বে-আব্রু স্বাস্থ্য পরিসেবা। ট্রলিতে যন্ত্রনায় চিৎকার আগুনে আহতের। কারও কাছে জবাব নেই।

ট্রলিতে শুয়ে যন্ত্রনায় চিৎকার করছেন, হাসপাতালের রাস্তায়! চিকিৎসা পাচ্ছেন না।

ত্রিপুরার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এভাবেই বে-আব্রু হয়ে পড়ল সোমবারে, রাজ্যের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল এলাকায়।

হাসপাতালের কাছেই ভালুইক্যা টিলায় আগুনে আহত হয়েছেন মীতা শীল । ট্রলিতে শুয়ে ছটফট করছেন, কোথায় গেলে পাওয়া যাবে চিকিৎসা জানা নেই।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পরে তাদের হাসপাতালের ভেতর নিয়ে গেছেন।

গতকাল জিবিপি হাসপাতাল থেকে বেশ কিছু বিভাগ সরে গেছে পাশের  ক্যান্সার হাসপাতালে। ঠিকে কাজের মহিলা কর্মীরা রোগী নেয়ার স্ট্রেচার-ট্রলি, হুইল চেয়ারে করে চিকিৎসার জিনিস বয়ে নিয়ে গেছেন উঁচু-নীচু পেরিয়ে। সিস্টাররাও ছিলেন। মালামাল নেয়ার জন্য গাড়ির দেখা পাওয়া যায়নি বিকাল পর্যন্ত। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খেটেছেন কর্মীরা। কতৃপক্ষের কোনও কর্তাবাবুদের দেখা পাওয়া যায়নি, বিভাগীয় প্রধানদেরও না। অন্তত খালি চোখে দেখা যায়নি তাদের, যখন ট্রলি ঠেলে কর্মীরা নিয়ে যাচ্ছেন । দামি চিকিৎসার জিনিসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এভাবেই হয়েছে শিফটিং।

তারপরেও যেখানে আইসিইউ সরাবার কথা , সেখানে গতরাত পর্যন্ত অক্সিজেনের লাইন নেই বলে জানা গেছে।

 

প্রতিদিন জিবিপি হাসপাতালের কোভিড চিকিৎসা নিয়ে অভিযোগ আসছে। চিকিৎসক না পাওয়া, অক্সিজেন না থাকা, আইসিইউ-তেও ডেকে ডাক্তারের সাড়া না পাওয়া, এবং তাতে মৃত্যু হওয়া, এসব মারাত্মক সব অভিযোগ আসছে। রোগী এবং তার আত্মীয়রা ভেতর থেকে ভিডিও করে ছাড়ছেন। প্রথম আক্রান্ত রোগীই খাবার পাচ্ছেন না বলে প্রথমদিনেই অভিযোগ করেছিলেন।

কোভিড কেয়ার সেন্টার থেকেও নানারকম অভিযোগ আসছে।

জিজ্ঞাসা করলে, কেউই মুখ খুলতে রাজি না, ফোনই ধরেন না দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

দফতরের অধিকর্তা পর্যন্ত কথা বলেন না।

 

পশ্চিম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে অধিকর্তা পর্যন্ত যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে।

জেলা দেখিয়ে দিয়েছিলেন জিবিপি হাসপাতালের সুপারকে, পরে অধিকর্তাকে। তাদের কাউকেই পাওয়া যায় না। পশ্চিম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নাকি জানেন না  জিবিপি হাসপাতালের খবর !

ফোন না ধরায়, যেমন তারা ধরেন না সাধারণট, প্রশ্নগুলি ওয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়েছে, জবাব নেই।

আগেও স্বাস্থ্য সচিব পর্যন্ত যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছে,জানতে চাওয়া হয়েছিল, কোভিড ওয়ার্ডে মারা যাওয়া মহিলার ছেলে বটতলা শ্মশানে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেছেন, বেঁচে থাকতে ডেকে ডাক্তার পাননি, মারা যাওয়ার অনেক পরে কেউ এসেছেন। তার কথায় মনে হয়েছে , তিনি মা’র সাথেই ছিলেন, তাহলে কী করে তিনি শ্মশানে, তার আইসোলেসনে থাকার কথা!

তার কাছে তার মায়ের নেভেটিভ হওয়ার কাগজ আছে বলেও তিনি দাবি করেছিলেন।

সেই ভিডিও পর্যন্ত সচিবের কাছে পাঠিয়ে   কিছু জানতে চাওয়া হয়েছে। জবাব পাওয়া যায়নি। তার আগে সুপারকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে।

কেউ কিছু বলেন না, তাতে সন্দেহ তৈরি হয়।সন্দেহ হয়, অভিযোগের নিশ্চয়ই সত্যতা আছে, তাই বলার কিছু নেই কারও।

COMMENTS