কাঞ্চণপুরে চলতে থাকা বনধ আগামীকাল তুলে নেবে জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি, বলেছেন পাবিয়াছড়ার বিধায়ক ভগবান দাস।
ছয়দিন ধরে বনধ চলছে।
” সুশান্ত বিকাশ বড়ুয়া, রণজিৎ নাথ, প্রমুখের উপস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের সাথে পেঁচারথল ফরেস্ট বাংলোয় আলোচনা হয়েছে। আগামীকাল বনধ তারা তুলে নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা,” বলেছেন বিধায়ক ভগবান দাস। তিনি বিজেপি বিধায়ক।
জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটির নেতা সুশান্ত বিকাশ বড়ুয়া বলেছেন, তারা বনধ তুলছেন না। ‘নিরীহ আন্দোলনকারী’র উপর পুলিশের গুলি চালনার প্রতিবাদে এখন বনধ চলবে। তার দাবি, পুলিশ টিয়ার সেল না ফাটিয়ে, জল কামান না চালিয়ে, গুলি চালিয়েছে।
” আগামীকাল কাঞ্চণপুরে যাচ্ছি। যে মারা গেছেন, তার পরিবারের সাথে কথা বলব। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রশাসনের তরফে সেই পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা সাহায্য দেয়া হবে,” বলেছেন তিনি।
তার দাবি, আন্দোলনকারীদের কেউ ভুল বুঝিয়েছেন।
“আমরা শুধু জাতীয় সড়ক অবরোধ তুলে নিয়েছি। মন্ত্রী শান্তনা চাকমা, বিধায়ক ভগবান দাস ছিলেন। আমাদের চারটি দাবি তারা মেনে নিয়েছেন। তারা লিখিতও দিচ্ছেন। আগামীকাল তারা কাঞ্চণপুরে আসবেন মিটিং করতে। ডেপুটি স্পিকারেরও আসার কথা। মৃতের পরিবারে একটি চাকরি, এবং দশ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সব আহতকে সরকারি খরচে চিকিৎসা করাতে হবে,” বলেছেন সুশান্ত।
পরে তিনি বলেছেন, আগামীকাল আলোচনা করার পর, বনধ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। ২৩ তারিখ মুখ্যমন্ত্রীর সাথে তাদের আলোচনার ব্যবস্থা করা যায় কিনা, সেটাও আলোচনা হবে।
উত্তর ত্রিপুরার জেলা শাসক বলেছেন, পানিসাগরের এসডিপিও চামটিলার দিকে আন্দোলনকারীদের থামাতে যাচ্ছিলেন। সেখানে তারা আক্রান্ত হন। তিনটি সরকারি গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। আত্মরক্ষায় গুলি চালাতে হয়েছে। এসডিপিও ও তার রক্ষী গুরুতর আহত হয়েছেন।
সাত জন আন্দোলনকারী, পনের জন ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ কর্মী, আধিকারিক আহত হয়েছেন। অন্তত আটজন জেলা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। মহিলা পুলিশ কর্মীও রক্তাক্ত হয়েছেন। এক ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে বেধড়ক মারা হয়েছে, রাস্তায় পড়ে ছিলেন অচৈতন্য হয়ে, রাস্তায় রক্ত। আগুন দেয়া হয়েছে গাড়িতে।
“তারা কীভাবে আহত হয়েছেন, তা জানি না।পদপিষ্ট হতে পারেন, দশ-পনের হাজার লোক ছিলেন,” প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন সুশান্ত বিকাশ বড়ুয়া।
সকালে পানিসাগরে জাতীয় সড়কের ওপর বনধকারী এবং প্রশাসনের মধ্যে গন্ডগোল হয়।
নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মারা যান একজন। আহত অন্তত ২৩ জন।
উত্তর ত্রিপুরার কাঞ্চণপুরে মিজোরাম থেকে উদ্বাস্তু হয়ে আসা রিয়াঙদের পুনর্বাসন দেয়া নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই ঝামেলা চলছে। কিছুদিন আগেও একদিন বনধ ছিল, তাছাড়া রাস্তা অবরোধ, ইত্যাদিও হয়েছে।
“কাঞ্চণপুরে পুনর্বাসন বিষয়ে সব টেন্ডার বাতিল করা, আমাদের আপত্তি আছে এমন জায়গায় পুনর্বাসন না দেয়া,উদ্বাস্তু বাঙালী ও লুসাইদের প্যাকেজ দিয়ে পুনর্বাসন দেয়া, এবং আমরা যতজনকে বলেছি, তার বেশি পুনর্বাসন না দেয়া,” তাদের দাবি নিয়ে বলেছেন সুশান্ত। পুনর্বাসনের জন্য কত পরিবারের কথা তারা বলেছেন, এই জবাবটি সরাসরি তিনি দিতে নারাজ। ” একটি কারণে তা বলছি, আগে আমরা যেসমস্ত দাবি সনদ দিয়েছি, তাতে আছে সেই সংখ্যা।
বিধায়ক ভগবান দাস এবং বনধের নেতা সুশান্ত বিকাশ বড়ুয়ার সাথে দ্য প্লুরাল কলাম’র ফোনে কথা হয়েছে।
COMMENTS