“এসব গালগল্প”~ সুদীপ রায় বর্মন। সাত বিধায়ক ত্রিপুরায় ফিরে আসছেন কাল!

“এসব গালগল্প”~ সুদীপ রায় বর্মন। সাত বিধায়ক ত্রিপুরায় ফিরে আসছেন কাল!

সুদীপ রায় বর্মনের নেতৃত্বে দেশের রাজধানীতে ঘাঁটি গেড়ে  ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব’র ‘বাড়াবাড়ি’ নিয়ে ‘জাতীয়  নেতৃত্বকে’ বোঝাতে যাওয়া সাত বিধায়ক আপাতত নিরাশই হয়েছেন বলে খবর। আর, রায় বর্মনও   বিদ্রোহের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, এসব ‘গালগল্প’।

 

” আমি আগামীকালই ফিরে যাচ্ছি। ত্রিপুরার কয়েক সাংবাদিকবন্ধু এসব গল্প ছড়িয়েছেন, জাতীয় মাধ্যমও তা নিয়ে নিচ্ছে। দেব’র বিরুদ্ধে আমার কিছুই বলার নেই। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ভালই করছেন। বিজেপিতে নতুন নেতৃত্ব আসায় আমি নাড্ডাজীকে উইশ করতে এসেছি। ত্রিপুরার সাংগঠনিক কিছু আলোচনা করতে এসেছি,” বলেছেন সুদীপ।

 

বিজেপি’র শীর্ষ নেতৃত্ব, বিপ্লব দেব এবং সুদীপ রায় বর্মন’র মধ্যে প্রকাশ্যে বিরোধ দেখতে চান না, বলেই সূত্রের খবর।

 

সুদীপ রায় বর্মন ত্রিপুরায় ২০১৮ সালে বিজেপি জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। বছরখানেক পরেই মন্ত্রীসভা থেকে বাদ পড়েন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তার উষ্মা সংবাদ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়।

 

আবার খবর এমনও যে ত্রিপুরায় প্রদেশ বিজেপি ঘটনা যাচাই করে তাদের ( এই সাতজন) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা করছে।

 

বিপ্লব দেব ঘনিষ্ঠ সূত্রের মতে, তিনি বিষয়টি দিল্লিতে তুলেছেন, বিশেষত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পুনর্গঠিত হওয়ার পর, উত্তরপূর্বাঞ্চলের দায়িত্বে থাকা রাম মাধব  বিজেপি’র  সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বাদ যাওয়ায়,  ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। রাম মাধব, বিপ্লব দেবকে আগলে রাখতেন।

 

অসন্তুষ্ট বিধায়করা বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা,  সাংগঠনিক সম্পাদক বি এল সন্তোষ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র সাথে দেখা করতে এসেছেন। তবে তারা সবাই বিজেপি’র প্রতি অনুগত, তাদের আপত্তি শুধু দেবে’র ‘ মিসরুল’ নিয়ে।

 

” তারা মোট আটজন বিধায়ক। আট নম্বরজন এখন পিছিয়ে গেছেন। বর্মনের নেতৃত্বে সাতজন আছেন সব মিলিয়ে। দেব,  গতবছর বর্মনকে মন্ত্রীত্ব থেকে বাদ দিয়েছেন,” দাবি করেছেন বিপ্লব দেব ঘনিষ্ঠ সূত্র।

 

বিপ্লব দেব’র বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ কী!  একটি নয়।

প্রধান অভিযোগ,  তার ‘হাই হ্যান্ডনেস’।  তাছাড়াও, বিপ্লব দেব’র মন্তব্যে দলের মুখ পুড়েছে, কিংবা অতিমারি ঠিকভাবে সামলাতে পারেননি, ইত্যাদিই নড্ডার কাছে তারা পৌঁছাতে চেয়েছিলেন।

 

ত্রিপুরা প্রদেশ বিজেপি সভাপতি ডাঃ মানিক সাহা বলেছেন, ” যখনই কোনও বিজেপি’র আইনপ্রণেতা রাজ্যের বাইরে যান, রাজ্য সভাপতিকে জানিয়ে যান, এটাই আমাদের রীতি। তারা দিল্লিতে আছেন, আমি জানিই না। কেউ আমার সাথে কথা বলেননি। আমি খবরের কাগজ দেখে জানতে পেরেছি। যদি সত্যি তাই হয়, তবে বড় ব্যাপার। পার্টির নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।”

 

রাজ্যে তারা ফিরে আসার আগে কিছু হচ্ছে না। ডাঃ সাহা নিজে বিষয়টি যাচাই করে দেখতে চান। ” খবরের কাগজের উপর ভিত্তি করে কিছু করা যায় না,” তিনি বলেছেন।

 

ত্রিপুরায় ৬০ আসনের বিধানসভায় ৩৬ জন বিজেপি বিধায়ক।  তাদের সাথে আছেন আইপিএফটি’র আট বিধায়ক। তবে আইপিএফটি’রও অভিযোগ আছে। জুলাই মাসে রাম মাধবকে এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল। ত্রিপুরায় ১১ জুলাই রাম মাধব গিয়ে কথা দিয়েছিলেন, রাজ্যস্তরে শরিকদের মধ্যে আলোচনা হবে।

 

শরিকি ঝামেলায় থাকা বিজেপি অন্তত নিজের ঘরে বিদ্রোহ চাইবে না। আপাতত বিজেপি কি  সেই আগুন নেভাতে পেরেছে!

নয়াদিল্লি

( অনিন্দ্য ব্যানার্জি’র আইএএনএস স্পেশাল ইনপুট থেকে)

ফাইল ছবিঃ সুদীপ রায়  বর্মন  বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন।

COMMENTS