কোভিড নিয়ে হাইকোর্টে আবার শুনানি ২৮ সেপ্টেম্বর

কোভিড নিয়ে হাইকোর্টে আবার শুনানি ২৮ সেপ্টেম্বর

কোভিড নিয়ে ত্রিপুরা হাইকোর্ট’র স্বপ্রণোদিত জনস্বার্থ আবেদনের শুনানি হয়েছে আজ।
রাজ্য সরকারকে কোভিড চিকিৎসায় আরও আন্তরিক হতে বলেছে আদালত, পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমে যেন গঠনমূলক খবর হয়, সেদিকে নজর দিতে বলেছে আদালত, বলেছেন আইনজীবী শমিক দেব।

আইনজীবী দেব এই ক্ষেত্রে অ্যামিকাস কিউরি বা আদলত বান্ধব হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন।

তিনি বলেছেন, গত সাত দিনে যত স্যাম্পেল পরীক্ষা হয়েছে এবং তাতে কত পজিটিভ এসেছে, কত রোগী এখন পর্যন্ত কোভিড চিকিৎসার আওতায় এসেছেন, সুস্থ হওয়ার হার কত, অক্সিজেনযুক্ত কত অ্যাম্বুলেন্স আছে, অক্সিজেন সরবরাহের কী ব্যবস্থা, মাস্ক না পড়লে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, কত ফাইন হয়েছে, তার জন্য কোনও টাস্ক ফোর্স আছে কিনা, থাকলে তা কীভাবে কাজ করছে, ইত্যাদি সব তথ্য হলফনামা দিয়ে জানাতে ত্রিপুরা সরকারকে বলেছে আদালত।

আইনজীবী দেব জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশের কপি এখনও তার কাছে এসে পৌঁছেনি। পৌঁছালে আরও বিস্তৃতভাবে জানা যাবে। বিষয়টি আবার আদালতের সামনে আসবে ২৮ সেপ্টেম্বর।

ত্রিপুরা হাইকোর্ট সম্প্রতি কোভিড বিষয়ে একটি স্যুয়োমোটো পাব্লিক ইন্টারেস্ট লিটিগেসন নিয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে এই নিয়ে তথ্য জানতে চেয়েছিল। সেসব তথ্য রাজ্য সরকারের তরফে আদালতে জমা পড়েছে। আরও কিছু তথ্য জানতে চেয়েছে আদালত।

প্রধান বিচারপরি এ কে কুরেশি এবং বিচারপতি শুভাশিষ তলাপাত্র’র বেঞ্চে আছে বিষয়টি।

বিস্তৃত তথ্য এলে তা যোগ করা হবে।

আপডেট, ১৯ সেপ্টেম্বরঃ

ত্রিপুরা হাইকোর্ট কোভিড নিয়ে ত্রিপুরা সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান অধিকর্তা ডাঃ শুভাশিষ দেববর্মা’র হলফনামায় দেয়া তথ্য দেখেছে।
হাইকোর্ট আরও কিছু বিষয়ে জানতে চেয়েছে। বিষয়গুলি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারল’র সাথে আলোচনা করেছে আদালত।
রাজ্য এখন মারাত্মকভাবে অতিমারির কবলে, এই সময়ে প্রত্যেকের পরিণত আচরণ গুরুত্বপূর্ণ, অ্যাডভোকেট জেনারেল’র এই বক্তব্য আদালত নজরে নিয়েছে।

আইনজীবী শমিক দেবকে আদালত অ্যামিরাক কিউরি নিযুক্ত করেছে।
অ্যামিরাস কিউরি বা আদালত বান্ধব, আদালতকে সাহায্য করে থাকেন।

রাজ্য সরকার বলেছে, কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ দল রিপোর্ট দিয়েছেন যে মাস্ক না পরা, দেরিতে হাসপাতালে আসা, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখার কারণই মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়েছে।

মাস্ক না পরার জন্য কত টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে, কত ক্ষেত্রে এই জরিমানা আদায় হয়েছে, তা জানতে চেয়েছে আদালত। তাছাড়া, মাস্ক পরার নির্দেশ সর্বোচ্চভাবে প্রইয়োগের কথাও বলা হয়েছে।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সরকার কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে , তা জানাতে হবে। আদালত এই ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে, এবং এই প্রয়োজনের কৌশলী প্রয়োগের কথা বলেছে।

