শুধুই সন্দেহ !

ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার চন্দ্রপুরে এক নাবালক ব্যাটারি চুরি করেছে, এই অভিযোগ। কেউ তাকে দেখেননি চুরি করতে। সন্দেহ শুধু ।

তাতেই চড়-চাপটা দিতে উৎসাহের খামতি দেখা গেল না। আইন হাতে তুলে নেয়াদের চাপেই যেন স্বীকার করে নিতে হবে দায়, “ক,ক ! পাঁচজনের  নামডি কৈয়া লা।” পেছনে ধারাভাষ্যে, “ঠেলা চুরি করেছে, ঠেলা দিয়ে চুরি করা জিনিস নিয়ে গেছে ।”  তখন কেউ আটকাননি কেন ! কারণ এসবই সন্দেহ !

শিশুটি বলছে, শিশুটি কাজে যাচ্ছিল ! মা-বাবা নেই তার, এখানেই থাকে।

এখানেই মানে ‘রাস্তা’ !

পুলিশে দেয়া হলেও, তাকে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে, কিছুই নেই।

এই গল্প নতুন নয়। বেশ কয়েকবছর আগে খবর হয়েছিল, দুই শিশুকে বেঁধে রেখে মারা হচ্ছে, কারো মুখে রক্ত।

তারপরেও রাজধানী শহরের নানান জায়গায় অভিভাবকহীন শিশুরা বেড়ে উঠছে ভবিষ্যত ছাড়াই। শহরের প্রধান ডাকঘরের বারান্দায় এই শিশুরা আগে ভিড় জমাত। তার উল্টোদিকেই পশ্চিম আগরতলা থানা। চিত্র সাংবাদিক জাকির হুসেন কোলে করে মল-মূত্রে মাখামাখি , এক অচেতন কিশোরকে জিবিপি হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছিলেন।

শিশু-কিশোরেরা নেশার কবলে পড়ছে। আঠার নেশার বুঁদ হয়ে যায়। তাদের কুপথে নিয়ে যাবার চক্র আছেই। অনেক সমইয়েই তেমন কাহিনী সামনে এসেছে।   জুভেনাইল হোম থেকে পালানো এক কিশোরকে আবার কয়েকদিনের মধ্যেই এই শহরেই ঘুরতে দেখে আটকানো হয়েছিল একবার, সীমান্ত পেরিয়ে এসেছিল সেই কিশোর।

 

তবে কোনও কালেই তাদের জন্য কোনও নির্দিষ্ট বন্দোবস্ত করা হয়নি। সমাজ কল্যাণ দফতর, শিশু অধিকার রক্ষা কমিসন, চাইল্ড লাইন, সংস্থা খুব একটা কম নেই। পথ শিশু কত আছে এই শহরে , এই সংখ্যাই পাওয়া যায় না ।

মারপিটে, চড়-চাপড় খেয়ে ,অভ্যস্ত হতে হতে তাদেরও যৌবন আসে, আসবে, আসছে।

একদিন এই শিশুরা পূর্ণাঙ্গ যুবক-যুবতী  হয়ে কারও কপালে ধাতুর নল ঠেকিয়ে দাঁড়ালে , দায় সমাজেরই !

COMMENTS