একটি ভ্যালেন্টাইন সুইসাইড নোট

**লিখেছেন , ‘আমি’
——————

এই জানো , তখন কিন্তু আমার এটাই মনে হচ্ছিল , তুমি আমার নাম আদর করে একদম ঠিক ঠাক রেখেছ ।

হলুদ প্রজাপতি ।

মনে আছে একদিন খুব বায়না করছিলাম ।

জানতে চাইছিলাম কেন তুমি এরকম একটা নাম দিলে আমাকে । হলুদ তো তোমার ফেভারিট কালার না । তবুও হলুদ প্রজাপতি ?

আমি কিছুক্ষণ আগে এটাই বলছিলাম তোমাকে । তুমি শুনতে পেয়েছিলে ? কিগো ?

এই তোমার কি ভয় হচ্ছিল খুব ? চোখ বন্ধ রেখেছিলে কেনো?

তুমি বোধ হয় শুনতেই পাওনি আমার কথাটা তাই না গো ?

আমি কিন্তু এটাই বলছিলাম , ‘ এখন আমি বুঝতে পেরেছি কেন তুমি আমাকে হলুদ প্রজাপতি নাম দিয়েছো’।

কিগো বল না কেন তুমি চোখ বন্ধ করে রেখেছিলে ?

তুমি যাই বল আমি এই ব্যাপারে একদম নিশ্চিত যে তুমি এই সময়টুকু ঠিকঠাক এঞ্জয় করো নি ।না একদম তর্ক করবে না । তা না হলে তুমি এভাবে চোখ বন্ধ করে থাকতে না ।

বাট আই স্যালুট ইউ বস –এইরকম একটা আইডিয়ার জন্য ।

কত ভেবেছি আমরা বল । কিভাবে হবে ?

এটাই কিন্তু কথা ছিল একদম শেষ পর্যন্ত দুজনে এনজয় করব । তোমার খুব লেগেছে , তাই না গো ?

আমি না ঠিক বুঝতে পারি নি – কিরকম একটা হল – হটাৎ মনে হল প্রজাপতি হয়ে গেছি। উড়ছি ।পাখী না । প্রজাপতিই । পাখীর মত এতটা নিখুঁত উড়ছিলাম নাতো । আমার আবার পারফেক্টনেস ! ওরকমটা ঠিক কেমন যেন – ভেসে ভেসে ওড়ার মত । ভাবছিলাম বা খুঁজছিলাম – কী জানি না , কিন্তু ভালো লাগছিল । ……… তোমাকে কিছু বলছিলাম ।

তখন কিন্তু খুব হাওয়া লাগছিল , তাই না ? ছিল তো রৌদ্র ছিল , ঐযে গম্ভীর রোদ্দুর । তুমিই তো বল , এরকম রোদ্দুরে সান গ্লাস পড়তে নেই ।

আমার চুলগুলো তো এমনিতেই কথা শোনে না , আর এরকম হাওয়ায় সবগুলো হুমড়ি খেয়ে একদম মুখের ওপর ।

শোনো না আমি কি চাইছিলাম জানো , এই বুঝি তুমি আমার মুখ থেকে চুলগুলো আলতো করে সরিয়ে দেবে ।

তুমিই তো বল মুখের ওপরে চুল সরে এলে আমাকে ভুতনীর মত দেখায় ।হি হি হি ।

তুমি না একটা পাগল । আমার হাতের মুঠো এত শক্ত করে ধরে রেখেছিলে । আমার ব্যথা লাগে না বুঝি ? নাগো আমি জানি তোমার প্রজাপতিকে তুমি হারাতেই চাইছিলে না ।

এই শোনো আমার কিন্তু খুব খুব রাগ হচ্ছে । একটা প্রমিস তুমি কিন্তু রাখো নি । তুমি বলেছিলে উই শ্যাল লাফ লাফ অ্যান্ড লাফ । আমি যে তোমার একটু হাসি দেখতে চাইছিলাম গো । তুমি খুব কষ্ট পাচ্ছিলে গো ?

ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয় । না ঠিক হল না কথাটা । ইচ্ছে থাকলেই এনটিটিকে পাস্ট করে দেওয়া যায় । তুমি আবার বলো না এই কথাটার মধ্যে ফ্যাসিস্ট ফ্যাসিস্ট গন্ধ আছে । দরকার হলে এনটিটি শব্দটার আগে নিজেদের কথাটা যোগ করে নিও ।

আমার হোয়াটস অ্যাপ ডিপি তুমি দেখেও কিছু বলো নি কেন ? গতকাল রাতেই তো চেঞ্জ করলাম ।

আমার ইনভারটেড সেলফি – স্ট্যাটাস, ‘পাস্ট কামিং সুন’ ।

এখন কত রিসার্চ হচ্ছে তাই না , ঐ ডি পি আর স্ট্যাটাস নিয়ে ।

তুমি কী রঙ দেখছিলে ? অনেক রঙ ? আমি না অনেক রঙ দেখছিলাম । তুমিও কি তাই দেখছিলে ? কি সুন্দর সব ইল্যুশন। কত্ত রঙ , মনে হচ্ছিলো সবুজ , নীল , সাদা , লাল , বেগুনী সব গুলো রঙ মিশে গিয়ে স্নান করিয়ে যা তা করে দিচ্ছে । এই একটা রঙ মুখে এসে লাগছে তো আরেকটা ওপর থেকে জাপটে ধরলো । আচ্ছা গো , ঐ কয়েক মাইক্রো সেকেন্ডের অনুভূতি কি এক্সট্রিম হ্যালুসিনেশন ? কিরকম দুর্বোধ্য ভালোলাগা , শ্রান্তির অনুভুতি তাই না ? কোন কষ্টই মনে হচ্ছিলো না । আমার তো পুরোটাই একদম ঝক্কাস লেগেছে । যেন ফ্যাদমলেস প্লেজার।

এতক্ষণে অনেক কাঁটা ছেঁড়া শুরু হয়ে গেছে তাই না ? কেন ? এভাবেই কেন ? এখানেই কেন ?

অনেক গল্প তৈরি হবে ।হয়েও গেছে হয়তো । পুরো ব্যাপারটাই কেমন যেন বোকা বোকা । অস্তিত্ব আর বর্তমানের যুগলবন্দীই নেই কিন্তু এই অস্তিত্ব হীনতার জায়মান অবস্থাই আস্তে আস্তে বড় হয়ে যাবে । তাও কিন্তু অনেকটা সময়ের জন্য না । আলোচনার এপিসোডও শেষ হয়ে যাবে । সমালোচনা – দোষারোপ – লাভ – ক্ষতি সব কিছু প্রকাশ্য হতে হতে এক সময় মিলিয়ে যাবে । অতীত ক্রমশ ঘন হতে থাকবে ।

এতক্ষণে প্লেস অব অকারেন্স অনেক ক্যামেরায় বন্দী হয়ে গেছে ।

শোনো না , আমার আগের স্টেটম্যান্ট আবার একটু মডিফাই করে নিচ্ছি কেমন – ইচ্ছে থাকলেই সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব , শুধু পদ্ধতি নিয়ে কোনও ধরণের গোঁড়ামি একদম চলবে না ।

গতকাল সন্ধেবেলার কথা মনে আছে ?

আমার কিরকম মনে হচ্ছে কত দিনের পুরনো হয়ে গেছে সব কিছু । আর ছুঁয়ে দেখা যাবে না । গতকাল সন্ধেবেলা একদম অন্যরকম ছিল তাই না ? কটা বাজবে তখন , সাতটা-আটটা । স্নান সেরে , তুমি খালি গায়ে বারমুডা পরে ব্যালকনিতে এসে বসেছিলে । আলো জ্বালাও নি । বাথরুম থেকে বের হলে , অনেকটা সময় নিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়ালে । কিছুই বলছিলে না । আমার দিকেও তাকাও নি । আমার সাথে কথা বলতেও ইচ্ছে করছিল না ? নাহয় একটু ঝগড়া করতাম । আমিও ঘরের আলো নিভিয়ে দিয়েছিলাম । একটু পরেই ব্যালকনির দরজায় এসে দাঁড়িয়েছিলাম । তুমি ঠিক বুঝতে পেরেছিলে । কিছুই বলো নি । তোমার হাতে সিগারেট পুড়েই যাচ্ছিল । আমি জানতাম তুমি অপেক্ষা করছো । আমি থুতনিটা তোমার মাথায় রেখে তোমার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছিলাম ।

