দেশে দেশে দুর্ভিক্ষ কি  এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র ? রাষ্ট্রসঙ্ঘ সতর্ক করে দিয়েছে!

দেশে দেশে দুর্ভিক্ষ  কি  এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র ? রাষ্ট্রসঙ্ঘ সতর্ক করে দিয়েছে!

পৃথিবী  কয়েক মাসের মধ্যেই ‘বিবিকাল প্রপোরসন’-এ একাধিক দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হবে,  সতর্ক করে দিয়ে বলেছে রাষ্টসঙ্ঘ, করোনা ভাইরাস অতিমারী আরও তের কোটি মানুষকে অনাহারের দিকে ঠেলে দেবে। লিখেছে সিএনএন।

চূড়ান্ত অবস্থায় ‘ প্রায় তিন ডজন দেশ’-এ দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে, বলেছেন বিশ্ব খাদ্য সংস্থার এক্সিকিটিভ ডিরেক্টর মঙ্গলবারে। এখনই সেসব দেশের দশটিতে দশ লক্ষ মানুষ  অনাহারের মুখে।

 

তিনি আর্থিক মন্দা, সংঘাত, সাহায্য কমে যাওয়া, এবং তেলে দাম কমে যাওয়া কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন, এবং এখনই ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করেছেন।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদকে ডেভিড বিসলি বলেছেন, ‘কোভিড ওয়ান নাইন অতিমারী সামালানোর সাথে সাথেই আমরা ক্ষুধামারীর কিনারায় দাঁড়িয়ে। বিপদের কথা হচ্ছে, কোভিড ওয়ান নাইন’র আর্থিক ধাক্কায়, ভাইরাসটিতে মারা যাওয়া মানুষের চাইতে বেশি মানুষ মারা যেতে পারেন।“

 

বিশ্ব খাদ্য সংস্থা সর্তক করে দিয়েছিল, ২০২০ বিপর্যয়ের বছর হবে। প্রচুর দেশ যুদ্ধ অথবা দারিদ্রে জেরবার,  ক্ষুধার্ত মানুষ সারে তেরকোটি, ক্ষুধার চূড়ান্ত পর্যায়ে , অথবা তারচেয়েও খারাপ অবস্থায় আছেন। তাদের নতুন পরিসংখ্যান এই ক্ষুধার্ত মানুষের এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।

 

বিরাশি কোটি মানুষ দীর্ঘসূত্রী ক্ষুধার থাবায় এই পৃথিবীতে, আরও  একশ কোটি মানুষকে চরম সঙ্কটে পড়তে পারেন। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা অন্তত ৫৫ দেশকে তাদের বছরের রিপোর্টে চিহ্নিত করেছে, যারা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে আছেন।এই সপ্তাহেরি রিপোর্টটি বেরিয়েছে। সেখানে এও বলা হয়েছে, দেশগুলির দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এই ভাইরাস আক্রমণ মোকাবিলা করতে পারবে না।

দেশগুলি জীবন ও জীবিকা, এই দুইকে বাঁচাতেই ফ্যাসাদে পড়বে। এমনকী করোনা ভাইরাস থেকে মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে তাদের ক্ষুধায় মৃত্যু দেখতে হতে পারে।

 

দশটি দেশকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইয়েমেন,দ্য ডেমোক্রেটিক রিপাব্লিক অব কঙ্গো, আফগানিস্তান, ভেনেজুয়েলা,ইথিওপিয়া, সাউথ সুদান,সিরিয়া, নাইজেরিয়া এবং হাইতি, এই দেশগুলিতে গত বছর খাবারের ভীষণ সঙ্কট গেছে।

এই দেশগুলি এখন পর্যন্ত ব্যাপক কোভিড-ওয়ান নাইন আক্রমণে পড়েনি। তবে সামান্য আক্রমণেই এই দেশগুলির অতি দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে বলে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা বলেছে।

 

করোণা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগেই এই সব দেশের অনেকগুলিতেই খাবার জোগানে সমস্যা দেখা দিয়েছিল।

গত বছর অস্বাভাবিক খরা এবং বৃষ্টি আফ্রিকার বিশাল এলাকায় ফসল উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে।

সংঘাত, বিরূপ আবহাওয়া এবং পোকার আক্রমণ ইয়েমনে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ খাদ্য সঙ্কট তৈরি করেছে।

“ লকডাউন এবং আর্থিক মন্দা খেটে খাওয়া গরিব মানুষের রোজগার হারানোর দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে,” বলেছেন বিসলি।

 

তিনি রাষ্ট্রসঙঘের সদস্য দেশগুলির কাছে আবেদন করেছেন, এখনই কিছু করতে। “ এখনও কোনও দুর্ভিক্ষ নেই। কিন্তু আমি অবশ্যই সতর্ক করতে চাই, এখনই যদি আমরা প্রস্তুত না হই এবং ব্যবস্থা না নেই , আমরা একাধিক দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হব দ্রুত, কয়েক মাসের মধ্যেই।“

 

তথ্যসূত্রঃ সংবাদ প্রতিষ্ঠান, সিএনএন।

COMMENTS