আগরতলার ভগৎ সিং যুব আবাসের কোভিড কেয়ার সেন্টারে বিজেপি বিধায়ক, যিনি ত্রিপুরায় এখনকার বিজেপি-আইপিএফটি সরকারেরই প্রাক্তন মন্ত্রীও, সুদীপ রায় বর্মন গিয়েছিলেন। রোগীদের ফল দিয়ে এসেছেন। তার সাথে বিধায়ক আশিষ সাহাও ছিলেন।
সামাজিক মাধ্যমে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা শাসকের নামে একটি চিঠি ( চিঠির সত্যতা দ্য প্লুরাল কলাম যাচাই করতে পারেনি) ভাইরাল হয়েছে। সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, সুদীপ রায় বর্মন কোভিড কেয়ার সেন্টারে ‘আনঅথরাইসডলি’ । তাকে বলা হয়েছে, আগামীকাল থেকে অরুন্ধুতি নগরের রিজিওন্যাল সার্ভে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট-এ সাতদিনের জন্য কোয়ারান্টিনে যেতে, তারপর সাতদিন হোম কোয়ারান্টাইন-এ থাকতে হবে।
সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, সেই কোভিড কেয়ার সেন্টারের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা গেছে, কোভিড পজিটিভ রোগীদের সাথে তিনি মুখোমুখি ছিলেন এক মিটারের মধ্যে।
তিনি এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন।
ত্রিপুরা স্বাস্থ্য দফতরের ৪ জুলাইয়ের একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিজার’র কথা বলা হয়েছে।স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তারদেরও কখন কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে, ইত্যাদি ইত্যাদি বলা হয়েছে।
জেলা শাসক, এপিডেমিক ডিজিসেস অ্যাক্ট ১৮৯৭, এপিডেমিক ডিজিসেস ( অ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডিন্যান্স ২০২০, এবং ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৫ অনুযায়ী সুদীপ রায় বর্মনকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে তিনি যেন ৩ আগস্ট থেকে তার নিজের ও বৃহত্তর অংশের নিরাপত্তার জন্য এ ডি নগরের আরএসটিআই কোয়ারান্টিন সেন্টারে সাত দিনের জন্য থাকেন , এবং তারপরে সাত দিন হোম কোয়ারান্টিনে।
‘দিজ অর্ডার উইল টেক ইম্মিডিয়েত এফেক্ট’ , সইয়ের আগে শেষ লাইন।
বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন’র কাছে এই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছে দ্য প্লুরাল কলাম।
” আমি সেখানে যাচ্ছি না,” স্পষ্টই বলেছেন রায় বর্মন।
সামাজিক মাধ্যমে এই চিঠি ভাইরাল, অথচ আমি এখনও রাত বারটায় এই চিঠি সরকারিভাবে পাইনি। যাকে এই চিঠি দেয়ার, সে-ই এখনও পেল না, অথচ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে গেছে।
চিঠিটি মোটেও আইনি নয়, হলে, আমি মানতাম।
আমার তো কোনও টেস্ট হয়নি, টেস্ট করাতে কোনও আপত্তি নেই, টেস্টে আমি পজিটিভ হলে তখন ডাক্তার পরামর্শ দেবেন, কী করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এরকম হয় নাকি!
আইসিএমআর গাইডলাইন দেখতে বলছি। পজিটিভ ব্যাক্তিদেরও হোম আইসোলেসন থাকার গাইডলাইন আছে, এটা কেন্দ্রীয় সরকারেরই। মাইল্ড, এসিম্পটোম্যাট্যিক রোগীদের ক্ষেত্রে সেটা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করা যায়, আর আমি তো তার কোনওটাই নই এখনও।
সিপাহীজলার জেলা শাসক, পুলিশ সুপার, জেলাসভাধিপতি, তারা পজিটিভ হয়েও হোম আইসোলেসনে আছেন, কী করে হয়, যদি সেই গাইডলাইন না থাকে। একজন চিত্র সাংবাদিকও আছেন একই রকমভাবে, একজন প্রাক্তন পুলিশ কর্তাও।
আমাকে ফ্যাসিলিটি কোয়ারান্টিনে যেতে হলে তো তাদেরকেও আসতে হয়।
বলেছেন সুদীপ রায় বর্মন।
তিনি কয়েকজন ডাক্তারের উল্লেখও করেছেন, এবং বলেছেন, কন্টাক্টে তারাও এসেছেন, কিন্তু ডিউটিও করেছেন।
তিনি বলেছেন, একজন আধিকারিক, তিনি দেখেছেন, একজনের সৎকারের সময় টর্চ হাতে ছিলেন, তার পিপিই কিট ছিল না, তিনি কিন্তু তখন আইসোলেসনে যাননি।
জেলা শাসককে ব্যাক্তিগতভাবে বলার কিছু নেই, তিনি নির্দেশিত। এক মিটারের কথা যা বলা হচ্ছে, তা সত্য নয়, দাবি করেছেন সুদীপ রায় বর্মন।
রায় বর্মন ১৯৯৮ সাল থেকে টানা বিধায়ক। চারবার কংগ্রেস বিধায়ক, এইবার বিজেপি থেকে। তিনি ত্রিপুরা বিধানসভায় বিরোধী দলনেতাও ছিলেন।
ফাইল ভিডিওঃ ২ আগস্ট, ২০২০ তারিখে সুদীপ রায় বর্মন ভগৎ সিং সিসিসি-তে ফল নিয়ে গেছেন।
COMMENTS