আগুনে পুড়ে গেল সময়! কালো হয়ে পড়ে তুঘলকি ইতিহাস!

কথা বলার শক্তিও যেন তার নেই।
পুরঞ্জন দেবকে আগরতলা শহরের অনেকেই চেনেন, পুতুল নাচের শিল্পী, মুদ্রা সংগ্রাহক।
তিনি শিক্ষকতা করতেন। ‘১০৩২৩’ শিক্ষকদের একজন । কাজ গেছে সাত মাস। পরশু রাতে আগুনে গেছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। ঘরে যা ছিল, সবকিছু গেছে আগুনে।
প্রাণে বেঁচেছেন কোনওরকমে।
পুরঞ্জন দেব একজন নিউমিসমেটিস্ট। বাংলায়, কয়েন সংগ্রাহক। তার জমানো সব কয়েন এবং টাকা পুড়ে খাক হয়ে।গেছে।
পুরঞ্জন দেব বলেছেন, প্রায় চল্লিশ বছর ধরে জমানো কয়েন এবং টাকা ছিল।
পাঁচ হাজারের বেশি কয়েন, মহম্মদ বিন তুঘলকের সময়ের কয়েনও ছিল, ছিল মুঘল জমানার সতের/আঠারোটি কয়েন। ত্রিপুরার রাজাদের চারটি কয়েন, একটি গোবিন্দ মানিক্য’র সময়ের।
গোবিন্দ মানিক্য ১৬৭৬-এ মারা যান। পুরঞ্জন দেবের কাছে গোবিন্দ মানিক্য’র কয়েনটি ছিল, তা প্রায় পৌনে চারশ বছর আগের।
একশটি দেশের কয়েন, এবং টাকা ছিল তার হেফাজতে।
ভারতের এক পাই, চার আনা, আট আনা পর্যন্ত ছিল। ছিল পাঁচ টাকার পঞ্চাশ ধরণের কয়েন। দশ টাকার কুড়ি ধরণের কয়েন।
পুড়েছে সব।

বিকালে পরিবারের অন্যদের সাথে নিয়ে ছাই সরিয়ে কয়েন খুঁজছেন। পুড়ে সব কালো। এগুলি দিয়ে আর কিছুই হবে না, তাছাড়া, ক্যাটালগ পুড়ে গেছে। কোন্ কয়েন কত বছরের পুরানো, কার সময়ে শুরু হয়েছিল, কী ধাতুতে গড়া, সবই ক্যাটালগে ছিল।

COMMENTS