করোনা মোকাবিলায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে ত্রিপুরা সরকার। আজ হয়েছে মন্ত্রীসভার বৈঠক। সেখানেই নেয়া হয়েছে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত। সন্ধ্যায় মহাকরণে সাংবাদ সম্মেলনে এসব সিদ্ধান্ত জানান শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ।
করোনা মোকাবিলায় ত্রিপুরায় ২৩৩ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা সরকারের।
অন্তোদয় অন্ন যোজনার আওতায় পরিবার এক লাখ নয় হাজার এবং প্রায়োরিটি গ্রুপ চার লাখ ৭০ হাজার পরিবার রয়েছে। সব মিলিয়ে পাঁচ লাখ ৭৯ হাজার পরিবার এক মাসের চাল ফ্রি পাবেন। আগে তাদের ১৫ দিনের চাল ফ্রিতে দেয়া হয়েছিল।
এপিএল পরিবার রয়েছে তিন লাখ চল্লিশ হাজার। তাদের মধ্যে যারা গরীব এমন ৫০ হাজার পরিবারকেও এক মাসের জন্য ফ্রিতে চাল দেয়া হবে।
এতে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ উপকৃত হবেন। এই চাল দিতে খরচ হবে সাত কোটি ২২ লাখ টাকা।
এদের মধ্যে কেউ এপ্রিল মাসের চাল তুলে নিলে তাদের একাউণ্টে টাকা দিয়ে দেয়া হবে।
আপার প্রাইমারিতে যেসব ছেলে মেয়ে পড়ে তাদের মিড ডে মিল হিসাবে জন প্রতি তিন কেজি ৭৫ গ্রাম চালের টাকা ছাত্রছাত্রীদের একাউন্টে দেয়া হবে। প্রাইমারির ক্ষেত্রে দুই কেজি ৫০ গ্রাম চালের টাকা প্রতি ছাত্রছাত্রী পিছু দেয়া হবে একাউন্টে। কারন শিক্ষকদের পক্ষে বাড়িতে গিয়ে চাল পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে না।
অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের শিশু এবং মায়েদের খাদ্য বাড়িতে পৌঁছে দেবেন অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের কর্মীরা। এই ব্যবস্থা এখন চলছে।
সামাজিক পেনশন দুমাসের এডভান্স দেয়া হবে। চার লাখ সামাজিক ভাতা প্রাপক আছেন। ৭৫ কোটি টাকা এতে খরচ হবে।
রেগা প্রকল্পে দশ দিনের কাজ দেয়া হবে। ৬ লাখ ২৯ হাজার মানুষ কাজ পাবেন।
টুয়েপের মাধ্যমে কাজ দেয়া হবে।
পিডিএফ-এর মাধ্যমেও কাজ দেয়া হবে।
৪০ হাজার নির্মাণ শ্রমিক আছে। যাদের মধ্যে ২০ হাজার শনাক্ত হয়েছে। বাকি ২০ হাজারের তালিকা শ্রম দপ্তর তৈরি করছে। তাদের এক হাজার টাকা করে তিন মাসের জন্য এক সঙ্গে তিন হাজার টাকা তাদের ব্যাঙ্ক একাউন্টে দেয়া হবে। বার কোটি টাকা খরচ হবে এতে।
রাস্তায় যারা থাকেন তাদের জন্য সাত দিনের শুকনো খাবার একসঙ্গে দিয়ে দেয়া হবে। এতদিন তাদের রান্না করা খাবার দেয়া হত। হাসপাতালের রোগীদের যে খাবার দেয়া হয় সেই ডায়েট তাদের দেয়া হবে।
গবাদি পশু এবং ব্রয়লারের খাদ্যের জন্য চারটি সংস্থাকে খাবার দেয়া হচ্ছে।
আগামীকাল থেকে চারটি রুটে একটি করে গাড়ি চলবে। এসব গাড়িতে পত্রিকা নিয়ে যাওয়া হবে। আগরতলা থেকে ধর্মনগর, আগরতলা থেকে মোহনপুর হয়ে খোয়াই এবং কল্যাণপুর, আগরতলা থেকে বিলোনীয়া হয়ে সাব্রুম এবং আগরতলা থেকে সোনামুড়া।
যারা পত্রিকা হকার রয়েছেন তাদেরও এক মাসের ফ্রি চাল দেয়া হবে। দুশো হকারের নাম হয়েছে তালিকাভুক্ত।
রাজ্যের বাইরের ত্রিপুরা ভবনগুলিতে যারা রয়েছেন তাদের খাবারের ব্যবস্থা করবে সরকার।
তাছাড়া এখন পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যে ত্রিপুরার চারশ বাইশ জন আটকা পড়েছেন। ঐসব রাজ্যের সরকারকে বলা হয়েছে তাদের থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করতে। যদি ঐসব রাজ্যের সরকার না করে তাহলে তাদের ব্যাঙ্ক একাউন্টে টাকা এখান থেকে দেয়া হবে।
৫৪ টি চা বাগান রয়েছে। আগামীকাল থেকে চা বাগান খুলতে বলা হয়েছে। স্মাজিক দুরত্ব বজায় রেখে কাজ চালানো যাবে।
২৩৫টি ব্রিকফিল্ড রয়েছে, শ্রমিকের সংখ্যা ১৯ হাজার ৬৯৪ জন। এরা বাইরের রাজ্যের শ্রমিক। এদের সঙ্গে আছে তিন হাজারের বেশি শিশু। এই মানুষদের রেশনের ব্যবস্থা মালিকদের করতে হবে।
৭৯৪৪ জন মানুষকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে ১১৮৩ জনকে ১৪ দিনের নজরদারির পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এখন ৬৭ জন ইনিস্টিটিউশন্যাল এবং ৬৬৯৪ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
১০১ জনের পরীক্ষা হয়েছে। তার মধ্যে ১০০ জনের রিপোর্ট এসেছে, সবাই নেগেটিভ। একজনের রিপোর্ট এখনও বাকি।
ত্রিপুরাতে এখনও করোনা আক্রান্ত পাওয়া যায় নি।
COMMENTS