযুক্ত উদয়পুরের মোটর সিন্ডিকেট’র কোনও পদে আছেন। সিন্ডিকেটগুলি বিএমএস নিয়ন্ত্রিত।
বিজেপি’র প্রদেশ মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বিজেপি’র কেউ জড়িত নয় বলেও, দাবি করেছেন, তাদের এক ‘কার্যকর্তা’-র নাম এসেছে, তিনি খবর পেয়ে ঘটনা থামাতে গিয়েছিলেন।