ত্রিপুরায় আগামী ৩০-৩৫ বছর পরিবর্তনের কোন চিহ্ন নেইঃ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। আমি হাসব না কাঁদবঃ প্রাক্তন সাংসদ জিতেন্দ্র চৌধুরী।

আগামী ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ বছরেও নাকি রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হবে না ত্রিপুরায়। অন্তত মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ বছরেও সেই চিহ্ন দেখতে পাচ্ছেন না।

আগরতলায় একটি হোটেলে বিজেপি’র একটি সভায় বিপ্লব দেব বলেছেন, তার নির্বাচনী এলাকার ( বনমালীপুর) প্রতি তিন পরিবার থেকে একজন করে মহিলাকে বিজেপিতে সামিল করতে। কেউ যদি এটা পাইনি-সেটা পাইনি , ইত্যাদি প্রশ্ন তুলে না আসতে চান, তবে তাকে জিজ্ঞেস করা, বিপ্লব দেবের সরকার ছাড়া অন্য কেউ তাদের এই সুবিধা দিতে পারবে কিনা! জিতলে (আইলে) দেব, এসব বললে হবে না।
২০২৩ সালে বিজেপি’র সামনে নির্বাচনে দাঁড়াবার কেউ নেই, তার দাবি। ত্রিপুরা থেকে কম্যুনিষ্ট দেশগুলিতে, কিউবা, ভিয়েতনামে টাকা পাঠানো হত।

তিনি বলেছেন, কেন্দ্রে-রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিন সরকার। মোদি সরকার আছে বলেই ত্রিপুরা এখন টাকা পাচ্ছে। কেন্দ্র ত্রিপুরাকে ২৪০০ কোটি টাকা বেশি দিয়েছে। অন্যরা ক্ষমতায় থাকলে, টাকা কে দেবে ! চিন দেবে কিনা, তিনি প্রশ্ন করেছেন।

ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, কেন্দ্রে বা রাজ্যে যে দলই সরকারেই থাকুক,কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক একই থাকার কথা। এই দলের সরকার রাজ্যে থাকলে, আর ওই দলের সরকার কেন্দ্রে থাকলে, রাজ্য প্রকল্পে টাকা পাবে না,এটা করা যায় না।

বিপ্লব দেব বলেছেন, এই দলের সাথে ওই দল করে দিলেই নির্বাচনে জেতা যায় না।

ত্রিপুরায় বিজেপি-আইপিএফটি সরকার আসার আগে কংগ্রেস থেকে বেশ কতজন বিধায়ক, প্রথমে তৃণমূল কংগ্রেসে , পরে বিজেপিতে চলে আসেন। বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন বিজেপিতে যোগ দেয়ার পর, ত্রিপুরার কংগ্রেসের প্রায় সবাই বিজেপি’র দিকে ঝুঁকে যান।
বিজেপি ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সামাজিক ভাতা দু’হাজার টাকা দেবার কথা, ঘরে ঘরে রোজগার দেবার কথা বলেছিল।

আগে যারা ভাতা পেতেন, তাদের ৫০ হাজারকে বাদ দেয়া হয়েছে। এই নিয়ে এক বিজেপি বিধায়ক, সুদীপ রায় বর্মন আপত্তি জানিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী আমবাসায় সামাজিক ভাতা নিয়ে বলেছেন, কেউ যদি বলে যে আপনার ভাতা তো কেটে দিয়েছে, তবে তাকে জিজ্ঞেস করতে হবে, তার দেয়ার ‘হাডান’ আছে কিনা!

প্রাক্তন সিপিআই(এম) সাংসদ জিতেন্দ্র চোধুরি মুখ্যমন্ত্রীর কথায় তীব্র প্রতিক্রিয়া রেখেছেন। তিনি বলেছেন, ‘হাসব-না-কাঁদব’, এইসব বক্তব্যের নিন্দা জানাবার ভাষা নেই। তিনিও এও বলেছেন, এসব কথায় ‘ হাসির খোরাক’পাচ্ছেন তিনি। তিনি( মুখ্যমন্ত্রী ) সাংবিধানিক পদে আছেন, পদ মর্যাদা রক্ষার জন্যও তাকে শিষ্টাচার শিখতে হয়, আড়াই বছরের বেশি হয়ে গেছে, ন্যূনতম ধারনাও তার হয়নি। তাদের পায়ের তলার মাটি নেই।

২০১৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি’র তখনকার সভাপতি অমিত শাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সামাজিক ভাতা ২০০০ টাকা হবে, সেটা হয়নি ।
কম্যুনিষ্ট দেশগুলি বড় দেশগুলির সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে। এই প্রসঙ্গে তিনি চিনের ও আমেরিকার অর্থনীতির আকারের কথা বলেছেন। কিউবা, ভিয়েত্নামের কথা এসেছে। ত্রিপুরার মত ছোট্ট রাজ্য থেকে সেসব দেশে টাকা পাচারের দরকার নেই। এসব অর্বাচীনের কথা বলেও, জিতেন্দ্র চোধুরির মন্তব্য।

প্রাক্তন সাংসদ গত ত্রিশ বছরের ত্রিপুরার পরিস্থিতির কথা বলেছেন, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরায় আগামী ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ বছরে অন্য কোনও দলের ক্ষমতায় আসার সম্ভবনা না থাকার দাবি করেছেন।

COMMENTS