ভয়ঙ্কর অস্ত্র হাতে, জুম-ঘরের মত বাঁশের ফাঁক ফাঁক বেড়ার ঘরে সারি দিয়ে বসা। টাকা চেয়ে রেসন ডিলারদের ফোনে ফোনে এই ছবি পাঠিয়েছে এনএলএফটি। বাংলাদেশের ঘাঁটি থেকে ফোনে টাকা চেয়ে হুমকি আসছে প্রতিদিন,ত্রিপুরার গন্ডাছড়া মহকুমার রৈস্যাবাড়ি এলাকায়।
সাত ডিলারের কাছে এক লক্ষ টাকা চেয়েছেন সৌমেনকান্তি ত্রিপুরা (হিরু), তার সাথে চার-পাঁচজনের একটি দল আছে বলে পুলিশের বক্তব্য। ভারতের সীমানা থেকে বাংলাদেশের চার-পাঁচ কিলোমিটার ভেতরে তাদের ঘাঁটি।
ত্রিপুরার কিছু যুবক বাংলাদেশের ঘাঁটিতে ট্রেইনিং শেষ করে রাজ্যে ঢোকার অপেক্ষায়, এনএলএফটি’র পরিমল দেব্বর্মা এই গ্রুপকে চাঙ্গা করতে চাইছেন বলে খবর। দ্য প্লুরাল কলাম কিছুদিন আগেই এই খবর করেছে। লক-ডাউনে কাজের অভাবে উত্তরপূর্বাঞ্চলের যুবকরা সন্ত্রাসবাদী দলে ঝুঁকছেন বলে খবর ছিল।
২৭ অক্টোবর প্রথম টাকা চেয়ে ফোন আসে, সেই নম্বর সৌমেনকান্তি’র, পুলিশ সূত্রের খবর। তারপর প্রতিদিনই আসছে ফোন। পুলিশের কাছে রেসন ডিলাররা সরাসরি অভিযোগ করেননি, তবে পুলিশ তাদের নিরাপত্তার দিকটি দেখছে বলে শোনা গেছে। কিছুদিন আগে খোয়াইয়ের চাম্পাহাওড়, ইত্যাদি এলাকা থেকে কয়েকজন যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছিল সন্ত্রাসবাদী দলের হয়ে চাঁদার দাবি করার জন্য। রৈস্যাবাড়ি থানা তখন নবীন ও যোজন ত্রিপুরা নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছিল। সৌমেনকান্তি’র নামও মামলায় ছিল। সৌমেন, তার দেশাইপাড়ার বাড়ি থেকে পালিয়ে যান, বাংলাদেশে ঘাঁটি গাড়েন। সমব্রাই পাড়ায় তারা আছেন বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য।
এক নিরাপত্তা আধিকারিক ( তার নাম এবং কেন্দ্রীয় অথবা রাজ্যের, সেটি উল্লেখ না করার শর্তে) বলেছেন, তাদের হাতে এসব ভারী অস্ত্র কোথা থেকে আসছে, সেটাই চিন্তার। এসব অস্ত্র নিতেও যথেষ্ট টাকার দরকার, ইতিমধ্যেই টাকার জোগান কী করে তাদের হাতে এল, সেটা খুঁজে দেখতে হবে।
ত্রিপুরায় এক সময় সন্ত্রাসবাদী কাজের জন্য গ্রাম-পাহাড়ে উন্নয়ন থমকে দাঁড়িয়েছিল। স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র নানা জায়গায় বন্ধ হয়ে পড়েছিল। সেই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ত্রিপুরা। গ্রামে-পাহাড়ে আর্থিক সুযোগের ব্যবস্থা করে, বিশেষত রাবার চাষ করিয়ে,সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা, যুবকদের সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে সরিয়ে আনা হয়েছিল।
সামনেই উপজাতি জেলা পরিষদ নির্বাচন। এই সময়ে সন্ত্রাসবাদী দলে যুবকদের ভিড়ে যাওয়া, রাজনৈতিক সমীকরণের প্রশ্ন তৈরি করবেই।