গরিলাদের বাঁচাতে গিয়ে কঙ্গোর বনে প্রান দিলেন তের জন বনকর্মী

গরিলাদের বাঁচাতে গিয়ে কঙ্গোর বনে প্রান দিলেন তের জন বনকর্মী

শতাব্দীর সেরা সেলফি বলা হবে কিনা প্রশ্ন তোলাই যায় । পেছনে মাউন্টেন গরিলা , সামনে মানুষ । ওই মানুষদের তের জন আর নেই ।তাদের মেরে ফেলা হয়েছে । বলা যায় গরিলা আর বনকে ভিত্তি করেই বেঁচে থাকা আফ্রিকার আরও অনেক উপজাতি মানুষদের বাঁচাতে গিয়েই মারা গেলেন ওরা তের জন ।

ঘটনা গতকালকের ।কঙ্গোর ভিরুঙ্গা জাতীয় পার্কে সকালে নিজেদের কাজ সেরে ফিরছিলেন প্রায় পনের জন ফরেস্ট গার্ড । আফ্রিকার প্রথম জাতীয় পার্ক ভিরুঙ্গা ।যাত্রা শুরু হয়েছে ১৯২৫ সালে । ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের মান্যতাও জুটেছে । মাউন্টেন গরিলাদের স্বাভাবিক বাসস্থান বলা যেতে পারে এই জাতীয় পার্ককে। গরিলাদের বাঁচিয়ে রাখতে পার্কের বন কর্মীদের কাজ প্রশংসার দাবি রাখে । এই বনকে ভিত্তি করেই বেঁচে আছেন আরও অনেক মানুষ ।

সারা পৃথিবীর চোরা শিকারিদের হাতে প্রতিবছরই আক্রান্ত হয় এখানকার বাস্তুতন্ত্র । বুক চিতিয়ে লড়াই করেন এই বন কর্মীরা । গতকাল কিছু বুঝে ওঠার আগেই পড়ে গেলেন এম্বুশে । এদের সবার বয়স ত্রিশের মধ্যে । দুজন গুরুতর আহত । ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছেন তেরজন বনকর্মী । গত কুড়ি বছরে কম করেও দুশ জন বন কর্মীকে এভাবে চোরা শিকারিদের হাতে মারা যেতে হয়েছে ।

এই চোরা শিকারের রয়েছে আন্তর্জাতিক চক্র । শিকারিদের মূল লক্ষ্য মাউন্টেন গরিলা । ছোট বাচ্চা গরিলার বাজার দর খুব বেশি । অনেক দেশেই বাড়িতে ‘পেট’ হিসেবে বাচ্চা গরিলা রাখা হয় । এমনকি মাংসের জন্যও গরিলা মারা হচ্ছে । এই মাংসকে বলা হচ্ছে ‘স্পেশাল মাউন্টেন বুশ মিট’। গরিলার মাথার খুলি ব্যবহার হচ্ছে ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন আইটেম হিসেবে । সারা পৃথিবীতে এই মাউণ্টেন গরিলাদের সংখ্যা কমতে কমতে এক হাজারের নিচে এসে ঠেকেছে ।

বন , বনের মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে যারা নীরবে কাজ করে যাচ্ছেন , বেঘোরে মারা যাচ্ছেন তারা অনেক ক্ষেত্রেই খবর হয়ে ওঠেন না । তাদের কাজের মূল্যায়নই বা কে করে ?

গতকালকের নৃশংস ঘটনায় যারা প্রান দিলেন , এমনি আরও অনেক বন কর্মীদের প্রতি রইলো প্লুরাল কলামের শ্রদ্ধা ।

COMMENTS