শেষ রাতেই মাইকের আওয়াজ !

পরিবেশ বিষয়ে যে নিয়ম আছে, সরকারি নিয়ম আছে, আদালতের নির্দেশ আছে, তাতে  রাত তিনটা থেকে মাইক বাজানো যায় না, অন্তত সকাল ছয়টার আগে নয়। রাত দশটার পরেই বন্ধ করে দিতে হয়।

দিনের যে সময়ে বাজানো যায়, তারও নিয়ম আছে, নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি আওয়াজে বাজানো যায় না, তেমনি হাসপাতাল, আদালত,ইত্যাদি থেকে কতটা পর্যন্ত এলাকায় কখনই বাজানো যাবে না, তার নির্দিষ্ট করা আছে।

রাত দশটার সময় যেমন তা বন্ধ হয় না, আবার সকাল ছয়টার অনেক অনেক আগেই তা শুরু হয়ে যায়, অন্তত এই সময়ে, আজ তাই হচ্ছে।

অন্তত ত্রিপুরার  রাজধানী আগরতলায় তা হচ্ছেই, বিশেষত এই মরসুমে, যখন দরজায় কড়া নাড়ছে বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষা, তখন মাইকের তান্ডবও বন্ধ নেই।

তাছাড়া বছরের অন্য সময়েও ভোর চারটার পরেই মাইকের আওয়াজ শোনা যায়।

রাত দশটার দিকে যেমন নানান জলসার আওয়াজ, বাজির আওয়াজ থাকে, মধ্য রাত থেকে মূলত ধর্মীয় উপাচারের মাইক চলে। শহরের নানা জায়গা থেকেই তা শোনা যায়।

 

খবরটি প্রতিবেদক যখন প্রকাশ করছেন, ভোর পাঁচটা তের মিনিট, মাইকের গর্জন শুরু হয়েছে অনেক আগেই। এই মুহুর্তে  মাইকের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, অন্তত ধর্মীয় দুই রকমের সুর ভেসে আসছে মাইকে।

 

ত্রিপুরা পুলিশের ওয়েব সাইটে দেয়া ফোন নম্বরে পশ্চিম আগরতলা থানাকে পাওয়া যায়নি। সেই একই নম্বরই দেয়া আছে বিপর্যয় মোকাবিলা কতৃপক্ষের সাইটেও(https://tdma.tripura.gov.in/), জরুরি ফোন নম্বর হিসেবে।

 

বছরের পর বছর ধরেই চলছে এসব। সরকারি নিয়ম যেমন আছে, ত্রিপুরা হাইকোর্টের নির্দিষ্ট নির্দেশিকা আছে শব্দ দূষণ আটকানোর জন্য। সেসব পালন হলে, প্রইয়োগ হলে এই সময়ে মাইকের আওয়াজ শোনা যাওয়ার কথা ছিল না।

প্রায় সাড়ে চার বছর আগে, ২০১৬ সালে ত্রিপুরা হাইকোর্ট শব্দ দূষণ নিয়ে নির্দেশিকা দিয়েছিল সরকারকে। কমিটি করে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলেছিল। মুখ্যসচিবকে বলেছিল কমিটি ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা, দেখার জন্য। নির্দেশিকা পালন না হলে সেটি আদালত অবমানানা হবে, তাও বলেছিল আদালত। আদালত শুধু মাইক, লাউডস্পিকারের কথাই বলেনি, এমনকী গাড়ির হর্ন নিয়েও বলেছিল।

শব্দযন্ত্র বাজেয়াপ্ত করার কথা বলেছিল নিয়ম মানা না হলে।

কত কয়েক বছরে কয়টি এমন বাজেয়াপ্ত করার ঘটনা হয়েছে, জানা যায়নি।

 

সুপ্রিম কোর্ট একটি রায়ে বলেছিল, কারও যেমন অধিকার আছে নিজের কথা বলার, তেমনি আরেকজনেরও অধিকার আছে তা শোনার বা না শোনার, কেউ কাউকে কিছু শুনতে বাধ্য করা যায় না। কেউ বলতে পারেন না যে তার আওয়াজ অন্যের কানে, মনে জোর করে ঢুকবেই, সেটাই তার অধিকার।

COMMENTS