দুই সপ্তাহ অপেক্ষা সীমান্তে, এখন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে!

দুই সপ্তাহ অপেক্ষা সীমান্তে, এখন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে!

তারা মানুষ। দুই সপ্তাহ সীমান্ত রেখার পাশেই অপেক্ষায় রইলেন। অথচ তাদের ব্যাপারে চৌদ্দ/পনের দিনেও এক জায়গায় আসতে পারল না প্রতিবেশি দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী।।

 

ত্রিপুরার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিশালগড়ের মিঁয়াপাড়ায় এলাকায় কাঁটাতারের ওদিকে বার জন মানুষকে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার সিক্যুরিটি ফোর্স ( বিএসএফ) ১১ জুলাই সন্ধ্যা ছয়টায় দেখতে পায় বলে বিএসএফ বিবৃতি দিয়েছে। তাদের বাড়ি কুমিল্লার হরিকুলায়।

 

দুই থেকে ষাট বছরের মানুষ রয়েছেন এই দলে।

তিনজন মহিলা,     একজন পুরুষ এবং বাকীরা দুই থেকে চৌদ্দ বছরের শিশু, কিশোর, কিশোরী।

 

সেদিন থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সীমান্ত লাগোয়া ভারতীয় অংশে একটি পরিত্যক্ত ঘরে তারা ছিলেন। কাছাকাছি গ্রামের মানুষ তাদের খাবার দিয়েছেন বলেও খবর।

বিএসএফ গতকাল পুলিশের কাছে তাদের তুলে দিয়েছে। চারজনের নামে পাসপোর্ট আইনে মামলা হয়েছে। চারজন এই বারজনের দলে প্রাপ্ত বয়স্ক,  তাদের নামে মামলা। আদালত তাদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে।

 

ত্রিপুরার বিশালগড়ের এসডিপিও তাপস কান্তি পাল বলেছেন,  সাত আগস্ট পর্যন্ত তাদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তাদের বিষয়ে এখন তদন্ত করে দেখবে পুলিশ। চেষ্টা হবে পুসব্যাকের।

 

মিঁয়াপাড়া দিয়ে বারোজন বাংলাদেশী নাগরিক  ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢোকার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ বিএসএফ’র।   বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড  বাংলাদেশ ( বিজিবি) এই দাবি মানেনি।

 

বেশ কয়েকবার  ফ্ল্যাগ মিটিঙ হয়েছে বিএসএফ-বিডিআর’র মধ্যে।  কমান্ডার স্তরেও মিটিঙ হয়েছে। দুই বাহিনী একমত হতে পারেনি।

 

ভারতীয় রক্ষী বাহিনীর দাবি, তারা এদের মধ্যে একজনের ছেলের সাথে ফোনে কথা বলার ভিডিও পাঠিয়েছে বিজিবি’র কাছে। সেই ছেলে কুমিল্লাতেই আছেন।

পরে ষাট বছরের কুলসুম বিবি এবং পঁয়ত্রিশ  বছরে বারসিদা বেগমের বার্থ সার্টিফিকেট জোগাড় করেও বিজিবি’র কাছে দেয়া হয়েছে বলে বিএসএফ বলেছে। বিজিবি ২২ জুলাই ওয়াটসঅ্যাপে জানিয়ে দিয়েছে, তারা আটকে থাকা মানুষদের জন্য যে ঠিকানা দেয়া হয়েছে, সেখানে তাদের নাগরিকত্বের খোঁজ পাওয়া যায়নি।ভারতীয় আইনে ব্যবস্থা নিতেও বলেছেন তারা।

 

বিএসএফের মধুপুর কোম্পানি কমান্ডার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন শনিবারে।

 

বিএসএফ এবং বিডিআর’র মধ্যে বোঝাপড়া আছে যে নারী ও শিশু ধরা পড়লে,  তাদের মানব পাচারের শিকার ধরে নিয়ে সংশ্লিষ্ট  কতৃপক্ষের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার।

 

কিছুদিন আগে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় কয়েকজন যুবক ধরা পড়েছিলেন। তারা সাংবাদিকদের বলেছেন, সীমান্তে দালালদের টাকা দিয়ে ভারতে ঢুকেছিলেন,  এবং নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন ভাড়া বাড়িতে থেকে। করোনা কালে লকডাউনে কাজ না থাকায় তারা বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছিলেন।

 

তারও আগে মোহনপুর মহকুমায় কাঁটাতারের নীচে একটি কালভার্টের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশের দিক থেকে আসার সময় বেশ কয়েকজন ধরা পড়েছিলেন গ্রামবাসীর চোখে,  পরে পুলিশ, ইত্যাদি হয়।

তাদের মধ্যে কারও কারও দুই দিকের ঠিকানাই পাওয়া গিয়েছিল বলে খবর ছিল। কেউ কেউ হয়ত শেষবারের মত চলে আসছিলেন শোনা গিয়েছিল।

 

দু’দিকেই একই পরিবেশ, একই ভাষা, একই সংস্কৃতি। সীমান্ত এলাকায় এসব নতুন কিছু নয়।

COMMENTS