প্রতিবাদী কলম পত্রিকার কপি ত্রিপুরার গোমতী জেলা সদর উদয়পুরে গাড়ি থেকে নামিয়ে নষ্ট করে দেয়া হয় গতকাল।
ত্রিপুরায় পত্রিকা নষ্ট করে দেয়া, সাংবাদিককে আক্রমণ, হকারকে নিগ্রহ, এসব বেশ অনেক দিন ধরেই চলছে।
সাংবাদিকরা গতকাল পুলিশ সদর দফতরে ছুটে গিয়েছিলেন। গিয়েছিলেন গোমতী’র পুলিশ সুপারের কাছেও, উদয়পুরের এসডিপিও’র কাছেও।
ভোররাতে এসডিপিও মানিক দাস সাতজনকে গ্রেফতার করেন। আদালতে আজ নেয়া হলে সবাই জামিন পেয়ে যান।
প্রতিবাদী কলম পত্রিকার সম্পাদক অনল রায় চৌধুরি প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন,” এ শুধুই আইওয়াশ হল। নির্দিষ্টভাবে নাম দিয়েই অভিযোগ করা হয়েছিল এগারো জনের বিরুদ্ধে। সাতজনকে যদিও ধরা হল, এমন মামুলি বয়ান দিয়ে আদালতে পাঠানো হল যে জামিন হল। এসব লোক দেখানো। আমরা গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানিয়েছিলাম। এমন বয়ান দিয়ে আদালতে আর না পাঠিয়ে থানা থেকেই ছেড়ে দেয়া যেত। এখন কেউ বলতেই পারেন, গ্রেফতার হয়েছে, আদালত জামিন দিলে,সেটা আদালতের আদেশ। আদলতেরও বাধ্যবাধকতা থাকে, যদি দুর্বল ফরোয়ার্ডিং দিয়ে পাঠানো হয়, আদালতের কিছু করার থাকে না। ত্রিপুরাতে সংবাদ মাধ্যম নিয়ে এসবই চলছে।আইপিসি’র ৩৯২ ধারা দেয়া যেত বলে আমার আইনি পরামর্শদাতা মনে করেন।“
প্রতিবাদী কলম কৃষি দফতরে ১৫০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে খবর করেছে। সেখানে কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়ের নামও জড়িয়ে গেছে। তিনি উদয়পুরের । সেখানে বিজেপি মিছিল করেছে কাগজের বিরুদ্ধে।
বিজেপিই আবার মুম্বইয়ে অর্ণব গোস্বামীর গ্রেফতারকে সংবাদমাধ্যমের উপর আক্রমণ বলে আখ্যায়িত করে ত্রিপুরায় মিছিল করেছে।
বিজেপি গতকাল দাবি করেছিল, কাগজ নষ্ট করার সাথে বিজেপি’র কেউ জড়িত না। বিরোধী বামফ্রন্ট বিজেপি এই ঘটনার সাথে যুক্ত বলে ঘটনার নিন্দা করেছে।
সিপিআই(এম-এল) আজ বলেছে, “ সংবাদ পত্রের স্বাধীনতার উপর সংঘবদ্ধ আক্রমণের মূল উস্কানিদাতা মুখ্যমন্ত্রী । তাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ কর্তৃক লঘু ধারায় মামলা গ্রহণ ও তাদের গ্রেফতার করা লোক দেখানো নাটক ছাড়া কিছুই নয়।“
যারা গ্রেফতার হয়েছিলেন, তারা শাসকপন্থী বিএমএস সংগঠনের স্থানীয় নেতা।
সাংবাদ মাধ্যম এবং সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ নিয়ে সাংবাদিকরা মুখ খুলেছেন। পথে বসে প্রতিবাদও জানিয়েছেন। গতকালও প্রবীন সম্পাদক সুবল কুমার দে বলেছেন, এরকম আক্রমণ আগে কখনও হয়নি এ রাজ্যে। পুলিশের ভূমিকাও গতকালও সাংবাদিকরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
কমলপুরে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান গতকাল বয়কট করেছে সেখানকার প্রেসক্লাব।
মুখ্যমন্ত্রী কিছুদিন আগে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে সংবাদমাধ্যমকে মাফ করবেন না বলেছেন।
সাংবাদিকরা এই মন্তব্যকে অগণতান্ত্রিক বলেছেন। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকেও জানানো হয়েছে।
আড়াই বছরে ডেইলি দেশের কথানামে একটি পত্রিকার উপর বার বার আক্রমণ হয়েছে। প্যাকেট পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গাড়িতে পত্রিকা তুলতে দেয়া হয়নি। হকারদের এই পত্রিকা না দিতে হুলিয়া দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’র কাছেও গেছে এই পত্রিকা। জেলা শাসক পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের নির্দেশে আবার পত্রিকা চালু হয়েছে।
COMMENTS