‘কিছু বলবে না তুমি’ ?

অনেকক্ষণ পরে বললে । তোমার হাতের সিগারেট তখন ফেলে দিয়েছ ।

–‘আকাশ দেখো’
–‘অন্ধকারে আকাশ দেখা যায় না। পূর্ণিমা আসতে আরও অনেক দিন বাকী আছে’।
–‘হুম’।
–‘তবুও দেখো’ ।
–‘ভালো করে তাকিয়ে দেখো , কিচ্ছু নেই ……’
–‘ছায়া শব্দ তো আছে’।
–‘আমাদের’?

চুপ হয়ে গিয়েছিলে । আমাদের এমন অনেক মুহুর্ত প্রায়ই আসে , যখন কোন কথাই আর খুঁজে পাই না । জানো , আমি কিন্তু তখন তোমার সাথে মনে মনে কথা বলতে থাকি । কত কথা ।

–‘আমরা নতুন মানে অন্যরকম হয়ে উঠতে পারছি না তাই না’ ?

আমি বুঝতে পারছিলাম না কী বলতে চাইছো তুমি ।
–‘নতুন ? ইউ মিন ……’
–‘সবার মতো , এমনি কিছু একটা …হয়তো বা’ ।

ওপরের ফ্ল্যাটে বোধ হয় কারোর হাত থেকে ভারী কিছু একটা বাসন পড়ে গেছে । মন খারাপ সময়টা থেকে বের হবার জন্য বোধহয় এই শব্দটার দরকার ছিল আমাদের ।তখনি তাকিয়েছিলে আমার দিকে মুখ উঁচু করে ।

— ‘কষ্ট হচ্ছে সোণা’ – কিছু বলো নি ।

সময় নিয়েছিলে কিছুটা । এরপর ফিসফিসিয়ে বললে , ‘লেটস ডূ ইট’ ।

আরেকটূ থেমে বলেছিলে , ‘ টূমোরো’ ।

একটা রাতের প্লেন অনেক উঁচু দিয়ে যাচ্ছিলো ।আমার কেন মনে হলো প্লেনটা অ্যাক্রোব্যাটিক করছে ।(ক্রমশঃ লিখতে গিয়েও লেখক / লেখিকা এক টানেই কেটে দিয়েছিলেন )

পুনশ্চ শব্দটা ঠিক কেমন একটা গম্ভীর তাই এন বি লিখলাম – জানি এই লেখা অনেকেই পেয়ে গেছেন । টাইম লাইন ইত্যাদি কিছুই হয়তো মিলবে না । আমার স্বপ্ন দেখা , ওই অনুভুতি , বাস্তবে অনেক কিছু সেরকম ভাবেই হয়ে যাওয়া কাকতালীয় না , এরকম ভাবেই হতে হয় । হয়েছে। আমরা , দুজন কেউই চাই না আর হোক । আমাদের কষ্ট গুলো বুদ বুদ হয়েই ফেটে যাক । শেষ বারের মত ।

***********

‘ট্রান্স যুগলের আত্মহত্যা’ । এই ছিল খবরের শিরোনাম । বাকিটা আপনাদের মত করে ভেবে নিয়ে সাজিয়ে নিন । ভালোবাসুন , নিজেকে , অন্য কাউকে বা অনেককেই – যাদের বালবাসতে ইচ্ছে হয় । গোপনে , আধ গোপনে , প্রকাশ্যে , যেভাবেই ইচ্ছে হয় ।

COMMENTS