দুইহাতের ‘দশভূজা’ দুর্গামূর্তি ত্রিপুরার দুর্গা মন্দিরে

‘আমার কি দুর্গার মত দশহাত!’ কাজে কাজে হাঁফিয়ে যাওয়া  মা-মাসী-পিসিদের মুখে এমন কথা হিন্দু বাড়িতে শোনাই যেত।  নানাদিকে সাংঘাতিক  পারদর্শী কাউকে,  তিনি যেন দশভূজা বলে বাংলা গল্প-উপন্যাসে  পরিচয় দেয়া হয়েছে।

ত্রিপুরার দুর্গাবাড়িতে দুর্গামূর্তিতে দুই হাত, দশহাত নয় একনজরে। বাসন্তী পূজাই হোক, আর শরতের দুর্গাপূজা। মহিষাসুরমর্দিনীর মূর্তিই যদিও।

 

ত্রিপুরার দুর্গাবাড়ি মানে আগরতলায় উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের পাশে যে দুর্গা মন্দির। যখন রাজাদের শাসনে ছিল ত্রিপুরা , তখনকার এই মন্দির।

এক রানী দুর্গাপূজা দেখতে এসে দশহাতওয়ালা মূর্তি দেখে ভয় পেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। দুই হাতের মানুষ হয়, দেবতা মূর্তিও সেরকমই অধিকাংশ, মানুষের মত চেহারায় দশহাত, সম্ভবত সেটাতেই ভয় পেয়েছিলেন রানী।অনেক বছর আগের কথা,  খুব বেশি জানার সুযোগ এখন আর নেই।

যাইহোক, তারপর আদেশ হয় কিছু একটা করতে। বুদ্ধি করে দুই হাতের মূর্তি করা হল।  অথচ এই দুর্গা দশহাতের করতে হয় ! বাকী আটহাত নিয়ে যাওয়া হল পেছনে। সেই থেকে এমনই চলে আসছে।  সেই  হাতগুলি পেছনে থাকে, কাপড়ে মোড়ানো । দেখা যায় না বাইরে থেকে । ছোট ছোট করে করা হয়, ডানদিকে পিঠে থাকে চারটি, আর অন্যদিকে চারটি।

 

ভারতভুক্তির সময় এই দুর্গামন্দির আরও দুই/একটি মন্দিরের সাথে ত্রিপুরা সরকারের তত্বাবধানে গেছে। গোমতী জেলার উদয়পুরের ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির যেমন। সরকারই চালায় এইসব ধর্ম প্রতিষ্ঠান। ত্রিপুরার রাজাদের দুর্গার প্রতি বেশ টান ছিল। রাজ মালাতে উল্লেখ আছে দুর্গার। অনেক পুরানো রাজ আমলের টাকায়ও দুর্গার প্রতিকী পাওয়া যায়।

সবে শেষ হল বাসন্তী পূজা।

 

ক্যামেরাঃ অভি-অনিমেষ

 

( আগরতলা,ত্রিপুরা)

 

 

COMMENTS