লকডাউন চলছে। জমায়েত বন্ধ। হবে না মিছিল মিটিং সমাবেশও। তাই আন্দোলনের নতুন পন্থা বের করেছেন ত্রিপুরার ১০৩২৩ শিক্ষকরা। বাড়িতে বসেই পরিবারের অন্যদের সঙ্গে নিজের দাবি জানাচ্ছেন। গলায় পোস্টার ঝুলিয়ে। তা আবার ছবি তুলে পোস্ট করছেন সামাজিক মাধ্যমে। দাবি দুটি। তাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে এবং ত্রিপুরার বিজেপি সরকারকে প্রতিশ্রুতি রাখতে হবে।
আজ এই শিক্ষকদের সামাজিক মাধ্যমের দেয়ালে ভরে উঠল নতুন এই আন্দোলনের ছবিতে। ১০৩২৩ শিক্ষকদের একটি সংগঠন, ‘আমরা ১০৩২৩’। এই সংগঠনের উদ্যোগেই এই আন্দোলন হয়েছে আজ। তাদের মধ্যে কয়েকজন আবার জড়ো হয়েছিলেন আগরতলার জগন্নাথবাড়ির উল্টোদিকের পার্কে। সেখানে শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে সাংবাদ মাধ্যমের কাছে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
সংগঠনের নেত্রী ডালিয়া দাস বলেছেন, লকডাউনের কারনেই এভাবে আন্দোলন করতে হচ্ছে।
ত্রিপুরা সরকার ২০১০ সালে, ২০১৩-১৪ সালে স্নাতক, অস্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে শিক্ষক নিয়োগ করেছিল, পরে তারাই ‘১০৩২৩’ হিসেবে পরিচিতি পান। চাকরিগুলি নিয়ে মামলা হয়, আদালতের রায়ে সেসব চাকরি বাতিল হয়ে যায়। তারপরেও এড-হক শিক্ষক হিসেবে তারা চাকরি করছিলেন, মার্চ মাসের ৩১ তারিখ সেই চুক্তিবদ্ধ-মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে।
সরকার ঘোষণা দিয়েছিল, তাদের অন্য দফতরে নিয়োগ দেয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হবে, সুপ্রিম কোর্ট অনুমতি দিলে তাদের নিয়োগ করা হবে। এই ঘোষণার সময় কিছু গ্রুপ-সি ও ডি শূণ্যপদের উল্লেখ করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ।
পরে তিনি জানিয়েছেন, সুপ্রিমকোর্টে আবেদন করা হয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ রাখছেন।
চাকরিগুলি হয়েছিল যখন বামফ্রন্ট ক্ষমতায় ছিল। চাকরি বাতিলও হয় বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকতে থাকতেই।
২০১৮ সালে বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তাদের চাকরির সমস্যা নিয়ম মেনে সমাধান করা হবে। বিজেপি নেতা, আসামের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, শুধু তাদের নয়, চুক্তিবদ্ধ অন্যদেরও ‘ন্যায়’ দেবার কথা বলেছিলেন। তখনকার ত্রিপুরায় বিজেপির সভাপতি বিপ্লব কুমার দেবও তাদের সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
বিজেপি তাদের ‘ভিসন ডকুমেন্ট’-এ মানবিক দৃষ্টি থেকে এই সমস্যার সমাধান করার কথা বলেছে।
‘১০৩২৩’ শিক্ষকদের বিষয়টি নিয়ে বহু বছর ধরেই ত্রিপুরায় চাপান-উতোর চলছে। রাজনৈতিক অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ চলছেই। বিষয়টি বিধানসভার শেষ অধিবেশনেও উঠেছিল।
COMMENTS