চুয়াত্তরের লীলা এমএ

চুয়াত্তরের লীলা এমএ

বয়স ৭৪। এই বয়সেই তিনি মাস্টার্স করেছেন ইংরেজিতে। লীলা রায় বর্মন মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করে অনেককেই তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

আগরতলার ধলেশ্বরে বাড়ি লীলা রায় বর্মণের। দুই ছেলে এক মেয়ে। তিনজনেই ইঞ্জিনীয়ার। ঘরে রয়েছে নাতি-নাতনি। ১৭ ফেব্রুয়ারির ইগনৌ-তে সমাবর্তনে শংসাপত্র পেয়েছেন। সেদিনই ছিল তার জন্মদিন।

২০১৪ সালে ভর্তি হয়েছিলেন ইগনৌ -তে। ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করার জন্য। ২০১৮ সালের ১৩ জুন শেষ সেমিস্টারের পরীক্ষা ছিল। সেদিনই মারা যান স্বামী রমণী পাল। পরীক্ষা আর দেয়া হয় নি সেদিন। স্বামীই ছিলেন তার বড় প্রেরনা। ইউনিভার্সিটি ভর্তি হবার জন্য। ছয় মাস পরে ডিসেম্বর মাসে আবার শেষ পরীক্ষা দেন। গত বছর রেজাল্ট আউট হয়। দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেছেন লীলা। দিন কয়েক আগে পেলেন সার্টিফিকেট। তার দুঃখ একটাই, স্বামী দেখে যেতে পারেননি তার মাস্টার্স ডিগ্রি।

বাংলাদেশে জন্ম। ১৯৪৬ সালে। পরে চলে আসেন ত্রিপুরায়। বানী বিদ্যাপীঠ স্কুল থেকে ১৯৬১ সালে স্কুল ফাইন্যাল পাশ করেন। চার ভাই চার বোনের সংসার। অসুস্থ বাবা বিছানাতে । তাই আর পড়া চালিয়ে যাওয়া হয় নি। অল্প বয়সেই কাজে লাগেন। ত্রিপুরা টেরিটোরিয়াল কাউন্সিলে কাজ করতেন। চাকরি পাবার কিছু দিনের মধ্যেই বাবা মারা যান। ১৯৬৪ সালে বিয়ে। জানাচ্ছিলেন লীলা রায় বর্মণ।

এরমধ্যে ১৯৬৮ সালে প্রি-ইউনিভার্সিটি পাশ করেন। ঘর সংসারের মাঝেই চলছিল পড়াশুনা। ৭২ সালে ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি থেকে করেন গ্র্যাজুয়েশন। তারপর দীর্ঘ বিরতি। ২০০৪ সালে বিধানসভা থেকে অবসের যান। তারপর আবার মনে ডালপালা মেলে আরও পড়ার ইচ্ছা। শেষ পর্যন্ত ভর্তি হয়ে যান ইগনৌ -তে।

আজ ধলেশ্বরের বাড়িতে গিয়ে তাকে সংবর্ধনা দেন সিপিআই(এম) নেতা-কর্মীরা।

 

আগরতলা, ত্রিপুরা

COMMENTS