সরকার বলেছে, প্রত্যেক জেলায় ল্যাব-টেকনেসিয়ান নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।আদালত প্রতি জেলায় কতজন নিয়োগ করা হচ্ছে, তা জানতে চেয়েছে।

হোম আইসোলেসনের ক্ষেত্রে কী গাইডলাইন, হোম আইসোলেসনে যারা থাকেন, তাদের কী ধরনের চিকিৎসা-সুবিধা , পরামর্শ দেয়া হয়, তা জানাতে হবে।

হলফনামায় আদালত দেখতে পেয়েছে, এজিএমসি এণ্ড জিবিপি হসপিটালই ( আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ এণ্ড গোবিন্দ ভল্লব পন্থ হসপিটাল) রাজ্যে একমাত্র ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতাল। ৭ সেপ্টেম্বর সেখানে বেডের তুলনায় বেশি রোগী ভর্তি ছিলেন। সেদিন কত বেড ও কত রোগী ছিলেন এবং এখন তার কী অবস্থা, সেটা জানাতে হবে সরকারকে।
কোভিড হেলথ সেন্টার এবং কোভিড কেয়ার সেন্টারগুলির রোগী রাখার কী ক্ষমতা, তাও জানাতে হবে।

এজিএমসি এণ্ড জিবিপি হসপিটালেই একমাত্র ভেন্টিলেটর’র ব্যবস্থা আছে। যদি কাউকে এই হাসপাতালে আনতে হয়, তবে সারাক্ষণ অক্সিজেন দেয়া যায় এমন অ্যাম্বুলেন্সে করেই আনা হয়।
আদালত জানতে চেয়েছে, কত ভেন্টিলেটর আছে এবং সেরকম অ্যাম্বুলেন্স কয়টা সারা রাজ্যে।
আইএএল হাসপাতালে কোভিড রোগী ভর্তির অনুমতি দিয়েছে সরকার, কিন্তু সর্বোচ্চ কত টাকা নেয়া যাবে, সেই ব্যাপারে সরকার এখনও কোনও দর ঘোষণা করেনি।
যেন রোগীকে মারাত্মকরকমের বেশি টাকা দিতে না হয়, সেজন্য বেসরকারি হাসপাতালটির সাথে আলোচনা করার কথা বলা হয়েছে।
আদালত , রোগীর আত্মীয়দের সাথে হাসপাতালের পক্ষ থেকে নিরবিছিন্ন যোগাযোগ রাখার জন্য জোর দিয়েছে। যোগাযোগ ঠিক থাকলে , সেটি ভরসা জোগাবে। দুঃখজনক কিছু হলেও, রোগীর আত্মীয়রা যেন আশ্বস্ত থাকেন যে চিকিৎসার অভাবে কিছু হয়নি।
হলফনামায় বলা হয়েছে, সরকার একটি নম্বর ঘোষণা করেছে যোগাযোগের জন্য। আদালত বলেছে, একটি লাইন দিয়ে এটা হয় কিনা, তা যেন সরকার চিন্তা করে দেখে।
তাছাড়া, জিবিপি হাস[পাতালে একটি বিশেষ খোঁজখবর ব্যবস্থা তৈরি বিষয় বিবেচনা করতে বলা হয়েছে, যেখন থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে সব খবর পাওয়া যাবে।
গত এক সপ্তাহে কত টেস্ট হয়েছে, পজিটিভিটি রেট কত, এটা জানাতে হবে সরকারকে।

প্রশাসন অভিযোগ এবং পরামর্শ নেয়ার ব্যবস্থা করতে পারে কিনা, যাতে সত্যিই কোনও অভি্যোগ থাকলে, তার প্রতিকার হয়।
ডাক্তারদের এবং প্যারামেডিকদের বক্তব্যে সরকার আমল দেবে বলে আদালত আশা করে।

কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ দলের রিপোর্টও আদালতে পেশ করতে বলা হয়েছে।

COMMENTS