করোনা আক্রান্ত ভাই – বোনের বিরুদ্ধে এফ আই আর করল পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার মোহনপুরের মহকুমা প্রশাসন। অভিযোগ, করোনা আক্রান্ত দু’জন মিথ্যা ঠিকানা দিয়ে হোম আইসোলেসনে থাকবেন বলে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন, মানেননি নিয়ম।
পরে তাদের হাসপাতালে আসার দরকার হয়, কথায় কথায় সব বেরিয়ে আসে।
করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন । ছিলেন হোম আইসোলেসনে । বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসাই নয়, একেবারে স্কুটি চালিয়ে পরিবারের দু’জনকে নিয়ে পৌঁছলেন বামুটিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে । পরিবারের দু’জনের কোভিড ওয়ান নাইন টেস্ট করাতে হবে । ওই ব্যক্তির সাথে কথা বলে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সন্দেহ হওয়াতে, তারও টেস্ট হয়। দেখা গেল, তিনজনই পজিটিভ। তখন মুখ খুললেন ওই ব্যক্তি । তার আগে আবারও ঠিকানা নিয়ে জট পাকানোর বিষয় আছে। তিনি জানালেন, তিনদিন আগেই গান্ধীগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে টেস্ট করিয়েছিলেন, এবং তখনই ধরা পড়েন, তিনি পজিটিভ । তাহলে বাড়ি থেকে বের হলেন কেন, এই ব্যক্তি যে পজিটিভ এই তথ্য কি বামুটিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাছে ছিল না ! প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেল অনেক তথ্য ।
সেপ্টেম্বরের পাঁচ তারিখ দুই ভাই-বোন জ্বর নিয়ে গান্ধীগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান। দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক দুজনের করোনা টেস্ট করান। দু’জনেই বলেছিলেন, তাদের বাড়ি গান্ধীগ্রামের কাঁঠালতলি এলাকায় । টেস্টের ফল পজিটিভ আসাতে যখন তাদের কোভিড হাসপাতালে ভর্তির কথা বলা হল, তখন দু’জনেই হোম আইসোলেসনে থাকতে চান।
গান্ধীগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র তাদের বাড়ি কোথায় যাচাই না করেই বাড়ি যাবার অনুমতি দিয়ে ফেলেন। দু’জনের বাড়িই বামুটিয়ায়।
পাঁচ তারিখের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত গান্ধীগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এদের সাথে কোনও যোগাযোগই করা হয়নি । সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মী বা চিকিৎসক বাড়ি গিয়ে সুনিশ্চিত হবেন যে হোম আইসোলেসনে রাখা সম্ভব কিনা । প্রতিদিন হোম আইসোলেসনে থাকা পজিটিভ রোগীর অবস্থা সম্পর্কে জানাও স্বাস্থ্য দপ্তরের দায়িত্ব। এক্ষেত্রে এসব কিছুই করা হয়নি বলেই অভিযোগ। কাঁঠালতলির ঠিকানা ধরে খুঁজতে গিয়ে সেরকম কাউকে পাননি বলেও শোনা গেছে, তবে তারপর আর এ নিয়ে কেউ বিশেষ মাথা ঘামাননি বলে খবর।
গতকাল সকালে ওই পজিটিভ রোগীর একজন বামুটিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসককে ফোন করে বলেন, তাদের পরিবারের দু’জনের টেস্ট করাতে হবে। কথা বলে চিকিৎসক জানতে পারেন, তার এলাকায় দুজন পজিটিভ রোগী আছেন কিন্তু তিনি কিছুই জানেনই না । তখনই সবার টনক নড়ে । বেরিয়ে আসে যে বাড়ির এক পজিটিভ রোগীই অন্যদের নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন, এবং নিজের টেস্টও আরেকবার করিয়েছেন আগে ।
তথ্য গোপন করা বা ভুল তথ্য দেওয়া এবং হোম আইসলেসনের বিধি না মানায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে লেফুঙ্গা থানায় করোনা পজিটিভ ভাই – বোনের বিরুদ্ধে এফ এই আর দায়ের করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত বোন বাড়িতেই হোম আইসলেশনে আছেন । আক্রান্ত ভাই, মা এবং মাসির সাথে হেজামারা কোভিড কেয়ার সেন্টারে গতকাল থেকেই ভর্তি আছেন ।
পুলিশ-প্রশাসন,ইত্যাদি কয়েকটি সূত্র থেকে এই খবর জানা গেছে।
তবে এটাও ঘটনা যে কোনও পরিবারে একজন পজিটিভ ধরা পড়লে, বাকী সদস্যদের নিজের ব্যবস্থায় কাছাকাছি কোনও কেন্দ্রে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসার ঘটনা আছে।
COMMENTS