পুলিশের হেফাজতে থাকা শিক্ষকের নামেও রাস্তায় গণ্ডগোলের মামলা নিল পুলিশ

পুলিশের হেফাজতে থাকা শিক্ষকের নামেও রাস্তায় গণ্ডগোলের মামলা নিল পুলিশ

পুলিশের হেফাজতে থাকা শিক্ষকের বিরুদ্ধেও রাস্তায় গণ্ডগোল পাকাবার, গাড়ি ভাঙচুর করার, পুলিশকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টার মামলা নিল পুলিশ।

ত্রিপুরা পুলিশ ‘১০৩২৩’ শিক্ষকদের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে অন্তত দুইটি মামলা নিয়েছে। দুই পুলিশকর্মীকে দিয়ে অভিযোগ করানো হয়েছে।

কমল দেব, ডালিয়া দাস,বিমল সাহা,অজয় দেববর্মা,দীপঙ্কর দেববর্মা,প্রশান্ত দেববর্মা,মিন্টু দেববর্মা,বিজয়কৃষ্ণ সাহা,অমূল্য দেববর্মা,পিয়ালি ধর, সোমা দেব, দেবাশিষ সরকার,অজয় দেববর্মা,ভাস্কর দেব, তাদের নাম দিয়ে মামলা নেয়া হয়েছে।

তাদের মধ্যে অন্তত তিনজন সেদিন রাস্তায় ছিলেন না। দুইজন পুলিশের হেফাজতেই ছিলেন, একজন রাজ্যের বাইরে কাজ নিয়ে চলে গেছেন।

২৭ জানুয়ারি পুলিশ বাহান্ন দিন ধরে চলা ‘১০৩২৩’ শিক্ষকদের আন্দোলন মঞ্চ ভেঙে দেয়, কম্বল, চালের বস্তা, এমনকী জলের ড্রাম তুলে নিয়ে যায়। কাকভোরে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, ২৭ জানুয়ারি (পঞ্চাশ দিন ধরে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকা) শিক্ষকরা হিংসাত্মক হতে পারেন। শিক্ষকরা অনুনয় করেছিলেন, সরকার তাদের সাথে কথা বলেনি। ২৭ জানুয়ারি তারা মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করবেনই বলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মাস চারেক আগে, দুই মাসের মধ্যে তাদের সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।আইন সংশোধন করেও তাদের সমস্যার সমাধানের কথা বিজেপি নেতারা শুনিয়েছিলেন। ‘১০৩২৩’ শিক্ষকদের নেতারাও দিল্লি ঘুরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সাথে কথা বলে এসে তা বলেছিলেন।

অমূল্য দেববর্মাকে পুলিশ আন্দোলন মঞ্চ ভেঙে দিয়ে তুলে নিয়ে যায়। সারাদিন পুলিশের হেফাজতেই ছিলেন। সেখান থেকে সামাজিক মাধ্যমে তিনি ‘লাইভ’ করেছেন। পুলিশ চা নিয়ে গিয়েছিল, তারা প্রত্যাখ্যান করেছেন, ‘লাইভ’ থেকে দেখা গেছে।
বিজয় কৃষ্ণ সাহাকে পুলিশ থানায় বসিয়ে রাখে সারাদিন।
ভাস্কর দেব ত্রিপুরার বাইরে কাজ নিয়ে চলে গেছেন। তার বাড়িতে বোমা মারার পর, সিসিক্যামেরায় যা পরিস্কার দেখা গেছে, যদিও কোনও পুলিশি ব্যবস্থা নেই, একবার এসেছিলেন, তখন তাকে আন্দোলন মঞ্চে এক/দুই দিন দেখা গেছে, আর পরে এক/দুই দিন।

সদরের ( আগরতলা) মহকুমা পুলিশ আধিকারিক চিরঞ্জীব চক্রবর্তী বলেছেন, দুইটি মামলা হয়েছে।
” অভিযোগ আছে, যারা পুলিশের হেফাজতে ছিলেন, তাদের নামেও মামলা হয়েছে?”
“তদন্তে দেখা যাবে।” উত্তর দিয়েছেন এসডিপিও।

পুলিশ যে মামলা সাজিয়েছে, পুলিশে হেফাজতে থাকা শিক্ষকের বিরুদ্ধে করা মামলাই তার প্রমাণ,অভিযোগ শিক্ষকদের।

সে দিনই সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ কর্তাই বলেছেন, আলাদা করে চিহ্নিত করার কিছু নেই। তখনও তিনি বলেননি, পুলিশের ওপর প্রাণঘাতী হামলা বা তার ছক হয়েছিল, যদিও সেরকমই অভিযোগে লেখা হয়েছে।
সেখানে জেলা শাসক ডাঃ শৈলেশ যাদবও ছিলেন, যিনি ১৪৪ ধারা জারি করেছিলেন, এবং পুলিশের রিপোর্টকে কারণ বলে দেগেছেন। জেলা শাসকও বলেননি তেমন মারাত্মক আক্রমণের কথা, বরঞ্চ রোগীর গাড়িকে প্রতিবাদকারীরা ছেড়ে দিয়েছেন,কোনও গাড়ি চলাচলে অসুবিধা হয়েছে, তেমন কোনও অভিযোগ নেই, বলেছিলেন তিনি।

COMMENTS